২৫ নভেম্বর ২০২৪, সোমবার, ০১:৫৪:৩৮ পূর্বাহ্ন


বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর ২৭ দফা নির্দেশনা
অনলাইন ডেস্ক:
  • আপডেট করা হয়েছে : ০২-০৬-২০২৪
বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর ২৭ দফা নির্দেশনা বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর ২৭ দফা নির্দেশনা


খাদ্যে ভেজাল ও মজুদদারি রোধ, নিত্যপণ্য সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছানোসহ বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকদের ২৭ দফা নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সম্প্রতি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মাধ্যমে লিখিত এই নির্দেশনা মাঠ প্রশাসনে দেয়া হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।

মাঠ প্রশাসনে পাঠানো এই নির্দেশনায় বলা হয়, খাদ্যে ভেজাল প্রতিরোধ করাসহ ভোক্তাদের যাতে কোনো রকম হয়রানি না হয় সে দিকে দৃষ্টি দিতে হবে; গ্রামপর্যায়ে সবাইকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে উৎপাদন বহুমুখী করার লক্ষ্যে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। আমাদের দেশীয় উৎপাদন বাড়াতে হবে, পরনির্ভরশীলতা কমাতে হবে; খাদ্য মজুদের মাধ্যমে মজুদদাররা যাতে কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি করতে না পারে সে বিষয়ে বিশেষ দৃষ্টি দেয়াসহ প্রয়োজনে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সাধারণ মানুষের কাছে যথাযথভাবে পৌঁছানোর লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে; স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় বা অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রছাত্রীরা নিয়মিত যায় কি না, কেউ জঙ্গিবাদ বা সন্ত্রাস, মাদক অথবা কিশোর গ্যাংয়ের সাথে সম্পৃক্ত হচ্ছে কি না সে বিষয়ে নজরদারি বৃদ্ধির জন্য অভিভাবকদের সচেতন করতে হবে।

পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে যেন কোনো রকম অশান্ত পরিবেশ সৃষ্টি না হয় এবং সেখানে যাতে সবাই শান্তি ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে বসবাস করতে পারে সে দিকে সার্বিক দৃষ্টি রাখতে হবে; সর্বজনীন পেনশন স্কিমে সর্বস্তরের মানুষকে যুক্ত করার লক্ষ্যে সবাইকে সচেতন করে তুলতে হবে। ইনকাম ট্যাক্স প্রদানের বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সচেতন ও উদ্বুদ্ধ করতে হবে; এলাকাভিত্তিক উৎপাদিত পণ্যের গুণগত মান বৃদ্ধির মাধ্যমে উৎপাদন বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দিতে হবে এবং উৎপাদিত পণ্য বাজারজাতকরণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে; নদীগুলো ড্রেজিং করা, নাব্যতা বাড়ানো, জলাধারগুলো সংস্কার করা, বর্ষাকালীন বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ বা বর্ষার পানি ধরে রাখা এবং সেগুলোকে শুকনা মৌসুমে চাষে এবং সুপেয় পানি ব্যবহার করার লক্ষ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। ভূগর্ভের পানি কম ব্যবহার করে ভূ-উপরিস্থ পানি যথাসম্ভব বেশি ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে; শহরগুলোতে বর্জ্য-ব্যবস্থাপনা সমস্যা প্রকট হয়ে দেখা দিয়েছে এবং বর্জ্য থেকেই নদী, খাল-বিলের পানি দূষিত হচ্ছে। কাজেই জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড পর্যায় পর্যন্ত বর্জ্য-ব্যবস্থাপনার বিষয়ে জনগণকে সচেতন করতে হবে।

আশ্রয়ণ প্রকল্পভুক্ত এলাকার মানুষের সুবিধা-অসুবিধা, জীবনমান, কর্মসংস্থান এবং আশ্রয়ণের ঘরগুলো উপকারভোগী কর্তৃক রক্ষণাবেক্ষণ ঠিকমতো হচ্ছে কি না, এই বিষয়গুলোয় নজরদারি অব্যাহত রাখতে হবে; শিক্ষিত যুবসমাজকে উৎপাদন এবং শিল্পায়নের সাথে সম্পৃক্ত হওয়ার বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। দক্ষ ও কর্মক্ষম জনশক্তি তৈরির নিমিত্ত কারিগরি বা ভোকেশনাল ট্রেনিংয়ের প্রতি গুরুত্বারোপ করতে হবে; শিশু-কিশোর ও যুবসমাজকে ক্রীড়া, সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা এবং বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ত করতে হবে।

প্রতি উপজেলায় একটি করে মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ অর্থাৎ একটি খেলার মাঠ দ্রুত প্রস্তুতের উদ্যোগ নিতে হবে; মুক্তিযুদ্ধের সময় যেখানে যুদ্ধ হয়েছে বা গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে, গণকবর রয়েছে, সেগুলো যথাযথভাবে সংরক্ষণ করে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস মানুষের সামনে তুলে ধরতে হবে। দেশের লবণাক্ত এলাকাগুলোতে সুপেয় পানির ব্যবস্থাকরণের প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে; তিন ফসলি জমি এবং চাষ উপযোগী জমি আবশ্যিকভাবে সংরক্ষণ করতে হবে। প্রকল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে তিন ফসলি জমি যেন নষ্ট না হয় সে দিকে লক্ষ রাখতে হবে। দালান-কোঠা নির্মাণের ক্ষেত্রে যেন যথাযথভাবে বিল্ডিং কোড মেনে নির্মাণ করাহয় সেই দিকে দৃষ্টি দিতে হবে। সেচকাজে যথাসম্ভব সোলার প্যানেল ব্যবহার করার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে; প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, ২৬ শে মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস এবং ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস সম্পর্কিত জ্ঞান অর্জনের বিষয়ে সচেতন করতে হবে। বাস্তবায়নাধীন উন্নয়ন প্রকল্পের কার্যক্রম মনিটরিং করতে হবে এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষকে প্রকল্পের অগ্রগতি জানাতে হবে; চর এলাকার অনাবাদি জমি আবাদের আওতায় আনতে হবে। সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নে সচেষ্ট হতে হবে; সর্বক্ষেত্রে ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণ করতে হবে।