বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে লড়াই করার দিন ফুরিয়ে যায়নি। স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি আজও সক্রিয়। লাখো শহিদের আত্মত্যাগের জন্য আজকে আমরা স্বাধীনতা দিবস পালন করছি। স্বাধীনতা রক্ষা ও এর চেতনা বাস্তবায়নের জন্য আবারও যদি জীবন দিতে হয়; তাহলে আমরা জীবন দিতে প্রস্তুত। আজকে আনন্দ উদযাপনের দিন নয়, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় নতুন করে শপথ নেয়ার দিন।
শনিবার সকালে শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামান সরকারি ডিগ্রি কলেজের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে কলেজটি এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এতে ওই কলেজের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে রাজশাহী-২ আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি আজও দেশের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে। রাজাকাররা আজও সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে। মাঝে মধ্যেই সাম্প্রদায়িক শক্তি জামায়াত-শিবির রাস্তায় মিছিল করে। গোলাম আজমের জানাজা স্বাধীন বাংলাদেশে হওয়ার কথা ছিল না; কিন্তু হয়েছে। আজ সেই দেশে দাঁড়িয়ে তাদের বিরুদ্ধে আমাদের শপথ নিতে হবে। সামনে যারা শিক্ষার্থীরা আছেন, আপনারা হলেন নতুন মুক্তিযোদ্ধা। আশা করি, আপনারা নতুন মুক্তিযোদ্ধার দায়িত্ব পালন করবেন।
রাকসুর সাবেক এই ভিপি আরও বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু জন্ম না নিলে এ দেশ আমরা পেতাম না। তার জন্যই বাংলাদেশ আজ পরাধীনতার শিকল থেকে মুক্ত। এ বিষয়ে যদি কারো দ্বিধা থাকে তবে তার এই দেশে থাকার অধিকার নেই। মহান মুক্তিযুদ্ধ যখন শুরু হয়, তখন আমি কলেজপড়ুয়া ছাত্র। বন্দুক হাতে যুদ্ধে যাওয়ার সৌভাগ্য ও সাহস আমার হয়েছিল। সে সাহস আজও আমার আছে। সেই সাহস নিয়েই মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে রক্ষা ও বাস্তবায়ন করার জন্য কাজ করে যাচ্ছি।
শিক্ষার্থীদের দেশের সংবিধান পড়ার পরামর্শ দিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির এই সিনিয়ির সদস্য বলেন, বঙ্গবন্ধু সংসদে যেদিন বাহাত্তরের সংবিধান পাশ করেন- সেদিন বলেছিলেন, ‘সংবিধানে লিপিবদ্ধ থাকা চার মূলনীতি আমার জীবিত অবস্থায় বাস্তবায়িত না হলেও মুত্যুর পরেও যদি বাস্তবায়িত হয়, তবে আমার আত্মা শান্তি পাবে।’ তাই বলি, তোমরা অবশ্যই দেশের সংবিধান পরবে। চার মূলনীতি সম্পর্কে জানবে। এটি জানলে তোমার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার কারণ, আদর্শ ও দর্শন সম্পর্কে জানতে পারবে।
শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামান সরকারি ডিগ্রি কলেজের আগের অবস্থার স্মৃতিচারণ করে সাংসদ বাদশা বলেন, প্রথম যেদিন এই কলেজের সভাপতি হিসেবে আসি; সেদিন এ কলেজের মাথার ওপরে টিন ছিল। টিনের নিচেই গভর্নিং কমিটির মিটিংয়ে স্বপ্ন দেখতাম, কবে এটি এমপিওভুক্ত হবে, কবে সরকারিকরণ হবে, কবে একটি ভালো ভবন হবে। আজকে আমরা আনন্দিত- কলেজটি সবকিছুই পেয়েছে। আমি যদি সাংসদ না হতাম, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যদি আমাকে স্নেহ না করতেন, তবে বোধ হয় এটি সম্ভব হতো না।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামান সরকারি ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুল খালেক শান্ত। বক্তব্য দেন, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা, রাজশাহী অঞ্চলের উপ-পরিচালক (কলেজ) মাহবুবুর রহমান শাহ, কলেজের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।