২০ মে ২০২৪, সোমবার, ০২:৪১:১৭ অপরাহ্ন


বগুড়ায় স্বামী-স্ত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু
অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৯-০৫-২০২৪
বগুড়ায় স্বামী-স্ত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু ফাইল ফটো


বগুড়ার শাজাহানপুরে স্বামী-স্ত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৯ মে) সকাল সোয়া ১০টার দিকে তাদের শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে আনার পর চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

মৃতরা হলেন- নন্দীগ্রাম উপজেলার নিম গ্রামের হেফজুল মিঠু (৪০) ও তার স্ত্রী আফরোজা বেগম (৩৫)। তারা শাজাহানপুরের আড়িয়াবাজার এলাকার অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য শফিকুল ইসলামের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। হেফজুল বগুড়া শহরের আশপাশে গাছ কেনাবেচার ব্যবসা করতেন।

ওই দম্পতির মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শজিমেক হাসপাতাল মর্গে নেওয়া হয়েছে।

তাদের স্বজনেরা জানান, প্রায় একযুগ আগে নন্দীগ্রামের হেফজুলের সঙ্গে শাজাহানপুরের প্রাণবাড়িয়া গ্রামের আফরোজার বিয়ে হয়। তবে দীর্ঘ দাম্পত্য জীবনে তাদের কোনো সন্তান ছিল না। হেফজুল ২০১৯ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত মালয়েশিয়ায় প্রবাস জীবন কাটান। করোনা মহামারিতে সেখানে সুবিধা করতে না পেরে দেশে ফিরে তিনি শাজাহানপুরে টিনশেড বাড়ির দুই কক্ষ ভাড়া নিয়ে ভায়রা জুয়েল হাসানের সঙ্গে গাছের ব্যবসা শুরু করেন।

স্থানীয় ফোকাস সোসাইটি নামের একটি প্রতিষ্ঠান থেকে হেফজুল সম্প্রতি দেড় লাখ টাকা ঋণও নিয়েছিলেন। তবে সেই টাকা পরিশোধ নিয়ে কোনো চাপ ছিল না তার। প্রায় তিন মাস আগে তার স্ত্রী আফরোজা হৃদরোগে আক্রান্ত শজিমেক হাসাপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এছাড়াও তার ডায়াবেটিস ছিল।

বাড়িওয়ালা শফিকুল ইসলাম বলেন, হেফজুল তার স্ত্রীকে নিয়ে দুই বছর আগে তার বাড়ি ভাড়া নেন। তারা স্বামী-স্ত্রী মিলেমিশে থাকতেন, কখনো তাদের মধ্যে ঝগড়া দেখিনি। আজ সকালে হেফজুলকে বাজার করে বাড়ি ফিরতে দেখি। এর কিছুক্ষণ পর আমার মেয়ে মুঠোফোনে জানায় হেফজুল ও আফরোজা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। দ্রুত বাসায় গিয়ে দেখি তারা ছটফট করছিলেন ও কোনো কথা বলতে পারছিলেন না। এইসময় আফরোজার বোন শিমুর সহযোগিতায় তাদের শজিমেক হাসপাতালে নিয়ে আসি। চিকিৎসক পরীক্ষা-নীরিক্ষা করে তাদের মৃত ঘোষণা করেন। এখন তাদের মধ্যে কী হয়েছে তা তো জানি না।

হেফজুলের ভায়রা জুয়েল জানান, আফরোজার সঙ্গে হেফজুলের প্রায় একযুগ আগে বিয়ে হয়। শুরু থেকেই তিনি গাছের ব্যবসা করেন। আজ সকালে তাকে ফোনে জানিয়েছেন শহরের পুলিশ লাইনস এলাকায় গাছ কাটা হবে। এরপর খবর আসে তারা হাসপাতালে। খবর পেয়ে সেখানে গেলে দু’জনকেই মৃত অবস্থায় দেখতে পান।

ময়নাতন্তকারী নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ডোম বলেন, মরদেহের ধরন দেখে মনে হয়েছে বিষক্রিয়ায় তাদের মৃত্যু হয়েছে।

শাজাহানপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম বলেন, তারা বিষপান করে মারা গেছেন কিনা বলা সম্ভব না। কারণ চিকিৎসা দেওয়াই সম্ভব হয়নি। কিন্তু মৃত্যুর আগে তারা দুজনই ছটফট করছিলেন। তাদের মৃত্যুর লক্ষণে আত্মহত্যার ধারণা করা যায়। এ বিষয়টি ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে নিশ্চিত হওয়া যাবে। আর পুলিশ স্থানীয়ভাবে ঘটনা জানার চেষ্টা করছে।