গাজায় ইসরায়েলি হামলাকে 'বেপরোয়া' বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এমন সময় তিনি এ মন্তব্য করলেন যখন গাজায় নিহতের সংখ্যা প্রায় ২৮ হাজারে পৌঁছেছে এবং বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবিরে পরিণত হওয়া রাফাহতে স্থল অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরায়েল।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, "আমি মনে করি, যেমনটা আপনারা জানেন, গাজায় ইসরায়েলের পাল্টা হামলার ধরন মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। সেখানে অনেক নিরীহ মানুষ অনাহারে থাকছে, প্রাণ হারাচ্ছে। এ হামলা বন্ধ করা উচিত।"
চলমান এ যুদ্ধে বর্ধিত বিরতিতে সম্মত হওয়ার জন্য ইসরায়েল এবং হামাসকে চাপ দেওয়ার জন্য 'অক্লান্তভাবে' কাজ করে যাচ্ছেন তিনি।
বুধবার গাজায় একটি বর্ধিত যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে হামাসের দেওয়া শর্তগুলো প্রত্যাখ্যান করেছিলেন নেতানিয়াহু। সেগুলোকে বিভ্রান্তিকর বলে মন্তব্য করেন তিনি। তখন চুক্তির পরিবর্তে 'পূর্ণ বিজয়' না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এর পরই রাফাতে হামলার ঘটনাটি ঘটেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রয়োজনীয় সমর্থন জোগাড়ে রাজনৈতিক চাপের মধ্যে রয়েছেন বাইডেন। গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসনকে সমর্থনের জন্য ইতোমধ্যেই অনেকেরই রোষানলে পড়েছেন তিনি। তাই আরব-আমেরিকান সম্প্রদায়ের মতো দেশটির অন্যান্যদের কাছে নিজের গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে এখন অনেকটাই সচেতন বাইডেন।
মিসরের সঙ্গে বেশিরভাগ সিল করা সীমান্তবর্তী একটি শহর রাফা। সেখানে গাজা উপত্যকার অর্ধেকেরও বেশি বাসিন্দা পালিয়ে গেছে। গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর প্রধান প্রবেশদ্বারও এটি। মিসর সতর্ক করে বলেছে, সেখানে যেকোনো ধরনের স্থল অভিযান বা সীমান্ত জুড়ে ব্যাপক বাস্তুচ্যুতি ইসরায়েলের সঙ্গে দেশটির ৪০ বছর পুরনো শান্তি চুক্তিকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে হামাসের হামলায় অন্তত এক হাজার ২০০ ইসরায়েলি নিহত হন। তাদের প্রায় সবাই বেসামরিক লোক। তখন আনুমানিক ২৫০ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যায় সশস্ত্র যোদ্ধারা। এ হামলার প্রতিক্রিয়ায় গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে পাল্টা হামলা শুরু করে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
গাজার স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের মতে, ইসরায়েলি সেনাদের হাতে অঞ্চলটিতে এখন পর্যন্ত ২৭ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তাদের দুই-তৃতীয়াংশই নারী ও শিশু।