জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেতে যাচ্ছে রাজশাহীর মিষ্টি পান। এমন খবরে অনন্দের জোয়ার বইছে জেলার সবচেয়ে বেশি পান উৎপাদন হওয়া বাগমারা ও মোহনপুর উপজেলায়। উৎপাদন ও বিক্রি ব্যবস্থা ভালো হওয়ায় চাষিদের কাছে এটি অর্থকরী ফসলে রূপ নিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টার দিকে রাজশাহী জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। সর্বশেষ নাটোরের জেলা প্রশাসক থাকাকালীন শামীম আহমেদ নাটোরের কাঁচাগোল্লা জিআই পণ্যের স্বীকৃতি এনে দিয়েছিলেন।
জানা গেছে, ২০২৩ সালের ৩০ আগস্ট রাজশাহী জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ রাজশাহীর কৃষকের প্রধান অর্থকরী ফসল মিষ্টি পানের জিআই নিবন্ধন চেয়ে শিল্প মন্ত্রণালয়ের পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তরে (ডিপিডিটি) আবেদন করেছিলে। আবেদনের ছয় মাসের মাথায় মিলেছে জিআই পণ্যের স্বীকৃতি।
বৃহস্পতিবার টাঙ্গাইলের শাড়ি ছাড়াও গোপালগঞ্জের রসগোল্লা, রাজশাহীর মিষ্টি পান, যশোরের খেজুর গুড় ও নরসিংদীর কলা ও লটকনকে জিআই পণ্যের স্বীকৃতিতে গেজেট আকারে প্রকাশের কথা রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সারাদেশে ১৭টি পণ্যের জিআই স্বীকৃতি রয়েছে। বিভাগ হিসেবে ধরতে গেলে রাজশাহী এগিয়ে। এই বিভাগের সাতটি পণ্য পেয়েছে জিআই স্বীকৃতি। রাজশাহী সিল্ক ছাড়া বাকি ছয়টি খাদ্য পণ্য। এর মধ্যে রয়েছে চার জাতের আম ছাড়াও বগুড়ার দই ও নাটোরের কাঁচাগোল্লা।
জিআই পণ্যের তালিকায় থাকা রাজশাহী-চাঁপাইয়ের ফজলি, ল্যাংড়া, খিরসাপাত, আশ্বিনা আম। এছাড়া বগুড়ার দই এবং নাটোরের কাঁচাগোল্লা। আর সর্বশেষ জিআই পণ্যের তালিকায় যুক্ত হচ্ছে রাজশাহীর মিষ্টি পান। এই মিষ্টি পানের দেশের গ-ি পেরিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে রয়েছে সুখ্যাতি।
মোহনপুর উপজেলার জাহানাবাদ ইউনিয়নের কইকিড়ি এলাকার পান চাষি রায়হানুল হক বলেন, রাজশাহীর মিষ্টি পান জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেল এটা আমাদের কাছে গর্বের ও খুশির বিষয়। জিআই পণ্যের স্বীকৃতির মধ্যে দিয়ে সারাবিশ্ব চিনবে বাংলাদেশের পানকে। রাজশাহী জেলার সবচেয়ে বেশি পান উৎপাদন হয় বাগমারা ও মোহনপুর উপজেলায়। উৎপাদন ও বিক্রি ব্যবস্থা ভালো হওয়ায় চাষিদের কাছে পান অর্থকারী ফসল।
পান ব্যবসায়ী আশরাফুল ইসলাম বলেন, এখন সারা বিশ্বের মানুষ রাজশাহীর পান চিনবে। রাজশাহীর পান ব্যান্ডিং হলো বিশ্বব্যাপী। এখন থেকে চাহিদা বাড়বে রাজশাহীর পানের। ফলে বিক্রি ভালো হবে। এতে করে অতিতের যেকোনো সময়ের যেয়ে ভালো দাম পাবে চাষি ও ব্যবসায়িরা।
রাজশাহী জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ বলেন, রাজশাহীর মিষ্টিপান জিআই পাবে এটা তো আগেই নির্ধারণ হয়েছে। নির্বাচনের কারণে ব্যালট ছাপনোর ভিড়ে গেজেট হতে একটু দেরি হয়েছে। তবে আসা করি দুই এক দিনের মধ্যে গেজেট হয়ে যাবে। জিআই পণ্যের জন্য সব ফর্মালিটি সম্পন্ন ছিল।
এক প্রশ্নের উত্তরে এই জেলা প্রশাসক বলেন, এটি তার চাকরি জীবনে সব চেয়ে অনেক বড় অর্জন। পাশাপাশি দুই জেলার জেলা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালনের সুবাদে নাটোরে তার হাত ধরে কাঁচাগোল্লা জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে। এবার রাজশাহীর মিষ্টি পান জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পাচ্ছে।