২৭ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার, ০৪:৪৭:২২ অপরাহ্ন


রোজা ভেঙে গেলে বাকি সময় যেভাবে কাটাবেন
ধর্ম ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৮-০৩-২০২৪
রোজা ভেঙে গেলে বাকি সময় যেভাবে কাটাবেন প্রতিকী ছবি


রমজানের রোজা ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ ফরজ ইবাদত। রমজানের দিনগুলোতে একজন মুসলিমের ওপর একসঙ্গে ইসলামের তিনটি ফরজ বিধান অর্থাৎ, ঈমান, নামাজ ও রোজা পালন করা ফরজ।

কোরআনে রোজার বিধান: আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেছেন, হে মুমিনগণ, তোমাদের উপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেভাবে ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর। যাতে তোমরা তাকওয়া অবলম্বন কর। (সূরা বাকারা, আয়াত, ১৮৩)

রোজা রেখে অহেতুক কাজ উচিত নয়: রোজাকে ত্রুটি-বিচ্যুতি থেকে মু্ক্ত রাখা জরুরি। এ কারণে রোজা রেখে যেকোনো ধরনের অহেতুক ও অশ্লীল কাজ থেকে বিরত থাকা জরুরি। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রোজা রেখেও অশ্লীল কাজ ও পাপাচার ত্যাগ করতে পারল না, তার পানাহার ত্যাগ করার কোনো মূল্য নেই।’ (বুখারি, হাদিস, ৬০৫৭, ইবনে মাজাহ, হাদিস, ১৬৮৯)

রোজা না রাখার শাস্তি: রোজার দিনে ইচ্ছাকৃতভাবে বা অবহেলা করে রোজা ভাঙা উচিত নয়। যে ব্যক্তি এমনটি করবে তার জন্য যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়েছে হাদিসে। 

এ বিষয়ে হজরত আবু উমামা রা. বলেন, আমি নবীজি সা.-কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, ‘একবার আমি ঘুমিয়ে ছিলাম। এমন সময় দুজন ব্যক্তি এসে আমার দুবাহু ধরে দুর্গম পাহাড়ের কাছে নিয়ে গেলেন। তারপর তারা বললেন, পাহাড়ে উঠুন। আমি বললাম, আমার পক্ষে সম্ভব নয়। তারা বললেন, আমরা আপনার জন্য সহজ করে দিচ্ছি। তখন আমি ওঠা শুরু করি এবং পাহাড়ের চূড়ায় পৌঁছি। সেখানে প্রচণ্ড চিৎকারের শুনতে পাই।

আমি জিজ্ঞেস করলাম, এটা কিসের আওয়াজ? তারা বললেন, জাহান্নামিদের আওয়াজ। এরপর তারা আমাকে এমন কিছু লোকদের কাছে নিয়ে গেলেন, যাদেরকে পায়ের টাখনুতে বেঁধে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। তাদের গাল ক্ষতবিক্ষত, তা থেকে রক্ত গড়িয়ে পড়ছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এরা কারা? তারা বললেন, এরা এমন রোজাদার, যারা (অকারণে রমজান মাসের) রোজা শেষ না করেই ভাঙতো।’ (সহিহ ইবনে খুযাইমা : ১৫০৯)

তবে কোনো ব্যক্তি যৌক্তিক কোনো কারণে রোজা ভাঙতে বাধ্য হলে তার জন্য ইসলামি শরীয়তে পরবর্তীতে কাজা করার বিধান দেওয়া হয়েছে।

শরীয়ত সম্মত কারণে কোনো মুসলমানের রোজা ভেঙে গেলে তিনি দিনের বাকি অংশটি কীভাবে কাটাবেন? এ বিষয়ে রাজধানীর জামিয়া ইউসুফ বানুরীর মুহতামিম ও মাহমুদ নগর জামে মসজিদের খতিব মুফতি আতাউল করিম মাকসুদ বলেছেন—

কোনো ব্যক্তি শরীয়ত সম্মত কোনো কারণে দিনের প্রথম, মধ্য বা যেকোনো অংশে রোজা ভাঙতে বাধ্য হলে দিনের বাকি অংশ তিনি রোজাদারদের মতো করে কাটাবেন। অর্থাৎ, রোজাদাররা যেভাবে না খেয়ে থাকেন তিনিও তাদের মতো করে না খেয়ে এবং অন্যান্য সব আমলে রোজাদারের সাদৃশ্য অবলম্বন করবেন।

এমন ব্যক্তির একান্ত খাবারের প্রয়োজন হলে তিনি রোজাদারদের চোখের আড়ালে গোপন জায়গায় খাবেন।

তিনি বলেন, দুপুর বেলা কোনো ব্যক্তি ইসলাম গ্রহণ করলে তার ওপর এরপর থেকে রোজা ফরজ। কিন্তু যেহেতু দিনের প্রথম অংশ এই ব্যক্তি অমুসলিম হিসেবে কাটিয়েছে তাই তিনি তখন খাওয়া-দাওয়া করলেও দিনের বাকি অংশে রোজাদারের মতো না খেয়ে থাকবেন।

এছাড়াও রোজা শুরুর পর কোনো নারীর পিরিয়ড শুরু হলে তার জন্যও দিনের বাকি অংশ রোজাদারদের মতো না খেয়ে থাকা উচিত বলে জানিয়েছেন।