২২ নভেম্বর ২০২৪, শুক্রবার, ১১:৫৬:০৩ পূর্বাহ্ন


দলিত কমেডিয়ানদের প্রতিবাদের ভাষাই কমেডি
তামান্না হাবিব নিশু :
  • আপডেট করা হয়েছে : ১১-০৫-২০২৪
দলিত কমেডিয়ানদের প্রতিবাদের ভাষাই কমেডি দলিত কমেডিয়ানদের প্রতিবাদের ভাষাই কমেডি


প্রতি নিয়ত কটাক্ষ, অপমানের শিকার হতে হতে প্রতিবাদের ভাষাই যখন কমেডি হয়ে ওঠে উত্তরও শুনতে শ্রুতিমধুর হয়। সবসময় যে ঝগড়া, লড়াই করেই উত্তর দেওয়া যায় না সেটাই যেন বুঝিয়ে দিচ্ছেন এই যুগের দলিত স্ট্যান্ড আপ কমেডিয়ানরা।

মনজিৎ সরকারের পরিবার দেশভাগের সময় বাংলাদেশ থেকে এদেশে চলে এসে ওড়িশায় থাকতে শুরু করেন। বাস্তার অঞ্চলে থাকতে শুরু করেন তাঁরা। কিন্তু ছোট থেকে কখনই মনজিৎ কমেডিয়ান হতে চাননি। তিনি বরং কখনও বাস ড্রাইভার, গাড়ির মেকানিক, কখনও আবার স্কুল শিক্ষক হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বড় হওয়ার সময় তিনি প্রতিনিয়ত এত অপমান, লাঞ্ছনার শিকার হয়েছেন তাঁর জাতের জন্য। আর অবাক করে তিনি সেই বিষয়টা মেনেও নিয়েছিলেন। কিন্তু কলেজে ওঠার পর যখন তাঁর জাতের আর কেউ ছিল না। তিনি একা ছিলেন। অপমানিত হতেন। কেউ তাঁর পাশে বসতে চাইত না তখন তাঁর সেই খারাপ লাগা, অপমান ধীরে ধীরে রাগে বদলাতে শুরু করল। আত্মসম্মান জেগে উঠল। আর এই সব রাগ, অপমান যা তাঁর মধ্যে জমা হচ্ছিল সেগুলো কমেডির আকারে বেরিয়ে এল।

তিনি তখন মঞ্চে দাঁড়িয়ে কোটা সিস্টেমের খারাপ দিক নিয়ে কথা বলা শুরু করলেন। তাঁর মতো আরও কিছু দলিতদের সঙ্গে নিয়ে কমেডি ক্লাব তৈরি করেছেন যেখানে তাঁরা সমাজে আজও চলতে থাকা এই সমস্যা নিয়ে মজার ছলে বার্তা ছড়ান।

মনজিৎ জানান 'মহামারীর সময় আমার সব জোকস টিন্ডার, জোম্যাটো থেকে বদলে অস্পৃশ্যতা নিয়ে জোকসে বদলে গেল। আমাদের শোয়ের পর অনেকে এসে জিজ্ঞেস করতেন দলিতদের অবস্থা আগের থেকে ভালো হয়েছে না? তাঁরা এখন আগের থেকে ভালো আছে না? এটা কোনও রোগ নয়। কিন্তু আগে আমি কেমন ছিলাম আর এখন কেমন আছি সেটা বোঝাই।'

একই অবস্থা অঙ্কুর টাঙ্গারের। তিনি জানিয়েছেন কমেডিয়ান হিসেবে তাঁদের একাধিক সমস্যায় পড়তে হয় যা উচ্চজাতের কমেডিয়ানদের ফেস করতে হয় না। তাঁর কথায়, 'আমাকে অনেকে বলে,ওমা তুমি দলিত? দেখে তো বোঝা যায় না। অনেকে আবার জিজ্ঞেস করেন কমেডিতেও কি সংরক্ষণের ব্যাপার আছে?' অঙ্কুর তো এও জানান, 'আমার বাড়িতে একবার এক বন্ধু এসে জিজ্ঞেস চা খেতে চায়নি কারণ সে নিরামিষাশী। আমি তখন বলেছিলাম তুমি কি মনে করো আমরা চায়ের কাপেও মাংস খাই?'