রাজশাহীতে চাকরি দেওয়ার নামে পুলিশ কনস্টেবল দম্পতির বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। টাকা নিয়ে কনস্টেবল পদে চাকরি না দেওয়ার ঘটনায় রাজশাহী পুলিশ সুপারের (এসপি) কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন চাকরিপ্রার্থী ভুক্তভোগী যুবকের মা নার্গিস আরা।
টাকা ফেরত চাওয়ায় ওই পুলিশ দম্পতির বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী পরিবারকে নানাভাবে হয়রানি এবং ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগও উঠেছে।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহীর গোদাগাড়ীর বাসুদেবপুর এলাকার মাজেদ আলীর স্ত্রী নারগিস আরা। তার ছেলে নাফিউল ইসলাম ইমন চাকরিপ্রত্যাশী। তার ছেলেকে কনস্টেবল পদে চাকরি দেওয়ার নামে রাজশাহী রেঞ্জ রিজার্ভ ফোর্সে (আরআরএফ) বর্তমানে কর্মরত শফিকুল ইসলাম এবং তার স্ত্রী সাহিদা খাতুন গত মার্চে ১৭ লাখ টাকা নেন। শফিক এবং সাহিদাও কনস্টেবল পদে কর্মরত রয়েছেন।
লিখিত অভিযোগে আরও জানানো হয়, চাকরিপ্রার্থী ইমনের আপন মামাতো বোন কনস্টেবল সাহিদা এবং শফিক তার বোন জামাই। নিকটাত্মীয় হওয়ায় চাকরির জন্য টাকা চাওয়ায় সরল বিশ্বাসে জমি বিক্রি করে ১৭ লাখ টাকা শফিক এবং সাহিদার কাছে দেওয়া হয়। গত মার্চে কনস্টেবল পদে নিয়োগের সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়; কিন্তু চাকরি না হওয়ায় শফিক এবং সাহিদার কাছে টাকা ফেরত চাওয়া হয়। ইতোমধ্যে শফিক এবং সাহেদা ১৭ লাখ টাকার মধ্যে দুই দফায় সাড়ে নয় লাখ টাকা ফেরত দিয়েছেন। এরপর বাকি টাকা চাইলে তারা নানা ধরনের ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন।
চাকরিপ্রার্থী ইমনের বাবা মাজেদ আলী বলেন, আমি ক্যান্সার আক্রান্ত। চিকিৎসা করাতে আমার পরিবার নিঃস্ব। এরপরও ছেলের চাকরির জন্য জমি বিক্রি করে শফিক এবং সাহিদাকে টাকা দিয়েছিলাম কিন্তু তারা প্রতারণা করেছেন। কিছু টাকা ফেরত পেয়েছি। বাকি টাকা চাইলে তারা হুমকি দিচ্ছেন। এ কারণে এসপির কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
অভিযোগের ব্যাপারে কনস্টেবল সাহিদাকে সোমবার সকালে ফোন দেওয়া হয়। এ সময় তার ছেলে ফোন ধরে বলেন মা অফিসে গেছেন, ফোন বাসাতেই আছে। এরপর সাহিদার স্বামী শফিককে ফোন দেওয়া হয়। সকাল থেকে বেলা তিনটা পর্যন্ত কয়েক দফা ফোন দেওয়া হলেও এই দম্পতি ফোন ধরেননি। ফলে অভিযোগ সম্পর্কে তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করছেন রাজশাহীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) খায়রুল আলম। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, অভিযোগকারী নার্গিস আরার বক্তব্য শুনেছি। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্তে সত্যতা পেলে কনস্টেবল দম্পতির বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।