২১ ডিসেম্বর ২০২৪, শনিবার, ১০:২৭:২৬ অপরাহ্ন


ইজ়রায়েলি হানায় ধ্বস্ত সিরিয়া, শান্তির সমাধান চাইছেন বিদ্রোহীরা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৬-১২-২০২৪
ইজ়রায়েলি হানায় ধ্বস্ত সিরিয়া, শান্তির সমাধান চাইছেন বিদ্রোহীরা ইজ়রায়েলি হানায় ধ্বস্ত সিরিয়া, শান্তির সমাধান চাইছেন বিদ্রোহীরা


সিরিয়ার উপর ইজ়রায়েলি হানা এখনও অব্যাহত। বেছে বেছে সামরিক ভাবে গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলগুলিতে হামলা চালাচ্ছে ইজ়রায়েলি সেনা। শনিবার রাতেও আকাশপথে কয়েক ডজন হামলা হয়েছে সিরিয়ায়। তবে সদ্য ক্ষমতায় আসা বিদ্রোহীরা পাল্টা হামলার পথে এগোতে চাইছেন না। তাঁরা চান, শান্তিপূর্ণ সমাধান হোক। সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদের শাসনের অবসান ঘটানো বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) জানিয়েছে, তারা ইজ়রায়েলের সঙ্গে কোনওরকম সংঘাতে যেতে চাইছে না।

সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদের পতনের পর থেকে একের পর এক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইজ়রায়েল। গত সপ্তাহেই গোলান মালভূমির সিরিয়ার দিকে থাকা বাফার জ়োনের ‘দখল’ নিয়েছে ইজ়রায়েলি সেনা। সে দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইজ়রায়েল কাটজ় জানিয়েছেন, গত সপ্তাহে মাউন্ট হেরমনে ‘দখল’ নেওয়া অঞ্চলগুলিতে এই শীতের মরসুমে মোতায়েন থাকবে ইজ়রায়েলি বাহিনী। কাটজ়ের দাবি, সিরিয়ার বর্তমান পরিস্থিতির জন্য ইজ়রায়েলের নিরাপত্তার দিকে নজর দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ হয়ে পড়েছে। সেই কারণে মাউন্ট হেরমনের ওই অঞ্চলগুলিতে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।

যদিও কাটজ়ের এই সংশয়কে একেবারেই অমূলক বলে দাবি করছেন সিরিয়ার বিদ্রোহী গোষ্ঠীর নেতা আবু মুহাম্মদ আল-জোলানি। বর্তমানে সিরিয়ার অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অন্য কোনও দেশের হস্তক্ষেপ চাইছেন না তাঁরা। পাশাপাশি ইজ়রায়েলের সঙ্গে কোনও সংঘাতেও যেতে চাইছেন না জোলানি। বিদ্রোহী নেতার দাবি, বাশার-পতনের পর সিরিয়ার পুর্নগঠনের দিকে জোর দেওয়া বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে চলা গৃহযুদ্ধের পর সিরিয়া অনেকটাই দুর্বল হয়ে পড়েছে। এই অবস্থায় সামরিক অভিযানের তুলনায় কূটনৈতিক সমাধানের পথ খোঁজাই সিরিয়ার জন্য শ্রেয় বলে মনে করছেন তিনি।

সিরিয়া এবং ইজ়রায়েলের মাঝে গোলান মালভূমিকে নিয়ে দশকের পর দশক ধরে চর্চা চলেছে। ১৯৬৭ সালের যুদ্ধের পর সিরিয়ার গোলান মালভূমি ইজ়রায়েলের দখলে চলে গিয়েছিল। পরে তা ফিরিয়ে দিলেও, একটি অংশ নিজেদের দখলে রেখে দেয় ইজ়রায়েল। যদিও আমেরিকা ছাড়া দুনিয়ার অধিকাংশ দেশই আংশিক দখলে থাকা গোলান মালভূমিকে ইজ়রায়েলের অংশ বলে মান্যতা দেয়নি। দু’দেশের মধ্যে সংঘর্ষ ঠেকাতে ১৯৭৪ সালে রাষ্ট্রপুঞ্জের তরফে গোলান মালভূমিতে বাফার জ়োন তৈরি করা হয়। বাফার জ়োনের এক প্রান্তে সিরিয়া এবং অন্য প্রান্তে গোলান মালভূমির ইজ়রায়েল অধিকৃত অঞ্চল।

বিদ্রোহীদের সশস্ত্র অভ্যুত্থানের চাপে বাশারের দামাস্কাস ত্যাগের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সিরিয়ার উপর হামলা শুরু করে ইজ়রায়েল। গত ৮ ডিসেম্বর গোলান মালভূমির বাফার জ়োনের মধ্যে সিরিয়ার দিকে মাউন্ট হেরমনে পৌঁছে যায় ইজ়রায়েলি সেনা। হামলাও চালানো হচ্ছে সিরিয়ার সামরিক ভাবে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন অঞ্চলে। সিরিয়াকে কার্যত সামরিক ভাবে ‘পঙ্গু’ করে দেওয়ার চেষ্টা চলছে বলেও মনে করছেন অনেকে। এই আবহে বিদ্রোহীদের তরফে ইজ়রায়েলের সঙ্গে শান্তি সমঝোতার বার্তা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।