১৫ নভেম্বর ২০২৪, শুক্রবার, ০১:৪৫:১৮ অপরাহ্ন


মৌলভীবাজারে বন্যায় কমপক্ষে আড়াই লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি
অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ২২-০৮-২০২৪
মৌলভীবাজারে বন্যায় কমপক্ষে আড়াই লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি ছবি: সংগৃহীত


টানা ভারী বর্ষণ ও ভারত থেকে নেমে আসা উজানের ঢলে আকস্মিক বন্যায় মৌলভীবাজারের কুলাউড়া, জুড়ী, কমলগঞ্জ, রাজনগর, কমলগঞ্জ, বড়লেখা ও সদর উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের অসংখ্য বসতঘর, আঞ্চলিক মহাসড়ক, গ্রামীণ সড়ক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তলিয়ে গেছে। সড়কে পানি উঠে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে জেলা সদরের সঙ্গে। বন্যায় কমপক্ষে আড়াই লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।

বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে মনু ও ধলাই নদীর একাধিক স্থানে প্রতিরক্ষা বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। বুধবার (২১ আগস্ট) রাতে কমলগঞ্জ উপজেলায় নতুন করে ধলাই নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধে ভাঙন দেখা দেয়। এতে নতুন করে আরও কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়। অপরদিকে মনু নদীর টিলাগাঁও এলাকায় প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙে তলিয়ে গেছে কুলাউড়া উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রাম।

মনু নদীর ভাঙনে রাজনগর উপজেলার টেংরা, কামারচাক, মনসুরনগর, রাজনগর সদর ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়ে গেছে।

সরেজমিনে রাজনগর উপজেলার কদমহাটা এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, মনু নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙে তীব্র স্রোতে পানি ঢুকছে। পানিতে তলিয়ে গেছে মৌলভীবাজার-কুলাউড়া আঞ্চলিক মহাসড়কের কদমহাটা এলাকা। যার ফলে জেলা সদরের সাথে চারটি উপজেলার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

কদমহাটা এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য মুনায়েম কবির বলেন, রাজনগর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়ে গেছে। এখানে চারদিকে পানি আর পানি। ২০১৮ সালে মনু নদীর ভাঙনে একই জায়গায় প্রতিরক্ষা বাঁধে ভাঙন দেখা দেয়। এ বছর একই জায়গায় বাঁধ ভেঙেছে। যদি এই বাঁধটি আগে সঠিকভাবে দেওয়া হতো তাহলে এ রকম ঘটনা ঘটতো না। আমরা পানিবন্দি হতাম না।

তিনি বলেন, উপজেলার অনেক বাড়ি পানির নিচে তলিয়ে গেছে। অনেকেই তাদের বাড়িতে অবস্থান করছেন। কিন্তু পানির তীব্র স্রোতের কারণে তারা বাড়ি থেকে আশ্রয় কেন্দ্রে আসতে পারছেন না। আমরা সেনাবাহিনীকে বলেছি স্পিড বোটের মাধ্যমে তাদের উদ্ধার করার। সেনাবাহিনী বলেছে তারা উদ্ধার কাজ চালাবে।

মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার আপডেট অনুযায়ী জেলার মনু নদী (রেলওয়ে ব্রীজ) বিপৎসীমার ৮৫ সেন্টিমিটার, চাঁদনীঘাট এলাকায় ১১৮ সেন্টিমিটার, ধলাই নদীতে ৩০ সেন্টিমিটার ও জুড়ী নদীতে বিপৎসীমার ১৯৩ সেন্টিমিটার এবং কুশিয়ারা নদীর পানি বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এছাড়া জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, বন্যায় ২১২টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে ১৬টি, আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন ৪ হাজার ৩২৫ জন, মেডিকেল টিম রয়েছে ২৫টি।

মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জাবেদ ইকবাল বলেন, মনু ও ধলাই নদীতে পানি কমেছে। নিচের দিকে পানি বাড়ছে। রাতে মনু নদীর উজানে ভাঙন দিয়েছে। বৃষ্টি কমে গেলে পানি নেমে যাবে। এ ছাড়া যেসব স্থানে বাঁধ ভেঙেছে সেগুলোতে কাজ চলছে।