ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার শালবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শটকাটে স্কুলে যাওয়ার রাস্তাটি জোরপূর্বক দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ করে রাখা হয়েছিল। এতে ওই স্কুলের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের অনেকটা পথ ঘুরে একটি কবরস্থানের মধ্য দিয়ে স্কুলে যেতে হতো। দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে স্কুলে যেতে শিক্ষার্থীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হতো।
অবশেষে কযেকদিন যাবৎ চেষ্টার পর মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) বিকালে রাণীশংকৈল উপজেলার বৈষম্যবিরোধী ছাত্রসমাজ, এলাকাবাসী, ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে এবং ইউএনও'র নির্দেশে সহকারী কমিশনার (ভূমি) আর্নিকা আক্তার সার্ভেয়ার নিয়ে ঘটনাস্থলে যায় এবং দৈর্ঘ্য- প্রস্থ মাপযোগ করে স্কুলে যাওয়ার বন্ধ রাস্তাটির সীমানা বের করে দেন।
এ সময় দখলকারী ব্যক্তি মালেক মাস্টার নিজে উপস্থিত থেকে একটি লিখিত ডকুমেন্টপত্র করে দেন। এরফলে আর কোন কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কবরস্থান পাড়ি দিয়ে দীর্ঘ পথ দিয়ে স্কুল যেতে হবে না বলে স্কুল কর্তৃপক্ষ ও এলাকাবাসি জানান। এছাড়াও শীঘ্রই এলাকাবাসী সেচ্ছায় শ্রম দিয়ে রাস্তাটি ভালোভাবে নির্মাণ করে দিবেন বলে জানিয়েছেন।
জানা গেছে, ওই স্কুলের জমিদাতা মালেক মাস্টার ও তার ভাই স্কুল থেকে মূল সড়কে যাওয়ার রাস্তটি নিজের জমি দাবি করে বন্ধ করে চাষাবাদ করে আসছিলেন। এতে করে দীর্ঘদিন যাবত শিক্ষার্থীদের স্কুলে যেতে চরম সমস্যা হচ্ছিল। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক নারগিস বানু বলেন, 'তিন বছর ধরে এ রাস্তার জন্য লড়াই করে আসছি। আদালত দলিলমূলে স্কুলের পক্ষে রায় দিলেও রাস্তা দখলকারীরা জোরপূর্বক দখল করে রাস্তা বন্ধ রেখে চাষাবাদ করতেন। এতে করে দূরের পথ পাড়ি দিয়ে অনেক শিক্ষার্থী স্কুলে আসেনা। ধীরে ধীরে আমার স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী কমে যাওয়া শুরু করে। রাস্তাটি পেয়ে স্কুলের বাচ্চারা খুব উপকৃত হলেন। আর আমরাও চিন্তামুক্ত হলাম। কৃতজ্ঞতা জানাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্রসমাজ, এসিল্যান্ড ও ইউএনও স্যারকে।' এ
ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার রাহিমউদ্দিন বলেন, রাস্তাটি স্কুলটির জন্য খুব জরুরি ছিল। এটি জোরপূর্বক দখল করে রাখা হয়েছিল। এলাকাবাসী ও সাধারণ ছাত্ররা স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় এটি উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে। শিক্ষার্থীদের দূরের পথ পাড়ি দিয়ে স্কুলে যাওয়ার কষ্ট দূর হল।
রাণীশংকৈল উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রকিবুল হাসান জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে আমি নিজে সরেজমিন পরিদর্শন করেছি। দলিল মূলে স্কুল থেকে মূল রাস্তা পর্যন্ত ৫ ফিট প্রস্থ রাস্তা ছেড়ে দেওয়ার কথা দলিলে উল্লেখ আছে। গতকাল বিকালে এসিল্যান্ড আর্নিকা আক্তার, সার্ভেয়ার ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়। এসিল্যান্ড মাপযোগ করে রাস্তাটি বের করে দিয়েছে। ওই রাস্তা দিয়ে শিক্ষার্থীদের স্কুলে যেতে আর কোন সমস্যা নেই বলেও তিনি জানান।