২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, শুক্রবার, ০২:০৫:৪৭ পূর্বাহ্ন


সুনামগঞ্জে বহাল তবিয়তে চোরাকারবারীরা: সাবেক চেয়ারম্যান-সহ গ্রেফতার - ১৯
মোজাম্মেল আলম ভূঁইয়া----সুনামগঞ্জ
  • আপডেট করা হয়েছে : ১২-১১-২০২৪
সুনামগঞ্জে বহাল তবিয়তে চোরাকারবারীরা: সাবেক চেয়ারম্যান-সহ গ্রেফতার - ১৯ সুনামগঞ্জে বহাল তবিয়তে চোরাকারবারীরা: সাবেক চেয়ারম্যান-সহ গ্রেফতার - ১৯


সুনামগঞ্জে বিশেষ অভিযান চালিয়ে গত ৩দিনে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যানসহ ১০জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অন্যদিকে অর্ধকোটি টাকার অবৈধ মালামালসহ যানবাহন জব্দ করেছে বিজিবি। কিন্তু সীমান্ত চোরাকারবারী ও সোর্স পরিচয়ধারীরা রয়েগেছে বহাল তবিয়তে। তাদের মধ্যে অনেকেই রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে চোরাচালান, চাঁদাবাজি ও মাদক বাণিজ্য করে ইতিমধ্যে হয়েগেছে কোটিপতি। তাই বিজিবির পাশাপাশি র‌্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সহযোগীতা জরুরী প্রয়োজন।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে- গতকাল সোমবার (১১ নভেম্বর) দুপুরে জেলার তাহিরপুর উপজেলার লাউড়গড় ও চাঁনপুর সীমান্ত সংলগ্ন পর্যটনস্পট শিমুল বাগানের পাশে অভিযান চালিয়ে মাদক ব্যবসায়ী আশিক নুর (২২) কে ইয়াবাসহ গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সে সীমান্ত গডফাদার তোতলা আজাদের সহযোগী। এরআগে ইয়াবার চালানসহ তোতলা আজাদকে আটক করে গণধৌলাই দিয়ে থানায় সোপর্দ করেছিল জনতা। তার নেতৃত্বে কামড়াবন্দ, মোল্লাপাড়া, শিমুলতলা, বারহাল, গাগড়া, ঘাগটিয়া, মানিগাঁও, পুরানঘাট, ব্রাম্মণগাঁও, কাউকান্দি, জনতা বাজার, রজনী লাইন, চাঁনপুর, রাজাই, কড়াইগড়া, বারেকটিলা, বড়ছড়া, লাকমা, লালঘাট, বাঁশতলা, কলাগাঁও, জঙ্গলবাড়ি, নতুন বাজার, দুধের আউটা, শ্রীপুর, লাউড়গড়, সাহিদাবাদ ও বিন্নাকুলিসহ বিভিন্ন স্থানে মাদক ও জুয়ার আসর বসানো হয়। আর এসব একাধিক স্পটে পুলিশ ও র‌্যাব অভিযান চালিয়ে মাদকদ্রব্য ও জুয়ারীসহ অনেক মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে।

