১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার, ০১:১২:১৮ পূর্বাহ্ন


চাঁপাইনবাবগঞ্জে মাদ্রাসার সভাপতির পদত্যাগ দাবি
সেলিম রেজা
  • আপডেট করা হয়েছে : ২০-০৮-২০২৪
চাঁপাইনবাবগঞ্জে মাদ্রাসার সভাপতির পদত্যাগ দাবি চাঁপাইনবাবগঞ্জে মাদ্রাসার সভাপতির পদত্যাগ দাবি


চাঁপাইনবাবগঞ্জে বৈষম্য বিরোধী ছাত্রসমাজ নরেন্দ্রপুর দাখিল মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির পদত্যাগ দাবি করেছে।

মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) সকাল ১১টায় মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ও এলাকার বৈষম্য বিরোধী ছাত্রসমাজ এক দফা দাবিতে মিছিল ও সমাবেশ করে।

বৈষম্য বিরোধী ছাত্রসমাজ নরেন্দ্রপুর দাখিল মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো: শাহজামান (বাবু) ও অন্যান্য সদস্যের অপসারণের দাবি জানিয়েছে। ছাত্র-ছাত্রীরা শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে সভাপতির পদত্যাগ দাবি করেছে। তারা সকাল থেকেই ক্লাস বর্জন করে মাদ্রাসা মাঠে জমায়েত হতে থাকে।

মাদ্রাসার সুপার মাওলানা মো: আব্দুল্লাহ তাদের জমায়েতের বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষার্থীরা সভাপতির পদত্যাগ দাবি করে। সুপার ও অন্যান্য শিক্ষকগণ ছাত্র-ছাত্রীদের ক্লাসে ফিরে যেতে বললেও তারা সভাপতির পদত্যাগের দাবিতে অনড় থাকে। শিক্ষার্থীরা মাদ্রাসার অফিস কক্ষের সামনে জমায়েত হয়ে সভাপতির পদত্যাগের দাবিতে মিছিল করতে থাকে। শিক্ষার্থীরা দফা এক দাবি এক সভাপতির পদত্যাগ, ভুয়া-ভুয়া সভাপতি ভুয়া এমন শ্লোগান দিতে থাকে। শিক্ষার্থীদের এ যৌক্তিক দাবির সাথে সাবেক শিক্ষার্থীরাও একাত্ত্বতা ঘোষণা করে সভাপতির অপসারণ দাবি করেছে। মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্রসমাজ এক প্রতিবাদি মিছিল নিয়ে নরেন্দ্রপুর বাজার প্রদক্ষিণ করে শাহজাহানপুর ইউনিয়ন পরিষদের সামনে জমায়েত হয়ে সভাপতির অপসারণের জন্য শ্লোগান দিতে থাকে। ইউপি অফিসে চেয়ারম্যান না থাকায় তারা এক বিক্ষোভ সমাবেশ করে শ্লোগান দিতে দিতে আবার মাদ্রাসায় ফিরে আসে।

উল্লেখ্য, এ বছর ১ আগস্ট ২ বছরের জন্য নরেন্দ্রপুর দাখিল মাদ্রাসায় মো: শাহজামান (বাবু) ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছে।  চাঁপাইনবাবগঞ্জে-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল ওয়াদুদ এর প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় এলাকার যোগ্য ও শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিদের বাদ দিয়ে মাদক সেবনকারী ও ইসলাম ধর্মজ্ঞানহীন মো: শাহজামানকে মাদ্রাসার মতো একটা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। এতে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর মধ্যে বিরুপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। এর আগেও শাহজামান বাবু নরেন্দ্রপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও নরেন্দ্রপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি ছিলেন। দলীয় প্রভাব ও সাংসদের সহযোগিতায় তিনি সবসময় এলাকায় শক্তি খাটিয়ে বিভিন্ন পদ দখল করে থাকেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে তিনি নিয়মিত মাদক সেবন করেন এবং প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ বাণিজ্যের সাথে জড়িত। মাঝে মাঝে ঠিকাদারদের কাছে চাঁদা দাবির অভিযোগ রয়েছে।  প্রতিষ্ঠানের কোন স্লিপ ফান্ড বা কাজের অর্থ বরাদ্দ হলে সেখান থেকে সে চাাঁদা দাবি করার অভিযোগও রয়েছে। এছাড়াও সে এলাকায় দলীয় প্রভাব খাটিয়ে মাদ্রাসার কক্ষে বখাটেদেও নিয়ে মাদকের আড্ডা বসায়। 

নরেন্দ্রপুর দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্রসমাজের দাবি কোন মাদকাসক্ত এবং বেনামাজি ব্যক্তি মাদ্রাসায় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হতে পারবে না। তারা দ্রুত সভাপতির পদত্যাগ দাবি করেছে। মাদ্রাসার সুপার শিক্ষার্থীদের দাবি শুনেছেন এবং তা শিক্ষা অফিসে জানানোর ব্যবস্থা করবেন বলে জানিয়েছেন। তিনি শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবিকে স্বাগত জানিয়ে আশ^স্ত করেছেন। শিক্ষার্থীরা বলেছে দ্রুত এ দাবি না মানলে তারা জেলা প্রশাসক বরাবর লং মার্চ কর্মসূচি পালন করবে।