সুনামগঞ্জে বিয়ের ৫দিন না যেতেই নববধুকে রেখে তার স্বামী আত্মহত্যা করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। তবে মৃত্যুর আগে স্বামী তার মোবাইলে নিজের জবানবন্দি রেকর্ড করে রেখে গেছে। মৃত স্বামীর নাম- হারিছ মিয়া (২৫)। সে জেলার তাহিরপুর উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের লাকমা নয়াপড়া গ্রামের সাজিদ মিয়ার ছেলে। আজ শনিবার (৯ নভেম্বর) সকাল ১০টায় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।
পুলিশ ও এলাবাবাসী সূত্রে জানা গেছে- জেলার তাহিরপুর উপজেলা সীমান্তের লাকমা গ্রামের বাসিন্দা হারিছ মিয়া পেশাগত ভাবে একজন কৃষক ও কয়লা শ্রমিক। তার সাথে একই গ্রামের এক মেয়ের সাথে দীর্ঘদিন যাবত মন দেওয়া নেওয়া চলছিল। কিন্তু হারিছ মিয়ার পরিবারের লোকজন তা জানতো না। গত সপ্তাহ খানেক আগে তাদের দুজনের সম্পর্ক দুই পরিবারের লোকজন জানতে পারে। কিন্তু একই এলাকার বাসিন্দা হওয়াসহ পরিবারিক সমস্যার কারণে হারিছের সাথে তার প্রেমিকার সম্পর্ক দুই পরিবার মেনে নেয়নি।
অবশেষে গত সোমবার (৪ নভেম্বর) দুপুরে হারিছ মিয়াকে তার পরিবার জোর করে অন্যত্র বিয়ে করায়। কিন্তু হারিছ মিয়া তার প্রেমিকাকে ভুলতে পারেনি। নববধুকে রেখে তার প্রেমিকার সাথে সম্পর্ক ধরে রাখার চেষ্টা করে। আর এই ঘটনায় দুই পরিবারের মধ্যে পারিবারিক কলহের সৃষ্ঠি হয়।
এমতাবস্থায় গতকাল শুক্রবার (৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় হারিছের প্রেমিকাকে তার পরিবারের লোকজন একই গ্রামে বিয়ে দিয়ে দেয়। তাতে প্রেমিক হারিছ মর্মাহত হয়ে পড়ে। এবং এদিন রাত অনুমান ৩টায় সবাই যখন গভীর ঘুমে মগ্ন হয়ে পরে তখন স্বামী হারিছ মিয়া প্রেমিকার শোকে কাতর হয়ে তার নববধুর উড়না গলায় পেছিয়ে নিজ বসতবাড়ির পাশে অবস্থিত একটি গাছের ঢালে আত্মহত্যা করে। আর মৃত্যুর আগে হারিছ মিয়া তার মোবাইলে রেকর্ড করে রেখে যায় জবানবন্দি। সেই রেকর্ডে তার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয় বলে সীকারোক্তি রয়েছে বলে এলাকাবাসী জানান। তবে নববধুর মেহেদীর রং উঠার আগেই স্বামীর মৃত্যু ও প্রেমিকার জন্য প্রেমিক হারিছের এই মর্মান্তিক মৃত্যুর খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়ার পর সমালোচনার ব্যাপক ঝড় উঠে।
এব্যাপারে টেকেরঘাট পুলিশ ফাঁড়ি এসআই কামাল হোসেন বলেন- আমি ঘটনাস্থলে যাইনি, আমার সহকর্মী এসআই আমীর সাহেব ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করেছে এবং ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।