আর দিনকয়েকের মধ্যেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের দুবছর পূর্ণ হতে চলেছে। এখনও নিষ্পত্তি হয়নি সেই লড়াইয়ের। প্রকাশ্যে এসেছে যুদ্ধের ভয়াবহ সব দৃশ্য। এই পরিস্থিতিতে সামনে এল এই যুদ্ধে ভাড়াটে সেনা হিসেবে নেপালি সেনাদের অংশগ্রহণের করুণ ছবিও। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সিএনএনের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে বিষয়টি।
জানা যাচ্ছে, অন্তত ১৫ হাজার নেপালি যোদ্ধা যোগ দিয়েছেন রাশিয়ার হয়ে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে। সেই যুদ্ধ থেকে অনেকেই ফিরেছেন ভয়ংকর ট্রমায় আচ্ছন্ন হয়ে। আর অনেকেই হয়তো আর কখনও ফিরতে পারবেন না সেদেশ থেকে! রামচন্দ্র খড়কা নামের এক নেপালি সেনাকর্মী, যিনি রুশ বাহিনীর হয়ে কিয়েভের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন, তিনি সদ্য ফিরেছেন কাঠমান্ডুতে। নিজের অভিজ্ঞতার বলতে গিয়ে এখনও শিউরে উঠছেন তিনি। জানাচ্ছেন, যুদ্ধের দৃশ্যগুলি মনে করলেই এখনও আতঙ্কে ভরে উঠছে তাঁর মন। অথচ গত শতকের নয়ের দশকের মাঝামাঝি সময়ে মাওবাদীদের হয়ে নেপালের সরকারি সেনার বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন তিনি। পরে আফগানিস্তানে গিয়ে ন্যাটোর ভাড়াটে সেনা হয়েও যুদ্ধ করেন। কিন্তু এবার রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধে নেমে যে অভিজ্ঞতা হয়েছে, তা আগের সব অভিজ্ঞতার তুলনায় অনেক বেশি ভয়াবহ বলেই দাবি রামচন্দ্রের।
গত সেপ্টেম্বরে মস্কোয় পৌঁছনোর পর মাত্র দুসপ্তাহের মধ্যেই তাঁকে যেতে হয়েছিল ফ্রন্টলাইনে! পূর্ব ইউক্রেনের বাখমুটে যুদ্ধে গিয়ে তিনি দেখেছিলেন কীভাবে বোমার আঘাতে সেখানকার সর্বত্র ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছে। গাছপালা, ঝোপঝাড় সবই ধূলিধূসরিত। ”পরিস্থিতি এমনই ভয়াবহ, আপনার কাঁদতে ইচ্ছা করবে”, বলছেন রামচন্দ্র।
প্রসঙ্গত, যদিও নেপাল প্রশাসনের দাবি, এখনও পর্যন্ত শ দুয়েক নেপালি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন রাশিয়ার হয়ে। তাঁদের মধ্যে ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু মানবাধিকার সংগঠনগুলির দাবি, আসল সংখ্যাটা এর থেকে অনেক বেশি। অন্তত ১৪ থেকে ১৫ হাজার নেপালি সেখানে যুদ্ধ করতে গিয়েছে। যদিও এবিষয়ে মুখ খুলতে রাজি হয়নি রুশ সেনা।