আসন্ন পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরকে সামনে রেখে চাঁদাবাজি প্রতিরোধে চট্টগ্রাম মহানগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে ৬টি কিশোর গ্যাং গ্রুপের গ্রুপ প্রধান-সহ ৩৩ জন সংক্রিয় সদস্যকে দেশীয় অস্ত্র-সহ গ্রেফতার করেছে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম।
বুধবার (২৭ মার্চ) মধ্যরাত থেকে বৃহস্পতিবার ২৮ মাচ সকাল পর্যন্ত চট্টগ্রাম মহানগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বিশেষ ছিনতাই এবং চাঁদাবাজির করার সময় ৪টি কিশোর গ্যাং এর গ্রুপ প্রধানসহ সর্বমোট ২২ জন কিশোর গ্যাংয়ের সংক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়
বৃহস্পতিবার দুপুরে র্যাব-৭, এর পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
র্যাব জানায়, আসন্ন পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে র্যাব-৭, চট্টগ্রামের দায়িত্বপূর্ণ এলাকার নিরাপত্তা জোরদার করার লক্ষ্যে বিভিন্ন জনবহুল এলাকায় র্যাবের নিয়মিত টহল এবং সাদা পোষাকে গোয়েন্দা নজরধারী বৃদ্ধি করা হয়েছে। যাতে জনসাধারণ নির্বিঘেœ ঈদের কেনাকাটা ও বাড়িতে যাতায়াত করতে পারে। এছাড়াও ঈদ-উল-ফিতরকে কেন্দ্র করে ঘরমুখো মানুষ যেন নিরাপদে ও নির্বিঘেœ তাদের বাড়িতে পৌঁছাতে পারে সেজন্য র্যাব-৭ চট্টগ্রাম এর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব-৭, চট্টগ্রাম চাঁদাবাজদের হাতেনাতে গ্রেফতারের লক্ষ্যে বুধবার মধ্যরাত থেকে বৃহস্পতিবার সকাল সকাল পর্যন্ত চট্টগ্রাম মহানগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে ছিনতাই এবং চাঁদাবাজির সময় ৪টি কিশোর গ্যাং এর গ্রুপ প্রধানসহ সর্বমোট ২২ জন কিশোর গ্যাং এর সংক্রিয় সদস্য’কে দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্রসহ আটক করেছে।
এর মধ্যে, চট্টগ্রাম মহানগরীর পাঁচলাইশ থানাধীন ফরেষ্টগেট রেল ক্রসিং এলাকা হতে “রুবেল গ্রুপ” নামের কিশোর গ্যাং এর প্রধান রুবেলসহ ৬ জন কিশোর গ্যাং এর সংক্রিয় সদস্যকে দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্রসহ গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা বর্ণিত এলাকায় চলাচলরত পথচারীদের দেশীয় অস্ত্রের মাধ্যমে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে মূল্যবান জিনিসপত্র, স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থ এবং মোবাইল ফোন ছিনাতাই করে আসছিল।
চট্টগ্রাম মহানগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানাধীন পূর্ব নাসিরাবাদ এলাকা হতে “জনি গ্রুপ” নামের কিশোর গ্যাংয়ের ৫জন সংক্রিয় সদস্যকে দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্রসহ গ্রেফতার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা পরষ্পর একে অন্যের সাথে যোগসাজশে ডাকাতির উদ্দেশ্যে সমবেত হয়ে বায়েজিদ বোস্তামী থানা এলাকাসহ চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন এলাকায় দীর্ঘদিন যাবৎ ডাকাতি ও ছিনতাই করে আসছে। এছাড়াও তারা সাধারণ মানুষসহ প্রত্যহিক চলাচলরত বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষদের দেশীয় অস্ত্রের মুখে ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে মূল্যবান জিনিসপত্র, স্বর্ণালংকার, মোবাইল ফোন ও নগদ টাকা ছিনতাই করে আসছিল।
