ফের রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে রাশিয়াকে আক্রমণ করলেন, পোপ ফ্রান্সিস। রাশিয়ার আগ্রাসনের বিষয়ে রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিনকে স্পষ্টভাবে সমালোচনা করার পাশাপাশি তিনি বলেন, ‘জাতীয়তাবাদী স্বার্থের জন্য ইউক্রেনের ওপর রাশিয়া আক্রমণ বজায় রেখেছে’।
এক ভাষণে বক্তব্য রাখার সময় পোপ ফ্রান্সিস বলেন, “ যুদ্ধ কখনও কোন সুস্থ সমাধানের পথ প্রসারিত করেনা। আলোর মাঝে একরাশ অন্ধকার ছড়িয়ে দেওয়া ছাড়া যুদ্ধ আর কিছুই করতে পারতে। রাশিয়া ইউক্রেন সংঘাতে এত মৃত্যু আমাকে প্রচণ্ড ভাবে ব্যথিত করেছে। জাতীয়তাবাদী স্বার্থের জন্য ইউক্রেনের ওপর রাশিয়া তার হামলা জারী রেখেছে। যুদ্ধ কেবল মৃত্যু, ধ্বংস এবং ঘৃণা নিয়ে আসে, অনেক মানুষের জীবনে এর শক্তিশালী প্রভাব পড়েছে এবং তা আমাদের সবাইকে প্রভাবিত করেছে”।
সেই সঙ্গে তিনি বলেন, “জাতীয়তাবাদী স্বার্থের দাবির” আড়ালে “একজন শাসক” একটি “বর্বর আক্রমণ” দিয়ে বিশ্বকে পারমাণবিক যুদ্ধের দিকে ঠেলে নিয়ে যাচ্ছে! অবিলম্বে এই হিংসা বন্ধ হওয়া দরকার”। ভূমধ্যসাগরীয় দ্বীপ দেশ মাল্টায় সেদেশের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে দেয়া এক ভাষণে পোপ বলেন- ইউরোপের পূর্ব থেকে, সূর্যোদয়ের দেশ থেকে, যুদ্ধের অন্ধকার ছায়া এখন ছড়িয়ে পড়েছে।
এর আগেও যুদ্ধ নিয়ে একাধিক বার মুখ খুলেছিলেন পোপ ফ্রান্সিস। তিনি তার একাধিক ভাষণে রাশিয়ার ব্যবহার করা “বিশেষ সামরিক অভিযান” শব্দের বিরুদ্ধে তীব্র আপত্তি জানিয়ে বলেন, যুদ্ধ পাগলামি অবলম্বে তা বন্ধ করা দরকার।
সেই সঙ্গে তিনি বলেছিলেন, এটি কেবল একটি সামরিক অভিযান নয় বরং একটি যুদ্ধ যা “মৃত্যু, ধ্বংস এবং দুর্দশার বীজ বপন করে”। একই সঙ্গে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে যে সকল সাংবাদিক ইউক্রেনে থেকে সরাসরি সংবাদ বিশ্বের মানুষের কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন তাদের ভূয়সী প্রশংসা করেন তিনি। রাষ্ট্রসংঘের রিপোর্ট বলছে ইতিমধ্যে যুদ্ধের কারণে প্রায় লক্ষাধিক শিশু অসহায় হয়ে পড়েছে সেই সঙ্গে দেশ ছেড়েছে প্রায় ৬০ হাজার শিশু। যুদ্ধে নিহত হয়েছে ১৩৯ শিশু। সে কথা মনে করিয়ে পোপ ফ্রান্সিস বলেন, এত মৃত্যু মিছিল; অবিলম্বেই বন্ধ হওয়া দরকার।
এর আগে রোমে এক হাসপাতালে আহত শিশুদের দেখতে হটাত করেই হাজির হয়েছিলেন পোপ ফ্রান্সিস। শিশুদের স্পর্শ করে আশীর্বাদের পাশাপাশি তাদের জন্য প্রার্থনা করেন তিনি। আশ্বাস দিয়েছিলেন তাদের অভিভাবকদের। আর সেই সঙ্গে ‘যুদ্ধবাজ’ তকমা দিয়ে রাশিয়ার নিন্দায় সেবারও মুখ খুলেছেন পোপ ফ্রান্সিস।