২৫ নভেম্বর ২০২৪, সোমবার, ০৫:৫৬:৫৮ পূর্বাহ্ন


ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে রাবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
রাবি প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৯-০৭-২০২৪
ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে রাবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে রাবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ


দেশব্যাপী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে ও ছাত্রলীগের আক্রমনে নিহত হওয়া এবং ডিবি কার্যালয়ে জিম্মি রেখে সমন্বয়কদের মাধ্যমে জোরপূর্বক স্ক্রিপ্টেড বিবৃতি আদায়ের অভিযোগ এনে এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (২৯ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে এ বিক্ষোভ সমাবেশ করেন তারা। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদত্যাগের দাবি জানান আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. সালেহ হাসান নকীব, আরবি বিভাগের অধ্যাপক ইফতেখারুল আলম মাসউদ, সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. জামিরুল ইসলাম ও ড মো. সাইফুল ইসলাম একাত্মতা পোষণ করে শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলনে অংশ নেন।

এসময় 'বুকের ভেতর অনেক ঝড়, বুক পেতেছি গুলি কর', 'আমার ভাই মরলো কেন, প্রশাসন জবাব চাই', 'বঙ্গবন্ধুর বাংলায়, বৈষম্যের ঠাই নাই', 'জেগেছেরে জেগেছে, ছাত্র সমাজ জেগেছে', 'আবু সাঈদ মরলো কেন, প্রশাসন জবাব চাই, 'লেগেছেরে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে', 'আমাদের হল বন্ধ কেন, প্রশাসন জবাব চাই' এমনসব স্লোগান দিতে দেখা যায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন সমন্বয়ক মেহেদী হাসান সজীব বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের তুলে নিয়ে ডিবি কার্যালয়ে জিম্মি করে অস্ত্রের মুখে স্ক্রিপ্টেড বিবৃতি দিয়ে,ছাত্রসমাজের দাবিসমূহের প্রতি সরকার চরম ধৃষ্টতা প্রদর্শন করেছে। শুধু তাই নয়, সারাদেশে রাষ্ট্রীয় বাহিনী ও ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত শহীদদের পরিবারকে হুমকি-ধমকি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে, আর্মড ফোর্সকে ব্যবহার করে ঢাকায় এনে সরকার তাদের থেকে মিথ্যা জবানবন্দি নেওয়া ও সমস্ত দায় আন্দোলনকারীদের উপর চাপিয়ে শহীদের রক্তের সাথে তামাশা করেছে।

আমরা এতোদিন চুপ ছিলাম এখন আর নয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের প্রফেসর ড. ইফতিখারুল আলম মাসউদ বলেন, এতো বিরূপ পরিস্থিতিতে এতো রক্ত ও অনেক শহীদের মধ্যেও তোমরা যে সাহস ও সচেতন হয়ে দাঁড়িয়েছ এটাই শহীদদের আত্মার সবচেয়ে বড় হাতিয়ার। শহীদদের সেই স্বপ্ন, একটি মানবিক বাংলাদেশ কায়েম করতে হবে। সেই স্বপ্নকে আমাদের সবাইকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। তোমাদের দাবি অত্যন্ত যৌক্তিক। একটি সুস্থ ও সভ্য সমাজে এ ধরনের দাবিগুলো জানাতে হয় না, এমনি পূরণ হয়ে যায়।  আজকে এই বিনা ভোটের সরকার দেশকে এমন পর্যায়ে নিয়ে গেছেন আমাদেরকে আজ ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করে ছাত্র-শিক্ষকদের রাস্তায় দাঁড়াতে হচ্ছে। আমরা এর দ্রুত অবসান চাই।

পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সালেহ হাসান নকীব, এই মুহূর্তে আমরা রক্তের উপর দাড়িয়ে আছি। ঠান্ডা মাথায় মানুষকে হত্যা করা হয়েছে এবং রাষ্ট্র জুড়ে যে অরাজকতা তৈরি করা হয়েছে তা শুধু যে আমাদের ব্যথিত করেছে তা নয়। আমরা বিক্ষুব্ধ। আমি ছাত্র ছাত্রীদের বলতে চাই শুধু এখন নয়, সারা জীবন তোমরা ন্যায্যতার পথে থাকবে। তোমরা সুবিচারের পক্ষে আছো, ন্যায় বিচারের পক্ষে আছো, ন্যায়ের পক্ষে আছো। তোমাদের সাহস ও দৃঢ়তা দেখে শিক্ষক হিসেবে আমি গর্ববোধ করি।

তিনি আরও বলেন, আমরা মুক্তিযুদ্ধে আর ফিরে যেতে পারব না। নতুন করে মুক্তিযুদ্ধা হওয়ার কোন সুযোগ নেই। তবে যারা ন্যায়, ন্যায্যতা ও অধিকারের পক্ষে আছেন তারা এই যুগের রাজাকার। যারা মানুষের অধিকার হরণ করে, যাদের কাছে মানুষের রক্তের দাম নেই, যারা ন্যায় বিচারের পক্ষে দাঁড়াতে পারে না, সাহস নেই, সত্যি কথা বলতে পারে না তাদের মুখে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা জঘন্য শোনায়।