চরের খাসজমি দখলকে কেন্দ্র করে বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক দলের তরিকুল ইসলাম শেখ নামের এক কর্মীকে কুপিয়ে জখম করেছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এ ঘটনার জেরে তরিকুলের স্বজনরা ও দলীয় লোকজন হামলাকারী আওয়ামী লীগের ১১ নেতাকর্মীর ৩৫টি ঘরবাড়ি আগুনে পুড়িয়ে ভস্মীভূত করে দিয়েছে।
খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে যান; কিন্তু সশস্ত্র লোকজনের বাধার মুখে নিরাপত্তাজনিত কারণে আগুন না নিভিয়েই তারা ফিরে আসেন।
পরে র্যাব পাবনা-১২ ক্যাম্পের সহায়তায় ফায়ার সার্ভিসকর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে দীর্ঘ প্রচেষ্টার পরে আগুন নিয়ন্ত্রণসহ পরিস্থিতি শান্ত করেন।
আহত তরিকুল ইসলাম শেখের বরাত দিয়ে স্থানীয় বিএনপি নেতা সাইদুল ইসলাম প্রামাণিক বলেন, চরে জমি দেখতে গেলে আওয়ামী লীগ নেতা তরিকুল ইসলাম মেম্বারের হুকুমে তার পক্ষের লোকজন আসাদুল মেম্বার, আলামিন প্রাং, আকুব্বার, শফি, আশিক, নাজিমসহ অন্যরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে স্বেচ্ছাসেবক দলের তরিকুলের পায়ের রগ ও হাঁটু কেটে ফেলে। বর্তমানে তরিকুল ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
বিএনপি নেতা সাইদুলসহ অন্যদের অভিযোগ অস্বীকার করে আওয়ামী লীগ নেতা তরিকুল ইসলাম মেম্বার বলেন, ৫ আগস্টের পর থেকে আমরা নিজ বাড়িতে গৃহবন্দি হয়ে পড়েছি। নিজেদের নামীয় ও সরকার থেকে লিজ নেওয়া চরের জমি ছেড়ে এসেছি। এই জমি এখন বিএনপি নেতা সাইদুল ইসলাম প্রামাণিক ও কুষ্টিয়ার হরিশপুরের জৈনক মুকুল গ্রুপ দখল করে নিয়েছে। এসব নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ চলছে। এই বিরোধের জেরে মুকুল গ্রুপই স্বেচ্ছাসেবক দলের তরিকুল ইসলামকে কুপিয়ে জখম করেছে।
বুধবার দুপুর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত পাবনার ঈশ্বরদীর বহুল আলোচিত ৬ খুনের এলাকা (সিক্স মার্ডার) লক্ষীকুন্ডা ইউনিয়নের কামালপুর ও সাহাপুরের চরগড়গড়ি আলহাজ মোড় এলাকায় এসব ঘটনা ঘটে।
আহত স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা তরিকুল ইসলাম ওই এলাকার রিকাত আলী শেখের ছেলে। অপরদিকে আওয়ামী লীগের যাদের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে ভস্মীভূত করা হয়েছে তারা হলেন- লক্ষ্মীকুন্ডা ইউনিয়নের নসিরের ঘাট এলাকার মৃত নুর আলী প্রামানিকের ছেলে আওয়ামী লীগ নেতা আসাদুল ইসলাম মেম্বার, আকুব্বার প্রাং, মোমিন প্রাং, আলামিন প্রাং, মৃত আলিমুদ্দি মীরের ছেলে শফি ঘোষ, মৃত লাল চাঁদের ছেলে চাঁদ আলী, জহুরুলের ছেলে আশিক, মৃত মুজাম সরদারের দুই ছেলে আজিম সরদার, নাজিম সরদার।
ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শহিদুল ইসলাম শহিদ বলেন, খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের নিয়ে যাওয়া হয়; কিন্তু অন্ধকার হয়ে যাওয়ায় নিরাপত্তাজনিত কারণে ফিরে আসতে হয়েছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সেনা ও র্যাব সদস্যরাও টহলে রয়েছেন। তবে এ ব্যাপারে থানায় লিখিত কোনো অভিযোগ এখনো আসেনি।