রাজশাহীর তানোর উপজেলা পরিষদের শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে ফেরার পথে দুর্বৃত্তের হামলায় সাবেক ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা জিয়াউর রহমান (৪২) নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত ১টার দিকে তানোর উপজেলার বিলশহর এলাকা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত যুবলীগ নেতা জিয়াউর তালন্দ ইউনিয়ন পরিষদের বিলশহর এলাকার মৃত মোহর মন্ডলের ছেলে। এছাড়া তিনি ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সদস্য। এই ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। তারা হলেন, তালান্দু ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাসান আলীর স্ত্রী আয়েশা আক্তার সুমি (৩৫), একই এলাকার লুৎফর রহমানের ছেলে ফরহাদ হোসেন (৩০), আলাউদ্দিনের ছেলে সোহাগ (২৬)। ঘটনার পরে এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
তবে পুলিশ বলছে, এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নেওয়া হয়। পরে মরদেহের ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়।
জানা যায়, ২১ ফেব্রুয়ারীর রাতে তানোর উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরে এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী শহীদ মিনারে ফুল দিতে আসবেন শুনে বাড়ি থেকে উপজেলা পরিষদ চত্বরে আসেন তিনি। পরে ফুল দেওয়া শেষ করে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হলেও ফিরেনি। তবে রাত ১টার দিকে তাঁর নিজ গ্রামের প্রবেশ মুখে রাস্তার পাশে দুই হাত-পা বাঁধা এবং রগ ও গলা কাটা মৃত অবস্থায় দেখতে পায় স্থানীয়রা।
স্থানীয়রা জানান, নিহত জিয়ারুল সদ্য সমাপ্ত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী গোলাম রাব্বানীর পক্ষে তলেতলে কাজ করেছেন। তবে নির্বাচনে ওমর ফারুক চৌধুরী এমপি হিসেবে পুনরায় জয়লাভ করলে ওই ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি সদস্য হাসান আলীসহ তাঁর অনুসারীদের সঙ্গে সংঘাত হয়। সম্প্রতি হাসান মেম্বারের কীটনাশক দোকান রাতের আধারে পুড়িয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনা দুই পক্ষের মধ্যে আরও রেষারেষির সৃষ্টি হয়েছিল।
নিহত জিয়াউরের বড়ভাই রবিউল ইসলাম জানান, তার ভাইকে হত্যার জন্য তাদের বাড়িতে হামলা চালানো হয়েছিল। তারা শত্রুতার জের ধরে তার ভাইকে হত্যা করেছে। তিনি আসামিদের গ্রেপ্তারসহ সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি করেন।
এ বিষয়ে তানোর থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আনোয়ার হোসেন বলেন, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এখনো মামলা হয়নি, তবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে আটক করে থানায় আনা হয়েছে। এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।