রাজশাহী মহানগরীতে ওয়ারেন্টভুক্ত আসামী আব্দুল আলিফকে (৪০) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শনিবার (৬ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৭টার সময় মহানগরীর কালাবাগান পরিবার পরিকল্পনার প্রধান ফটকের পাশে থেকে তাকে আটক করে বোয়ালিয়া থানার এস আই শরিফুজ্জামান, এএসআই আসাদ ও সঙ্গীয় ফোর্স।
গ্রেফতার আসামি মোঃ আব্দুল আলিফ, সে মহানগরীর বোয়লিয়া থানাধীন কলাবাগান এলাকার মৃত মকবুল হোসেনের ছেলে। তার নামে রাজশাহী আদালতে যৌতুক নির্যাতন ও মোহরানার ২টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মোহরানা মামলা নং-২৭১/২০২০।
মামলার বাদী মোসা আছিয়া বলেন, ২০১৬ সালে’র ২৩ মার্চ আমাকে প্রতারণা করে বিয়ে করেছিল। বিয়ের সময় সে নিজেকে রামেক হাসপাতালের ঠিকাদার পরিচয় দেয়, কিন্তু বিয়ের এক মাস পরেই জানতে পারি সে বেকার। এরপর এক বছর পর আমার একটি কণ্যা সন্তানের জ¤œ হয়। পরপর তার আরও একটি প্রতারণ প্রকাশ পায়, সে আমার আগে আরও ২টি বিয়ে করেছিল- প্রথম স্ত্রী আখিঁ, ও ২য় স্ত্রী সুইটি। প্রথম স্ত্রী’র (আখিঁ) সংসারে আকসারা নামে ১৫ বছরের একটি মেয়ে রয়েছে।
যা আমি ও আমার পরিবার শোনার পর হতবাক হয়ে যায়। আমার বাচ্চা হওয়ায় আমি তাকে তালাক দেওয়ার কথা ভেবে উঠতে পারি নি। আমার কাপাল দোষে হয়তো এমন হয়েছে, ভেবেই কান্না করা ছাড়া আমার করার কিছু ছিল না। এরপর যখন বাচ্চার বয়স ৬মাস, ঠিক তখন থেকেই আমার ওপর শুরু হয় যৌতুক দাবিতে নির্যাতন, কখনো ৫০ হাজার টাকা লাগবে, কখনো ৮০ হাজার টাকা লাগবে ব্যবসা করবো, কখনো ৩০ হাজার টাকা লাগবে এমন করে দীর্ঘ ২ বছর ধরে বিভিন্ন সময় মায়ের বাড়ি থেকে টাকা এনে দিয়েছি। আর টাকা দিতে না পারলেই, আমার ওপর নেমে আসতো শারারিক ও মানসিক নির্যাতন। আমার গরিব মা-বাবার পক্ষে এত যৌতুক দেওয়া সম্ভব হয়ে উঠছিল না। সে ব্যবসার কথা বলে টাকা নিলেও ব্যবসা না অন্য বিষয়ে খরচ করতো। বিয়ের সময় আলিফকে ইসদ ২ লক্ষ টাকা যৌতুক ও ২ ভরি স্বর্ণ অলংকার আমি নিয়ে এসেছিলাম, সেই স্বর্ণ অলংকার বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অভাব অনটন দেখিয়ে বিক্রয় করে আমার সব স্বর্ণ অলংকার শেষ করে দিয়েছে।
সে আবারও আমাকে ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসের ২৮ তারিখে ভোর বেলায় মারধর করে বাড়ি থেকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দিয়ে আলিফ আমাকে বলে, এক লক্ষ টাকা নিয়ে আসবি নয়তো আরেকটা বিয়ে করব। তারপর হাটতে হাটতে আবারও আমি বাবার বাড়ি চলে আসি। আমার আসার পর সে আর কোন খোজখবর নেয় না, এরপর আমার বাবা ও ভাই একটি মিমাংসার ব্যবস্থা করলেও সে মিমাংসাতে আমাদের সবার উপস্থিতিতে ১লক্ষ টাকা দাবি করে, নয়তো আপনার মেয়ের সাথে আমার সংসার করা সম্ভব নই। এরপর বোঝানোর চেষ্টা করলে সে, মিমাংসা ছেড়ে উঠে চলে যায়। ইতিমধ্যে জানতে পারি, সে কাবিন নামা ছাড়াই ৪র্থ বিয়ে করেছে।
পরে বাধ্য হয়ে আমি রাজশাহী আদালতে যৌতুত নির্যাতন এর একটি মামলা দায়ের করি।
আসামী আব্দুল আলিফের বড় বোন দোলা ও রেবা’র কাছে ২টি বিয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে, তারা বলেন, আমরা আলিফের বাড়ির পাশেই থাকি তবে ওর সাথে আমাদের কোন সম্পর্ক নেই। আলিফ এর আগেও ২টি বিয়ে করেছিল, প্রথম স্ত্রী’র নাম আখিঁ ও ২য় স্ত্রী’র নাম সুইটি এবং ৩য় স্ত্রী আছিয়া থাকাকালীন সে ৪র্থ বিয়ে করে যার নাম সাবিনা। তবে আমরা দেখেছি ৪ নং স্ত্রীর সাবিনার থেকে আছিয়া খাতুন ই ভালো ছিল।
নাম প্রকাশ না করে সর্তে একাধিক এলাকাবাসী জানায়, এই আলিফ একজন নারী নির্যাতনকারী ও যৌতুক লোভী। প্রায় তার স্ত্রীকে মারধর করতো। কেউ এই বিষয়ে প্রতিবাদ করলে তার সাথে ঝগড়া লাগিয়ে দিত, ফলে আমরা এলাকাবাসী এই বিষয়ে কোন প্রতিবাদ করতাম না।