আল্লাহর নির্দেশিত পথে না চলাই অন্যায় ও গুনাহ। অন্যায় থেকে ফিরতে প্রয়োজন তাওবাহ আর গুনাহ থেকে মুক্তির জন্য ক্ষমা প্রার্থনার বিকল্প নেই। গুনাহ ও অন্যায়মুক্ত জীবনের জন্য কোরআন-সুন্নায় রয়েছে অনেক দিকনির্দেশনা। এসব দিকনির্দেশনা অনুযায়ী বান্দা তাওবাহ ও ইসতেগফার করলে আল্লাহ খুবই খুশি হন। হাদিসের একাধিক বর্ণনায় রয়েছে এসব সুখবর।
আল্লাহ তাআলা তাওবার নির্দেশ দিয়ে বলেন-
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا تُوۡبُوۡۤا اِلَی اللّٰهِ تَوۡبَۃً نَّصُوۡحًا ؕ عَسٰی رَبُّکُمۡ اَنۡ یُّکَفِّرَ عَنۡکُمۡ سَیِّاٰتِکُمۡ وَ یُدۡخِلَکُمۡ جَنّٰتٍ تَجۡرِیۡ مِنۡ تَحۡتِهَا الۡاَنۡهٰرُ ۙ یَوۡمَ لَا یُخۡزِی اللّٰهُ النَّبِیَّ وَ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا مَعَهٗ ۚ نُوۡرُهُمۡ یَسۡعٰی بَیۡنَ اَیۡدِیۡهِمۡ وَ بِاَیۡمَانِهِمۡ یَقُوۡلُوۡنَ رَبَّنَاۤ اَتۡمِمۡ لَنَا نُوۡرَنَا وَ اغۡفِرۡ لَنَا ۚ اِنَّکَ عَلٰی کُلِّ شَیۡءٍ قَدِیۡرٌ
‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহর কাছে তাওবা কর, খাঁটি তাওবা; আশা করা যায় তোমাদের রব তোমাদের পাপসমূহ মোচন করবেন এবং (খুশি হয়ে) তোমাদের এমন জান্নাতসমূহে প্রবেশ করাবেন; যার পাদদেশে নহরসমূহ প্রবাহিত। নবি ও তার সঙ্গে যারা ঈমান এনেছে তাদেরকে সেদিন আল্লাহ লাঞ্ছিত করবেন না। তাদের আলো তাদের সামনে ও ডানে ধাবিত হবে। তারা বলবে, ‘হে আমাদের রব, আমাদের জন্য আমাদের আলো পূর্ণ করে দিন এবং আমাদেরকে ক্ষমা করুন; নিশ্চয় আপনি সর্ববিষয়ে সর্বক্ষমতাবান।’ (সুরা তাহরিম : আয়াত ৮)
বান্দা যখন অন্যায় ও গুনাহের কাজ করার পর আল্লাহর দিকে ফিরে আসতে তাওবাহ করে এবং ক্ষমা প্রার্থনা করে তখন মহান আল্লাহ খুবই খুশি হন। নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এভাবে খুশির ধরণ তুলে ধরেন-
হজরত আনাস ইবনে মালিক রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দার তাওবায় সেই ব্যক্তির চেয়েও বেশি খুশি হন, যার উট গভীর মরুভূমিতে হারিয়ে যাওয়ার পর আবার সে তা ফিরে পায়। (বুখারি ও মুসলিম)
বান্দার প্রতি আল্লাহর খুশির আরো একটি চমৎকার ধরণ হাদিসের অন্য বর্ণনায় এসেছে-
‘আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দার তাওবায় সেই ব্যক্তির চেয়েও বেশি খুশি হন, যার খাবার পানীয় সামগ্রী নিয়ে সাওয়ারী উটটি হঠাৎ গভীর মরুভূমিতে হারিয়ে গেল। অনেক খোঁজাখুঁজির পর হতাশ হয়ে লোকটি একটি গাছের ছায়ায় শুয়ে পড়ল। এরূপ অবস্থায় হঠাৎ সে (ঘুম থেকে চোখ মেলে দেখলো) উটটিকে নিজের কাছে দাঁড়ানো। সে উটের লাগাম ধরে আনন্দে উৎফুল্ল হয়ে বলতে লাগলো-
‘হে আল্লাহ! তুমি আমার বান্দাহ! আর আমি তোমার প্রভু! সে আনন্দে অতিশয্যেই এ ধরনের ভুল করে বসলো। (মুসলিম)
হাদিস দুটি থেকে বুঝা যায়, তাওবাহ আল্লাহর কাছে সবচেয়ে বেশি প্রিয়। তিনি বান্দার তাওবায় খুব বেশি খুশি হন। বান্দার গুনাহ ক্ষমা করে দেন। আর যে বান্দার প্রতি আল্লাহ সন্তুষ্ট হয়ে যান; তার জন্যই দুনিয়া ও পরকালের সব সফলতা।
সুতরাং মুমিন বান্দার উচিত, আল্লাহর কাছে সব অন্যায় ও গুনাহের জন্য বেশি বেশি তাওবাহ ও ক্ষমা প্রার্থনা করা। হাদিসের ওপর যথাযথ আমল করা।
আল্লাহ তাআলা উম্মাতে মুসলিমাকে তাওবা ও ক্ষমা-প্রার্থনার মাধ্যমে তার সন্তুষ্টি অর্জন করার তাওফিক দান করুন। সবার জন্য তাওবাহ ও ক্ষমা-প্রার্থনার সৌভাগ্য নসিব করুন। আমিন।
রাজশাহীর সময় / এফ কে