অপরদিকে গত রবিবার (১০ নভেম্বর) রাতে পুলিশ পৃথক অভিযান চালিয়ে দোয়ারাবাজার উপজেলার পান্ডারগাঁও ইউনিয়নের রাধানগর গ্রামের জাহিদুল ইসলাম (১৯), একই গ্রামের আব্দুল তাহিদ (২৬), নাজিম উদ্দিন (২১), জুবায়ের আহমদ (৩২), মনোয়ার হোসেন (৩৫),পাশের নরসিংপুর ইউনিয়নের মুকিরগাঁও গ্রামের সাইফুর রহমান (২৪) ও উপজেলার সদর ইউনিয়নের দলেরগাঁও গ্রামের রুনা আক্তার (২০) কে গ্রেফতার করেছে। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলার ওয়ারেন্ট রয়েছে। অন্যদিকে এদিন রাত ৩টা থেকে পরদিন সোমবার (১১ নভেম্বর) সকাল ৬টা পর্যন্ত তাহিরপুর উপজেলার চারাগাঁও সীমান্তের জঙ্গলবাড়ি, কলাগাঁও, এলসি পয়েন্ট ও বাঁশতলা এলাকার বসতবাড়ি ও শুল্কস্টেশনের একাধিক ডিপুসহ বিভিন্ন স্থানে মজুত করে রাখ প্রায় ১হাজার মেঃটন পাচাঁরকৃত অবৈধ কয়লা চোরাকারবারী ও সোর্স পরিচয়ধারীরা ইঞ্জিনের নৌকায় বোঝাই করে নদীপথে নেত্রকোনা জেলার কলমাকান্দা নিয়ে গেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। অপরদিকে গত সোমবার (১১ নভেম্বর) ভোর থেকে লাউড়গড় সীমান্তের শাহ আরেফিন বডার বাজার সংলগ্ন এলাকা দিয়ে প্রায় ২০লাখ টাকা মূল্যের ফুছকা, কাজু বাদাম, চিনি, টমেটো, নাসির উদ্দিন বিড়ি ও মাদকদ্রব্যসহ বিভিন্ন মালামাল পাচাঁর করে বাডার বাজারের আশেপাশে অবস্থিত বসতবাড়িতে মজুত করে সোর্স পরিচয়ধারী চোরাকারবারীরা। পরে পাচাঁরকৃত সেই মালামাল সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যায পর্যন্ত মোটর সাইকেল দিয়ে পরিবহন করে লাউড়গড় বাজার ও বাজার সংলগ্ন বিভিন্ন বসতবাড়িসহ পাশের ঢালারপাড় ও বিন্নাকুলি গ্রামে নিয়ে মজুত করা হয়েছে বলে জানা গেছে। অন্যদিকে পৃথক অভিযান চালিয়ে সুনামগঞ্জ সদর থানায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হামলার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় ছাত্রলীগ নেতা রায়হান মিয়া(৩৫) ও দিরাই জলমহাল নিয়ে সংঘর্ষে ৩জনের মৃত্যুর ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় ওউ উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ নেতা হাফিজুর রহমান(৫৫) কে গ্রেফতার করাসহ জগন্নাথপুর উপজেলার একটি হত্যা মামলার আসামী হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের লতিবপুর গ্রামের দিদার হোসেন(২৬), একই গ্রামের জাহিদ হাসান(২১), বাবুল মিয়া(১৯) ও হাবিবুর রহমান(১৬) কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

এছাড়াও গত শনিবার (৯ নভেম্বর) রাতভর ছাতক উপজেলায় পৃথক অভিযান চালিয়ে সাজাপ্রাপ্ত ও ওয়ারেন্ট ভূক্ত আসামী উপজেলার আনুজানি গ্রামের কাপ্তান মিয়া(৩৫),একই গ্রামের জানাই মিয়া(৩০),আশক আলী(৫০),পাশের কচুরগাঁও গ্রামের লিলু মিয়া(৪৩) ও পৌর শহরের গণক্ষাই গ্রামের সাকির আলী(৩২) কে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।

দোয়ারাবাজার থানার ওসি জাহিদুল হক, তাহিরপুর থানার ওসি দিলোয়ার হোসেন, দিরাই থানার ওসি আব্দুর রাজ্জাক, জগন্নাথপুর থানার ওসি মোখলেছুর রহমান ও ছাতক থানার ওসি গোলাম কিবরিয়া হাসান অভিযান চালিয়ে ১৯জনকে গ্রেফতারের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান-সবাইকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। এদিকে সুনামগঞ্জ ২৮ ব্যালিয়নের বিজিবি অধিনায়ক লে.কর্ণেল একে এম জাকারিয়া কাদির বলেন- সীমান্ত এলাকা থেকে প্রতিনিয়ত শ্ল্কু ফাঁকি দেওয়া অবৈধ পণ্য জব্দ করা হচ্ছে। এবিষয়ে সীমান্তে কঠোর ভাবে নজরদারি রাখছে বিজিবি,চোরাচালানের সাথে জড়িতদের ছাড় দেওয়া হবেনা।