কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার বাহিরচর ইউনিয়নের ১২ মাইল, মসলেমপুর ও মুন্সিপাড়ায় পদ্মা নদীর ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারণ করেছে। প্রমত্তা পদ্মা নদীর তীব্র ভাঙনে কুষ্টিয়া-পাবনা মহাসড়ক হুমকির মুখে রয়েছে। পদ্মাপাড়ের মানুষ আতংকে মধ্যে দিনযাপন করছে। ভাঙনে কৃষি জমি, ঘরবাড়ি, ইটভাটা, রাস্তা ও বাঁধ নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে।
শুক্রবার পর্ষন্ত ভেড়ামারার হার্ডিঞ্জ ব্রীজের নিচে পদ্মার পানি বিপদ সীমানার নিচে রয়েছে। অপরিকল্পিত বালু উত্তোলনের কারণে ভেড়ামারায় দিনদিন পদ্মার ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করছে।
এলাকাবাসী সুত্রে জানা গেছে, ভেড়ামারা উপজেলার বাহিরচর ইউনিয়নের ৩টি গ্রাম পদ্মাপাড়ের মানুষ আতংকে মধ্যে দিনযাপন করছে। উপজেলার বাহিরচর ইউনিয়নের ১২ মাইল, মসলেমপুর ও মুন্সিপাড়ায় পদ্মা নদীর ভাঙ্গন দিন দিন তীব্র আকার ধারণ করেছে। প্রমত্তা পদ্মা নদীর তীব্র ভাঙনে কুষ্টিয়া-পাবনা মহাসড়ক হুমকির মুখে রয়েছে। ভাঙনে কৃষি জমি, ঘরবাড়ি, রাস্তা, ইটভাটা,ও বাঁধ নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার পর্ষন্ত ভেড়ামারার হার্ডিঞ্জ ব্রীজের নিচে পদ্মার পানি বিপদ সীমানার নিচে রয়েছে। অপরিকল্পিত বালু উত্তোলন এর কারণে ভেড়ামারায় ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করছে। পদ্মার তীব্র স্রোতে দিনদিন নতুন নতুন এলাকা ভাঙছে। ভেড়ামারা উপজেলার কুষ্টিয়া-পাবনা মহাসড়ক ও রায়টা বেড়িবাঁধ এখন হুমকির মুখে। রায়টা বেড়িবাঁধ ভাঙন থেকে মাত্র ২শত মিটার দূরে ঝুঁকিতে রয়েছে প্রায় ৪ হাজার পরিবারের বাড়িঘর। বাহাদুরপুর ইউনিয়নের রায়টা বেড়িবাঁধের পাশেই রায়টা পাথর ঘাট। অন্যতম সুন্দর্যময় দর্শনীয় স্থান রায়টা পাথর ঘাট। এখানে রয়েছে পিকনিক স্পট। বাহিরচর ইউনিয়নের ১২ মাইল, মসলেমপুর ও মুন্সিপাড়ায় নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে ২শতাধিক একর ফসলি জমি। অপরিকল্পিত বালু উত্তোলন এর কারণে ভেড়ামারায় ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করছে।
হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানি পরিমাপক প্রতিষ্ঠান হাইড্রোলজি বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, সর্বশেষ হার্ডিঞ্জ ব্রিজের পানির লেভেল মাপা হয়েছে ১১ দশমিক ৯৯ সেন্টিমিটার। বিপত্সীমা ধরা হয় ১৪ দশমিক ২৫ সেন্টিমিটার। হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে ১৪ দশমিক ২৫ সেন্টিমিটারে পানির উচ্চতা পৌঁছালেও তেমন কোনো ক্ষয়ক্ষতি হবে না কুষ্টিয়া জেলা। শুধু নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হবে। এই পয়েন্টে ১৫ দশমিক ১৯ সেন্টিমিটার পর্যন্ত সর্বোচ্চ পানির উচ্চতা রেকর্ড করার সুযোগ রয়েছে। তবে পানির উচ্চতা ১৬ সেন্টিমিটার অতিক্রম করলে ভয়াবহ বন্যা হতে পারে।
হাসান আলী বলেন, পদ্মায় বৈধ বালুমহাল না থাকলেও প্রভাবশালীরা অপরিকল্পিতভাবে নদী থেকে বালু উত্তোলন করেছেন। এর ফলে পানির গতিপথ পরিবর্তন হয়ে নদী ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে এসব এলাকার একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ইটভাটা, মসজিদ, হাট-বাজার ও রাস্তা-ঘাট।
ভেড়ামারা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট তৌহিদুল ইসলাম আলম মালিথা বলেন, উপজেলার বাহিরচর ইউনিয়নের ১২ মাইল, মসলেমপুর ও মুন্সিপাড়ায় পদ্মা নদীর ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারণ করেছে। ভাঙ্গন রোধ না করা হলে কুষ্টিয়া-পাবনা মহাসড়ক হুমকির মুখে পড়বে।
ভেড়ামারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আকাশ কুমার কুন্ডু বলেন, ভেড়ামারার হার্ডিঞ্জ ব্রীজের নিচে পদ্মার পানি বিপদ সীমানার নিচে রয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব সময় খোঁজ রাখা হচ্ছে। বন্যার জন্য আমাদের আগাম প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। উঁচু ভবনগুলো আশ্রয়কেন্দ্র করা হবে। তবে নদীর পানির উচ্চতা স্বাভাবিক রয়েছে।
বাহাদুরপুর ইউপি চেয়ারম্যান সোহেল রানা পবন বলেন, প্রতি বছর পদ্মায় পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে রায়টা বেড়িবাঁধে পানির আঘাত হানে। মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয় এই এলাকার মানুষ। এবারও তাই হয়েছে। দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকে বাহাদুরপুর ইউনিয়নসহ উপজেলার প্রায় অর্ধেক গ্রাম ডুবে যাবে। নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে, তবে তা লোকালয়ে এখনো প্রবেশ করেনি। কিছু নিম্নাঞ্চলে পানি ঢুকেছে তা ছাড়া চরের আবাদি জমির ধান ও সবজি ডুবে গেছে। পদ্মা নদীতে নতুন পানি এসেছে তবে এখনো কোনো ক্ষয় ক্ষতি হয়নি।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের কুষ্টিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী অফিস সুত্রে জানা গেছে, ভাঙনরোধে জরুরিভাবে বালি ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। ভাঙন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে দ্রুতই কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়া হবে। ইতোমধ্যেই অর্থ বরাদ্দ চেয়ে আবেদন জানানো হয়েছে। দ্রুতই জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন নিয়ন্¿ণে রাখা হবে। নদী তীরে ব্যবসায়ীদের জড়ো করে রাখা বালুর স্তুপ ভাঙন তীব্র করছে বলে জানান প্রকৌশলীরা।