মারা গেছেন ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং! মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯২ বছর। দীর্ঘদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত একাধিক সমস্যা নিয়ে ভুগছিলেন এই প্রধানমন্ত্রী।
বৃহস্পতিবার তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। শুরু হয় তীব্র শ্বাসকষ্ট। ক্রমশ সঙ্কটজনক হতে থাকে পরিস্থিতি। রাতারাতি দিল্লির এইমসে ভর্তি করা হয় বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতাকে। তৈরি করা হয় মেডিক্যাল টিমও। কিন্তু ব্যর্থ হয় সমস্ত চিকিৎসা। না ফেরার দেশে পাড়ি জমান সাবেক প্রধানমন্ত্রী।
বছর শেষে শোকের ছায়া দেশজুড়ে। শোকস্তব্ধ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ। দেশের রাজনীতিতে মনমোহন সিং'য়ের মতো বর্ষীয়ান নেতার চলে যাওয়া এক বড় শূন্যতা তৈরি করা হল।
কংগ্রেস নেতা সালমান খুরশিদ সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, মনমোহন সিং'য়ের চলে যাওয়ায় শোকস্তব্ধ গোটা দেশ। দেশের প্রতি তাঁর অবদান সবসময় স্মরণীয় হয়ে থাকবে। ইতিমধ্যে হাসপাতালে ছুটে গিয়েছেন সোনিয়া গান্ধী। গিয়েছেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী সহ একাধিক শীর্ষ কংগ্রেস নেতৃত্ব। আসছেন রাহুল গান্ধী, মল্লিকার্জুন খাড়গেও। হাসপাতালে আসছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা সহ একাধিক শাসক বিরোধী দলের নেতারাও।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও আসতেই পারেন বলে শোনা যাচ্ছে। ইতিমধ্যে দিল্লির এইমসের বাইরে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। সিআরপিএফ সহ একাধিক ফোর্সকে মোতায়েন করা হোয়েছে। কাউকে ঘেঁষতে দেওয়া হচ্ছে না। বহু সাধারণ মানুষ জড়ো হচ্ছেন এইমসের বাইরে। তাঁদের একটি জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
জানা যাচ্ছে, শুক্রবার কংগ্রেসের তরফে সমস্ত কর্মসূচি বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। বলে রাখা প্রয়োজন, ২০০৪ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত দেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ সামলেছেন মনমোহন সিং। এর আগে দীর্ঘদিন অর্থমন্ত্রী এবং মন্ত্রকের অর্থ সচিব হিসাবেও কাজের অভিজ্ঞতা আছে। পিভি নরসিংহ রাও পরিচালিত সরকারের অর্থমন্ত্রী হিসাবেও দায়িত্ব সামলেছেন মনমোহন। সেই সময় দেশে অর্থনৈতিক সংস্কার আনার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা ছিল। উদার অর্থনীতির পথে হাঁটার সিদ্ধান্ত নেয়। যা এখনও দেশের মানুষ স্মরণ করেন। শুধু তাই নয়, দীর্ঘ জীবনে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার গর্ভনর এবং ইউজিসির চেয়ারম্যান হিসাবেও কাজের অভিজ্ঞতা আছে মনমোহন সিংয়ের। বলে রাখা প্রয়োজন, ১৯৩২ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর, অভিভক্ত ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশের একটি প্রত্যন্ত গ্রামে জন্ম জয় মনমোহন সিংয়ের।