২২ নভেম্বর ২০২৪, শুক্রবার, ১২:৪৭:০১ পূর্বাহ্ন


৬ মাসের ব্যবধানে যমজ সন্তানের জন্ম দিল, এরিন
তামান্না হাবিব নিশু:
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৯-০৬-২০২৪
৬ মাসের ব্যবধানে  যমজ সন্তানের জন্ম দিল, এরিন ৬ মাসের ব্যবধানে যমজ সন্তানের জন্ম দিল, এরিন


৬ মাসের ব্যবধানে জন্ম হল যমজ শিশুর! তাও আবার প্রায় দেড় হাজার কিলোমিটার দূরত্বে! গল্প নয়, কোনও স্ক্যামও নয়। সত্যিই এমন হয়েছে নিউ ইয়র্কে। ৪২ বছরের এরিন ক্ল্যান্সি এভাবেই মা হয়েছেন দুই পুত্রের। যমজ শিশু জন্মের এমনই এক অসাধারণ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে মার্কিন পত্রিকা 'দ্য সান'-এ। 

জানা গেছে, এরিনের প্রথম সন্তানটি হয়েছে স্বাভাবিক জৈবিক পদ্ধতিতে, দ্বিতীয় সন্তান এসেছে সারোগেসি করে। সেই কারণেই সম্ভব হয়েছে এমন অসম্ভব। মা এরিন ক্ল্যান্সি বলেন, 'আমার সদ্যোজাত সন্তান ডিলানকে কোলে নিয়ে আমি বিশ্বাস করতে পারছিলাম না, ৬ মাসের মধ্যেই ওর ভাই আসছে আমার কোলে।' 

২০১৬ সালে ব্রায়ানের সঙ্গে এরিনের দেখা হয়, একটি অনলাইন ডেটিং সাইটের মাধ্যমে। এর পরে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে তাঁরা বিয়ে করেছিলেন। বিয়ের পর থেকেই সন্তান পরিকল্পনা শুরু করলেও, তা সফল হয়নি। বারবার চেষ্টা করেও গর্ভধারণ করতে পারেননি এরিন। তাই আইভিএফ পদ্ধতির দ্বারস্থ হন এরিন-ব্রায়ান।

এরিন জানান, তাঁদের প্রথম চেষ্টা ব্যর্থ হয়, এরপর দ্বিতীয়বার প্রাথমিকভাবে প্রেগন্যান্সি এলেও, সাত সপ্তাহে গর্ভপাত হয়ে যায় এরিনের। স্বাভাবিকভাবেই মানসিকভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েন এরিন। এর পরে তাঁরা সারোগেসির কথা ভাবতে শুরু করেন। 

এরিন বলেন, ‘অনেক ভাবনাচিন্তার পরে আমরা একটি এজেন্সির সঙ্গে যোগাযোগ করি। ২০২২ সালের মে মাসে একজন সারোগেট মায়ের সঙ্গে দেখা হয় আমাদের। শুরু হয় সারোগেসি পদ্ধতি। এর পরেই অগস্ট মাসে আমি হঠাৎ প্রেগন্যান্ট হয়ে যাই! একেবারে স্বাভাবিক ভাবে!'

তখনও এরিন-ব্রায়ানদের সারোগেট গর্ভধারণ করেননি। তাই চাইলে সারোগেসি পদ্ধতি তখনই বন্ধ করে দিতে পারতেন তাঁরা। কিন্তু ছ'সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা এরিনের আচমকা একদিন রক্তপাত শুরু হয়। ফলে আশঙ্কা দানা বাঁধে, আবার গর্ভপাত হবে না তো! সে জন্যই তাঁরা নিজেদের জৈবিক প্রেগন্যান্সি নিয়ে উৎকণ্ঠার পাশাপাশিই, সারোগেসিও চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

অবশেষে, সারোগেট মাদারও গর্ভধারণ করেন। ততদিনে এরিন ৬ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। ফলে উভয় গর্ভধারণই সফল হয়। চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে ২০২৩ সালের মে মাসে প্রথম সন্তান ডিলানের জন্ম দেন এরিন। এবং নভেম্বরে তাঁদের সারোগেট মাদারের কোল আলো করে আসে, দ্বিতীয় সন্তান ডেক্লান।

এরিন বলেন, 'ডেক্লানকে যখন প্রথম দেখলাম, ওর প্রতি একই ভালবাসা ছিল আমার। ও খুব চিৎকার করে কাঁদত, ঘুমোত না। আমার বরং নিজেকে অপরাধী মনে হতো, যে ওকে আমি নিজের পেটে ধরতে পারিনি বলে। দু'মাস বয়সে ওর দুধের প্রোটিনে অ্যালার্জি ধরা পড়ল, তখন বোঝা গেল, এত কাঁদে কেন। এখন ও সুস্থ।' 

তবে এমন ৬ মাসের ব্যবধানে দুই সন্তানের কথা অনেকেই বিশ্বাস করতে চান না। কেউ বলেন, 'এ তো কেলেঙ্কারি!' কেউ আবার বলেন, নিশ্চয় একটি সন্তান 'নিজের' নয়। আসলে কোনওটাই সত্যি নয়। সত্যিই ৬ মাসের ব্যবধানে দুই 'নিজের' সন্তানকে কোলে পেয়েছেন এরিন।

এরিন আরও বলেন, 'আমি ভীষণ খুশি। কখনও ভাবিনি, যমজ সন্তানের মা হবো। লোকে বলে, কী করে এমনটা সম্ভব! ৬ মাসের ব্যবধানে সন্তান হয় নাকি! লোকে কী বলল তাতে কিছু এসে যায় না। আমার দুই ছেলে বড় হলে আমি ওদের বলব, ওরা কীভাবে দু'ভাই হয়ে উঠল।'