গাড়ির রং হালকা নীল। ‘মাগ্ল’দের মানুষী দুনিয়া থেকে উড়ে গিয়ে মেঘের রাজ্য ভেদ করে দ্রুত গতিতে ছুটে চলছে গাড়িটি। সামনের আসনে বসে রয়েছে দুই স্কুলপড়ুয়া। তাদের একটিই লক্ষ্য। হগওয়ার্টস এক্সপ্রেসের নাগাল পাওয়া। হ্যারি পটারের দুনিয়ার সঙ্গে পরিচিতি থাকলে উইজ়লি পরিবারের ‘উড়ন্ত গাড়ি’র এই দৃশ্যটি অজানা নয়। কিন্তু বই বা সিনেমার পর্দা থেকে যদি ‘উড়ন্ত গাড়ি’ অথবা ‘ফ্লাইং কার’ বাস্তবেই তার অস্তিত্ব জানান দেয়?
ইউরোপের একটি বিমান প্রস্তুতকারী সংস্থা বাস্তবেই এমন একটি গাড়ি তৈরি করেছে যা দেখতে গাড়ির মতো হলেও আকাশপথে বিমানের মতো উড়তে পারে। কল্পনার জগৎকে বাস্তব রূপ দিয়েছে তারা।
ইউরোপের স্লোভাকিয়ায় ক্লেনভিসন নামের একটি প্রযুক্তি সংস্থা রয়েছে যারা এই ‘এয়ারকার’-আবিষ্কর্তা। এই সংস্থার সহ-প্রতিষ্ঠাতা অ্যান্টন জ়াজাক। স্থানীয় সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, চিনের এক সংস্থা স্লোভাকিয়ার এই সংস্থার সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। এই খবর পাকা করেছেন অ্যান্টন নিজেই।
চিনের হুবেই প্রদেশে একটি সংস্থা রয়েছে যার প্রধান দফতর কাংজৌউয়ে অবস্থিত। এই সংস্থাটি ক্লেনভিসনের কাছ থেকে উড়ন্ত গাড়ির প্রযুক্তি কিনে নিয়েছে। এমনকি গাড়ি বিক্রির যাবতীয় স্বত্বও কিনে নিয়েছে তারা।
২০২১ সালে প্রথম বার মহড়া দেয় এয়ারকার। স্লোভাকিয়ার দু’টি বিমানবন্দরের মধ্যে উড়েছিল ওই যানটি।
স্লোভাকিয়ার একটি বিমানবন্দরের রানওয়ে থেকে ওড়ার পর অন্য একটি বিমানবন্দরের রানওয়েতে এয়ারকারটি অবতরণ করে। মোট ৩৫ মিনিট ধরে ওড়ে যানটি।
স্থানীয় সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, এয়ারকারটি দেখতে একদম গাড়ির মতো। ওড়়ার দু’মিনিটর মধ্যে গাড়ি থেকে বিমানে রূপবদল করে এই যান।
সাধারণত যে ধরনের ইঞ্জিন দিয়ে বিমানটি তৈরি হয়, এয়ারকার নির্মাণের জন্য সেই ধরনের ইঞ্জিনের ব্যবহার হয়নি।
স্থানীয় সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, বিএমডব্লিউ গাড়ির ইঞ্জিন এই এয়ারকারে ব্যবহার করা হয়েছে। তবে কোনও বিশেষ জ্বালানি ব্যবহার হয় না এয়ারকারে।
চলতি বছরের গোড়ার দিকে যাত্রিবাহী একটি ড্রোনের মহড়া দেওয়া হয়। চিনের শেনজ়েন এবং জ়ুহাই শহরের মধ্যে এই ড্রোনের মহড়া হয়।
চিনের সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, শেনজ়েন এবং জ়ুহাই শহরের মধ্যে সড়কপথে যাতায়াত করতে তিন ঘণ্টা সময় লাগে। কিন্তু ড্রোনের মাধ্যমে সেই দূরত্ব মাত্র ২০ মিনিটে অতিক্রম করা গেছে।
পরিবহণ ব্যবস্থা উন্নত করতে প্রযুক্তিগত দিক থেকে চিন কয়েক পদক্ষেপ এগিয়ে। ব্রিটেনের সরকার এই নিয়ে ভাবনাচিন্তা করছে। তাদের দাবি, ২০২৮ সালের মধ্যে আকাশপথে ‘এয়ার ট্যাক্সি’র চলাচল শুরু হয়ে যাওয়া সম্ভব।