রাজশাহীর বাঘা পৌর মেয়র ও বহিষ্কৃত আওয়ামী লীগ নেতা আক্কাছ আলীর দাপটে অস্থির বাঘা উপজেলার সর্বস্থরের মানুষসহ রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। তার বিরুদ্ধে অভিযোগের অন্ত নেই।
এমন কি দলীয় রাজনৈতিক নেতারাও জিম্মি তার কাছে। বহু আগ থেকে তার নামে রয়েছে প্রকাশ্যে মাতলামি, নারী নির্যাতন, চাঁদাবাজি, ধর্ষণ, বলাৎকার, দাঙ্গা-হাঙ্গামা, সরকারি কর্মকর্তাদের মারধর, আওয়ামী লীগের সম্মেলনে হামলা ও টেন্ডারবাজিরসহ অসংখ্য মামলা। তার পরেও তিনি থেমে নেই। একের-পর এক নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জন্ম দিয়েই যাচ্ছেন। সর্বশেষ তিনি বাবুল হত্যা মামলার প্রধান আসামি হয়ে পলাতক। তার কারণে এবার প্রশ্নবিদ্ধ রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগ।
এলাকাবাসীর অভিযোগ থেকে জানা গেছে, আক্কাছ আলীর সময় ঘনিয়ে এসেছে। পৌর সভায় দুর্নীতি করে অঢেল সম্পদের মালিক হওয়ার পর এবার তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুলকে হত্যা করে ব্যাপক সমালোচিত হয়েছেন। তবে এ ঘটনার ৮ দিন পেরিয়ে গেলেও আক্কাছ আলীকে গ্রেপ্তার করেনি থানা পুলিশ। এ নিয়ে এলাকাবাসীর ক্ষোভ সৃষ্টি হচ্ছে। লোকজনের একটায় দাবি, যে কোনো উপায়ে বাবুল হত্যার প্রধান আসামি আক্কাছ আলীকে গ্রেপ্তার করা হোক।
নিহত আওয়ামী লীগ নেতা বাবুলের বড় ছেলে লাবু জানান, পৌর সভায় তার বাবার রক্ত লেগে আছে। আক্কাছ আলী এবং তার ভাগিনা মেরাজ চেয়ারম্যান মিলে আমার বাবাকে হত্যা করেছে।
বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ওয়াহেদ সাদিক কবির, আড়ানী পৌর মেয়র মুক্তার আলী ও যুবলীগ নেতা শাহিনুর রহমান জানান, সন্ত্রাসী কর্মকণ্ড ও মাতাল হয়ে একাধিক ঘটনার জন্ম দেওয়া আক্কাছ এবার বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুলকে হত্যা করলেন। তার সঙ্গে মদতদাতা হিসাবে আছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় এক শীর্ষ নেতা, একজন এমপি ও একজন জেলা আওয়ামী লীগের নেতা।
গত ২২ জুন বাঘা উপজেলা পরিষদ চত্বরের সামনে তার অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে মানববন্ধন শুরু করে বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগ। একপর্যায়ে মানববন্ধনে হামলায় বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুল গুরুত্বর আহত হন এবং ২৬ জুন রামেক হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্চা কেন্দ্র আইসিউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এরপর থেকে আক্কাছ আলী লাপাত্তা।
বাঘা থানার ওসি আমিনুল ইসলাম জানান, প্রধান আসামি পৌর মেয়রকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি পলাতক। তবে তার ভাগিনা ইউপি চেয়ারম্যান ও জেলা যুবলীগ নেতা মেরাজুর ইসলাম মেরাজসহ ইতিমধ্যে ৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক।