১৮ অক্টোবর ২০২৪, শুক্রবার, ০৭:১৮:২২ অপরাহ্ন


মোদীর সিদ্ধান্তের পাল্টা ৬ ভারতীয় কূটনীতিককে বহিষ্কার কানাডার
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৫-১০-২০২৪
মোদীর সিদ্ধান্তের পাল্টা ৬ ভারতীয় কূটনীতিককে বহিষ্কার কানাডার ছবি: সংগৃহীত


ভারতের সিদ্ধান্তের পাল্টা ৬ ভারতীয় কূটনীতিককে বহিষ্কার করলো কানাডা। কানাডার অভিযোগ, ভারত সরকারের সাথে যুক্ত এজেন্টরা কানাডার নাগরিকদের বিরুদ্ধে স্থির লক্ষ্যে প্রচার চালাচ্ছে। এর আগে দিল্লির কানাডা দূতাবাস থেকে ৬ কানাডিয় কূটনীতিককে বহিষ্কার করেছিল ভারত।

এই প্রসঙ্গে কানাডার পররাষ্ট্র দপ্তরের মন্ত্রী মেলানি জোলি এক প্রেস বিবৃতিতে জানান, "কানাডার নাগরিকদের নিরাপদ রাখা কানাডা সরকারের মৌলিক কাজ।

স্পষ্ট এবং সুনির্দিষ্ট প্রমাণ সংগ্রহ করার পরে এই ব্যক্তিদের বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত অত্যন্ত বিবেচনার সাথে করা হয়েছে। এই ছয় ব্যক্তিকে নিজ্জর মামলায় যুক্ত ব্যক্তি হিসাবে চিহ্নিত করেছিল। আমরা ভারত সরকারের কাছে নিজ্জর মামলার বর্তমান তদন্ত প্রক্রিয়াকে সমর্থন করার জন্য অবিরত সহায়তা চেয়েছি, কারণ এতে আমাদের উভয় দেশের স্বার্থ জড়িত রয়েছে।"

২০২৩ সালের ১৮ জুন কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়ার সারের একটি গুরুদ্বারের সামনে খালিস্তানপন্থী জঙ্গী হরদীপ সিং নিজ্জরকে হত্যা করা হয়। এই হত্যাকান্ডের পরেই ভারত-কানাডার সম্পর্কের টানাপোড়েন শুরু। বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে দুই দেশ। এই হত্যাকান্ডের পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কানাডাকে দোষারোপ করে বলেন ভারত ভাগ করতে চাওয়া মৌলবাদী শক্তি খালিস্তানপন্থীদের আশ্রয় দিচ্ছে কানাডা।

হরদীপ সিং নিজ্জরকে ২০২০ সালে সন্ত্রাসবাদী ঘোষণা করে ভারত। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তরফে কানাডাকে জানানো হয়, ১৯৯৬ সালে পাসপোর্ট জালিয়াতি করে কানাডায় গেছিলেন নিজ্জর। এরপর থেকেই তিনি সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে জড়িয়ে পড়েন এবং পাকিস্তানের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ হয় বলে অভিযোগ।

কানাডায় প্রকাশ্যে নিজ্জরকে হত্যার দায় ভারতের উপর চাপিয়েছিলেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। ভারত সেই অভিযোগ অস্বীকার করে। নিজ্জর খুনে জড়িত সন্দেহে কয়েক জন ভারতীয় এবং ভারতীয় বংশোদ্ভূতকে গত বছর গ্রেফতার করে কানাডা পুলিশের টিম আইএইচআইটি বা ইন্টিগ্রেটেড হোমিসাইড ইনভেস্টিগেশন।

কানাডা সরকার সম্প্রতি অভিযোগ তোলে, সে দেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনারের সঙ্গে নিজ্জর খুনের 'সম্পর্ক' আছে। যদিও কূটনৈতিক রক্ষাকবচ থাকার কারণে তাঁর বিরুদ্ধে কোনও আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেনি কানাডা সরকার। সম্প্রতি নিরাপত্তার কারণে, কানাডা সরকারের নিশানায় থাকা কয়েকজন কূটনীতিককে ফেরত আনা হচ্ছে বলে এক বিবৃতিতে জানায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

কানাডা সরকার ভারতের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলার পরেই ভারতে নিযুক্ত কানাডার ৬ কূটনীতিককে বহিষ্কার করে ভারত। এই তালিকায় আছেন ভারতে নিযুক্ত কানাডার কার্যনির্বাহী হাই কমিশনার। কানাডা হাইকমিশনের এই ৬ কূটনীতিককে আগামী ১৯ ডিসেম্বর বেলা ১১টা ৫৯ মিনিটের মধ্যে ভারত ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অভিযোগ, কানাডার আসন্ন সংসদীয় নির্বাচনে কট্টরপন্থী খলিস্তানি গোষ্ঠীর সমর্থন পেতে সে দেশের সরকার নতুন করে নিজ্জর বিতর্ক খুঁচিয়ে তুলছে।

ট্রুডো সরকারের অভিযোগ, কানাডায় বসবাসকারী ভারতীয় এজেন্টরা খালিস্তানপন্থীদের 'লক্ষ্যবস্তু' করতে লরেন্স বিষ্ণোই-এর দলের সঙ্গে কাজ করছে। যদিও কানাডার এই অভিযোগের উত্তরে ভারতের পক্ষ থেকে এখনও কিছু জানানো হয়নি।