চট্টগ্রাম মহানগরীর পাঁচলাইশ থানাধীন মোহাম্মদপুর এয়ার বিল টাওয়ার এলাকায় “বাচা গ্রুপ” নামক কিশোর গ্যাং এর গ্রুপ প্রধান বাচা মিয়া ওরফে বাচা সোহেলের নেতৃতে ছিনতাই এবং ডাকাতির প্রস্তুতিকালে ৫জন কিশোর গ্যাংয়ের সক্রিয় সদস্য’কে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে তারা স্বীকার করে যে, তারা পরষ্পর যোগাযোগক্রমে ডাকাতির উদ্দেশ্যে বর্ণিত এলাকায় সমবেত হয় এবং দীর্ঘদিন যাবৎ চট্টগ্রাম মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতি ও ছিনতাই করে আসছিল।
চট্টগ্রাম মহানগরীর পাহাড়তলী থানাধীন ১২ কোয়ার্টার এলাকা হতে ডাকাতির প্রস্তুতি কালে কিশোর গ্যাংয়ের “সাজ্জাদ গ্রুপ” এর সক্রিয় ৭জন সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা পরষ্পর যোগসাজশে ডাকাতির উদ্দেশ্যে বর্ণিত এলাকায় একত্রিত হয়েছিল। জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায় চক্রটি চট্টগ্রাম মহানগরীর পাহাড়তলী এলাকাসহ শহরের অন্যান্য এলাকায় দীর্ঘদিন যাবৎ ডাকাতি ও ছিনতাই করে আসছে। এছাড়াও প্রাত্যহিক চলাচলরত সাধারণ পথচারী, পোশাক শ্রমিক, ভ্রাম্যমাণ দোকানসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষদের দেশীয় অস্ত্রের মুখে ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে মূল্যবান জিনিসপত্র, স্বর্ণালংকার, মোবাইল ফোন ও নগদ টাকা ছিনাতাই এর উদ্দেশ্যে বর্ণিত এলাকায় একত্রিত হয় মর্মে স্বীকার করে।
চট্টগ্রাম মহানগরীর পাহাড়তলী থানাধীন সরাইপাড়া এলাকা থেকে ডাকাতির প্রস্তুতি কালে কিশোর গ্যাংয়ের “সাকিব গ্রুপ” এর গ্রুপ প্রধান-সহ সক্রিয় ৬ জন’কে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা পরষ্পর একে অন্যের সাথে যোগসাজশে ডাকাতির উদ্দেশ্যে সমবেত হয়ে পাহাড়তলী থানা এলাকাসহ চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন এলাকায় দীর্ঘদিন যাবৎ ডাকাতি ও ছিনতাই করে আসছে। এছাড়াও প্রাত্যহিক চলাচলরত সাধারণ পথচারী, পোশাক শ্রমিক, ভ্রাম্যমাণ দোকানসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষদের দেশীয় অস্ত্রের মুখে ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে মূল্যবান জিনিসপত্র, স্বর্ণালংকার, মোবাইল ফোন ও নগদ টাকা ছিনাতাই এর উদ্দেশ্যে বর্ণিত এলাকায় একত্রিত হয় মর্মে স্বীকার করে।
চট্টগ্রাম মহানগরীর ডবলমুরিং থানাধীন পাহাড়তলী সরাইপাড়া এলাকা হতে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে কিশোর গ্যাংয়ের “বিপুল গ্রুপ” এর গ্রুপ প্রধান-সহ সংক্রিয় ৪জন’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা পরষ্পর একে অন্যের সাথে যোগসাজশে ডাকাতির উদ্দেশ্যে সমবেত হয়ে ডবলমুরিং থানা এলাকাসহ চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন এলাকায় দীর্ঘদিন যাবৎ ডাকাতি ও ছিনতাই করে আসছে। এছাড়াও প্রাত্যহিক চলাচলরত সাধারণ পথচারী, পোশাক শ্রমিক, ভ্রাম্যমাণ দোকানসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষদের দেশীয় অস্ত্রের মুখে ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে মূল্যবান জিনিসপত্র, স্বর্ণালংকার, মোবাইল ফোন ও নগদ টাকা ছিনাতাই এর উদ্দেশ্যে বর্ণিত এলাকায় একত্রিত হয় মর্মে স্বীকার করে।
সিডিএমএস পর্যালোচনা করে গ্রেফতারকৃত ৩৩ জন কিশোর গ্যাং সদস্যদের মধ্যে ৫ জনের নামে চট্টগ্রাম মহানগরীর বিভিন্ন থানায় চাঁদাবাজি এবং ডাকাতির সর্বমোট ৮টি মামলার তথ্য পাওয়া যায়।
গ্রেফতারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের শেষে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।