যৌন কর্ম আর অপরাধ নয়। এবার বেলজিয়ামের শ্রম আইনে অন্তর্গত করা হল যৌন কর্মীদেরও। চুক্তির ভিত্তিতে কর্মী হিসাবে কাজ করবেন যৌনকর্মীরা। বেলজিয়ামই বিশ্বের প্রথম দেশ, যেখানে যৌনকর্মীদের শ্রম আইনের অন্তর্গত করা হল।
জানা গিয়েছে, গত সপ্তাহের শুক্রবার বেলজিয়ামের সংসদে যৌনকর্মীদের জন্য চুক্তিভিত্তিক কর্মী হিসাবে কাজ করার আইন পাশ করা হয়।
এই আইনের পক্ষে ভোট দেন ৯৩ জন। ৩৩ জন ভোটদান থেকে বিরত থাকেন। বিপক্ষে ভোট দেননি কেউ।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালে বেলজিয়ামই ইউরোপের প্রথম দেশ ছিল যেখানে স্বেচ্ছায় যৌনকর্মের সঙ্গে যুক্ত থাকার সিদ্ধান্তকে অপরাধের আওতায় ফেলা হবে না।
জানা গিয়েছে, এই শ্রম আইনের অধীনে এবার থেকে যৌনকর্মীরা স্বাস্থ্যবিমা, পেনশন, বেকারত্বের ভাতা পাবেন। এছাড়া ছুটি, মাতৃত্বকালীন ছুটিও পাবেন যৌনকর্মীরা। এই আইনে কোনও গ্রাহককে বা কোনও ধরনের যৌনক্রিয়াকে প্রত্যাখান করা যৌনকর্মীর অধিকার বলে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে যৌনকর্মীদের কোনও শাস্তির মুখেও পড়তে হবে না।
এই আইনের অধীনে যৌনকর্মীদের নিজেদের ইচ্ছামতো যৌন ক্রিয়া করার অধিকারও দেওয়া হয়েছে। যৌনকর্মীরা চাইলে যে কোনও সময়েই চুক্তি ভেঙে দিতে পারেন। এক্ষেত্রে তাদের কোনও নোটিস পিরিয়ড দিতে হবে না। চুক্তি ভাঙলে বেকারত্বের ভাতা ও সুবিধাগুলি থেকেও বঞ্চিত হবেন না।
এছাড়া যৌনকর্মীদের পরিচয় গোপন রাখার অধিকারও আইনের অধীনে সুরক্ষিত থাকবে যাতে ভবিষ্যতে পেশা পরিবর্তন করলে, তাদের কোনও ধরনের বঞ্চনা বা বিভাজনের শিকার না হতে হয়।
পিম্প, অর্থাৎ যে ব্যক্তি যৌনকর্মীদের জন্য গ্রাহক খুঁজে আনেন, তাদেরও এই আইনের অধীনে কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শ্রম আইনে বলা হয়েছে যে যৌনকর্মীদের সঙ্গে সর্বদা একটি অ্যালার্ম বাটন রাখতে হবে। কোনও কর্মী ওই অ্যালার্ম বাজালে, তাঁকে সুরক্ষিতভাবে বের করে আনা এদেরই দায়িত্ব হবে। যদি কোনও যৌনকর্মী ৬ মাস ধরে ১০জনের বেশি গ্রাহক ফিরিয়ে দেন, তবে পিম্প বা দালালরা সরকারের কাছে মধ্যস্থতার দাবি করতে পারলেও, ওই কর্মীকে কাজ থেকে তাড়িয়ে দিতে পারবে না।
উল্লেখ্য, এই আইন কেবলমাত্র যৌনকর্মীদের জন্যই কার্যকর। পর্ন সিনেমার অভিনেতা, স্ট্রিপার বা ওয়েবক্যাম পারফর্মাররা এই আইনের অধীনে সুরক্ষিত থাকবে না।