২৮ নভেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ০২:৪৬:১০ অপরাহ্ন


রাজশাহীর সংরক্ষিত আসনের জন্য ৬ নারী নেত্রীর দৌড়ঝাঁপ
মঈন উদ্দিন:
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৯-০২-২০২৪
রাজশাহীর সংরক্ষিত আসনের জন্য ৬ নারী নেত্রীর দৌড়ঝাঁপ রাজশাহীর সংরক্ষিত আসনের জন্য ৬ নারী নেত্রীর দৌড়ঝাঁপ


দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর এতে নির্বাচিতদের (এমপি) বেশিরভাগেরই শপথ হয়ে গেছে। নতুন মন্ত্রিসভাও শপথ নিয়ে কাজ শুরু করে ফেলেছে। এরমধ্যে শুরু হয়েছে সংরক্ষিত নারী আসনে নির্বাচনের প্রস্তুতি। সরকার গঠনের ডামাডোলে সরব হয়ে উঠেছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। আইন অনুযায়ী, সংসদ নির্বাচনের ভোটের ফলাফল গেজেট আকারে প্রকাশের পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে সংরক্ষিত নারী আসনের নির্বাচনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তাই কমিশনের অনুমোদন পেলে চলতি সপ্তাহে সংরক্ষিত নারী আসনের ভোটের তারিখ ঘোষণা করা হতে পারে বলে জানাগেছে। 

এদিকে, সংরক্ষিত আসনে রাজশাহী থেকে কে হচ্ছেন নারী সংসদ সদস্য তা নিয়ে এখনই কুঁড়ি থেকে শাখা-প্রশাখায় মেলছে নানান জল্পনা-কল্পনা। নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের পরপরই সম্ভাব্য নারী সংসদ সদস্য প্রার্থীদের নজর এখন সেদিকেই। বিষয়টি নিয়ে দেন-দরবারের জন্য ইতোমধ্যে ঢাকায় অস্থান করছেন অনেকে।

রাজশাহী থেকে সংরক্ষিত আসনে সংসদ সদস্য হিসেবে মনোনয়নের জন্য এবার অন্যান্যবারের চেয়ে বেশ কয়েকজন নারী দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। তারা হলেন- রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি শাহীন আক্তার রেনী ও একই কমিটির সহ-সভাপাতি নিঘাত পারভীন, সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য আদিবা আনজুম মিতা, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মর্জিনা পারভীন, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নাসরিন আক্তার মিতা, সহ-সভাপতি রোকসানা মেহবুবা চপলা, সাবেক মহানগর মহিলা লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ইফফাত আরা কামাল।

সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে এবার সবচেয়ে বেশী আলোচনায় রয়েছে, মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি শাহীন আক্তার রেনী। তিনি রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র  এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটনের সহধর্মিনী। স্বামীর সঙ্গে সমানতালে দলের হাল ধরায় এরই মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন। বিশেষ করে সংগঠনে নারী অবস্থান নিশ্চিতকরণ ও নারীদের সংগঠিত করার পেছনে তার অবদান রয়েছে বলে মনে করেন নেতাকর্মীরাও।

১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন জিনাতুন নেছা তালুকদার। পরে তিনি সরকারের মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী হন।  এরপর ২০০৮ সালে আবার আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে দ্বিতীয়বারের মত সংসদ সদস্য হন জিনাতুন নেছা। তবে ২০১৪ সালে তৃতীয় দফায় আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের সময় রাজশাহী থেকে সংরক্ষিত আসনে সেবার নতুন মুখ হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি বেগম আখতার জাহান। এবারও তাই দলীয় মনোনয়ন চাইবেন রাজশাহীর এই নারী নেত্রী।

অপর সম্ভাব্য প্রার্থী হলেন- মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নিঘাত পারভীন। আওয়ামী লীগের প্রয়াত নেতা জাহাঙ্গীর আলম হারানের সহধর্মিনী তিনি। সক্রিয় রাজনীতির পাশাপাশি তিনিও বিশিষ্ট সমাজসেবী হিসেবে পরিচিত।  

২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় নির্বাচনে সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য হন যুব মহিলা লীগের তৎকালীন সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আদিবা আনজুম মিতা। অনেকটা চমক দিয়ে তিনি এই আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। কিন্তু তার জনপ্রিতা ও ধারাবাহিকতা ধরে রাখকে পারেননি বলে স্থানীয় আওয়ামী লীগের অভিযোগ। তাই অনেকের ধারণা এবার এই আসনে আসছেন নতুন কোনো মুখ।

সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী রোকসানা মেহবুবা চপলা বলেন, আমি ও আমার পরিবার দীর্ঘদিন থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। ছাত্রলীগ থেকে শুরু হয়ে এখন আমি জেলা কমিটির সদস্য পদে আছি। আশা করছি, দল আমাকে নিরাশ করবে না।

জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মর্জিনা পারভীন বলেন, আমি ১৯৯৫ সাল থেকে মহিলা আওয়ামী লীগকে নেতৃত্ব দিচ্ছি। বর্তমান যারা আছে তাদের চেয়ে আমি অনেক সিনিয়র। সংরক্ষিত আসনের জন্য আমি দাবি করতেই পারি। দলীয় সভানেত্রী ও ৫ বারের সফল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যদি চান তা হলে আমি অবশ্যই এই আসনের এমপি হব।

বর্তমান সংসদ সদস্য ও মহিলা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আদিবা আনজুম মিতা বলেন, এই আসনের গত টার্মের সংসদ সদস্য ছিলাম। দরিদ্র মানুষদের সহযোগিতা করেছি। আশা করছি, আমি আবারও এই পদে আসব। নেত্রীর প্রতি আমার আস্থা ও ভরসা আছে।

বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও রাজশাহী মহানগর সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইফফাত আরা কামাল বলেন, আমি দীর্ঘদিন থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। যদি দল ও নেত্রী আমাকে চান তা হলে অবশ্যই সংরিক্ষত আসনের সংসদ সদস্য হব। 

জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাসরিন আক্তার মিতা বলেন, এর আগে দলের কাছে কিছু চাইনি। এবার সংরক্ষিত আসন চাইব। নেত্রী যাকে যোগ্য মনে করবেন তাকেই সংসদ সদস্য বানাবেন। তবে আমিও আশাবাদী।

রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল বলেন, কে প্রার্থী হচ্ছে না হচ্ছে আমি তা জানি না। নেত্রী যা ভালো বুঝবেন তাই করবেন। রাজশাহীতে কতগুলো প্রার্থী আছেন সেটাও আমার অজানা। তাই এ বিষয়ে আমার কোনো মতামত নেই।