মিশনারি স্কুলের হস্টেলে ছাত্রকে যৌন নির্যাতনের ঘটনায় চাঞ্চল্যকর তথ্য পেল পুলিশ। দক্ষিণ ২৪ পরগনার উস্তির ওই স্কুলটির এক ছাত্রের উপর সহপাঠীই অত্যাচার চালিয়েছিল বলে পুলিশের দাবি। ওই ঘটনায় অভিযুক্ত ১৪ বছরের নাবালক বলে স্বীকার করেছে পুলিশ। তদন্তকারীদের আরও অনুমান, টানা লকডাউনের সময় মোবাইলে পর্নোগ্রাফি দেখার প্রভাব পড়েছে কিশোর মনে। তার জেরেই সহপাঠীর উপর ওই নাবালক পড়ুয়া যৌন নির্যাতন চালিয়েছে বলে ধারণা তদন্তকারীদের। অভিযুক্তকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বছর চোদ্দোর নির্যাতিত কিশোর উস্তির একটি নাম করা আবাসিক স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। স্কুলের হস্টেলে থেকেই চলত তার পড়াশোনা। হস্টেলের একটি ঘরে একসঙ্গে ২০ জন পড়ুয়া থাকে। গত বুধবার রাত একটা নাগাদ ওই ছাত্রের চিৎকার শুনে রুম ইনচার্জ এবং কয়েক জন সহ-শিক্ষক হস্টেলে যান। তাঁরা দেখতে পান, ওই ছাত্র অচেতন হয়ে পড়ে রয়েছে। তার নাক এবং কান দিয়ে রক্ত বার হচ্ছে। চোখের তলায় কালশিটে। এমনকি যৌনাঙ্গেও আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। ডায়মন্ড হারবারের এসডিপিও মিতুন দে-র নেতৃত্বে শুরু হয় তদন্ত।
পুলিশ প্রাথমিক ভাবে জানতে পারে, ওই দিন এক সহপাঠী প্রথমে ছাত্রকে যৌন নির্যাতন করে। তা জানাজানি হওয়ার ভয়ে সে ধারালো অস্ত্র দিয়ে ছাত্রটির শরীরে আঘাতও করে। অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিশ। পুলিশের দাবি, সোমবার রাতে টানা জেরার পর অপরাধ স্বীকার করে নেয় বছর চোদ্দোর ওই নাবালক। এর পর তাকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ আরও জানিয়েছে, ধৃত ছাত্র উস্তিরই বাসিন্দা। নির্যাতিত ছাত্রের সঙ্গে হোস্টেলের একই রুমে থাকত সে। ধৃত ছাত্রকে জুভেনাইল আদালতে পেশ করা হবে। পরবর্তী সময়ে তাকে রাখা হবে হোমে। তদন্তকারীদের ধারণা, লকডাউনের সময় মোবাইল ফোনের মাধ্যমে অনলাইন ক্লাস চলছিল। সেই সময় মোবাইলে পর্নোগ্রাফি দেখা অভ্যাস করে ফেলেছিল অভিযুক্ত। তার জেরেই এই ঘটনা ঘটেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
নির্যাতিত ছাত্রকে প্রথমে ভর্তি করানো হয়েছিল স্থানীয় একটি নার্সিংহোমে। তবে শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে প্রথমে ডায়মন্ডহারবার মেডিক্যাল কলেজ এবং পরে এসএসকেএমে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানে এখনও আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন ওই ছাত্র।
রাজশাহীর সময় / এম আর