শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় আমরা একটি নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়নের পথে আছি। আমরা এই নতুন কারিকুলামে ক্রীড়াকে অন্যতম শিক্ষণ পদ্ধতি হিসেবে রেখেছি।
বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় রাজশাহী নগরীর মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি স্টেডিয়ামে ৫২তম শীতকালীন জাতীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী এসব কথা বলেন। উদ্বোধনী এই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি বক্তব্য দেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, মাধ্যমিক পর্যায়ে ক্রীড়া খাতে শীতকালীন জাতীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও ঐতিহ্যবাহী। অংশগ্রহণকারীর দিক থেকে এটি দেশের সর্ববৃহৎ জাতীয় প্রতিযোগিতা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার ‘স্মার্ট বাংলাদেশ : উন্নয়ন দৃশ্যমান, বাড়বে এবার কর্মসংস্থান’ এই ঘোষণা অনুযায়ী শিক্ষায় রূপান্তরের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নে স্মার্ট বাংলাদেশ, স্মার্ট প্রজন্মের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করতে হবে। সেই সঙ্গে কর্মসংস্থান সংশ্লিষ্ট সকল দক্ষতা আমরা শিক্ষা কারিকুলামে অন্তর্ভুক্ত করবো।
তিনি আরও বলেন, সারা দেশ থেকে ৫২তম শীতকালীন ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় সাত লাখ ছাত্র-ছাত্রী আলাদা আলাদা ক্যাটাগরিতে প্রতিযোগিতা করবেন। চূড়ান্ত পর্বে সকল ইভেন্টে মোট প্রতিযোগী রয়েছে ৮২৪ জন, এর মধ্যে ছাত্র ৪৪০ জন এবং ছাত্রী ৩৮৪ জন। ৫২তম শীতকালীন ক্রীড়া প্রতিযোগিতাকে চূড়ান্ত পর্বে চারটি অঞ্চলে ভাগ করা হয়েছে- চারটি ফুলের নামে। এগুলো হলো- রাজশাহী ও দিনাজপুর ‘চাঁপা’ অঞ্চল, ঢাকা ও ময়মনসিংহ ‘পদ্ম’ অঞ্চল, চট্টগ্রাম, সিলেট ও কুমিল্লা ‘বকুল’ অঞ্চল এবং খুলনা ও বরিশাল ‘গোলাপ’ অঞ্চল।
মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, কর্মসংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে যেসব দক্ষতার প্রয়োজন হয় শিক্ষা ও খেলাধুলার মাধ্যমে তা অর্জিত হবে। শিক্ষকদের শিক্ষার্থীদের খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণে উৎসাহিত করতে হবে। এতে করে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মবিশ্বাসের জন্ম হয়। এটি বাংলাদেশে অন্যতম একটি বৃহৎ প্রতিযোগিতা। বিভাগগুলোকে চারটি অঞ্চলে ভাগ করা হয়েছে। মাধ্যমিক পর্যায়ে দেশব্যাপী ফুটবল ও ক্রিকেট টুর্নামেন্টের আয়োজন করতে চাই। এই নতুন সরকারের শুভ সূচনায় প্রথম রাজধানীর বাইরে রাজশাহীতে এমন আয়োজন। প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত ব্যস্ততার মধ্যেও আমাদের সন্তানদের কথা বিবেচনায় রেখে, নতুন প্রজন্মের কথা বিবেচনায় রেখে তিনি অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে আমাদের গর্বিত করেছেন। খেলাধুলা আমাদের শিক্ষা কার্যক্রমের মধ্যে নতুন কারিকুলামে বিশাল একটা অংশে অ্যাক্টিভিটি বেইজ লার্নিং, যার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা সুফল পাবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি মো. আনিসুর রহমান, রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের পুলিশ কমিশনার বিপ্লব বিজয় তালুকদার, জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড রাজশাহীর চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মো: অলীউল আলম, রাজশাহীর পুলিশ সুপার মো. সাইফুর রহমান, রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে সচিব মো: হুমায়ুন কবির, ৫২ তম শীতকালীন জাতীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতা’র সমন্বয়কারী ড. মুহম্মদ মনিরুল হক, অফিসার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি মুঞ্জুর রহমান খান, জনসংযোগ কর্মকর্তা সুলতানা শামীমা আকতার নাইসসহ আট শতাধিক খেলোয়াড় এবং দেশের ১১টি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান, শিক্ষা অফিসার ও ক্রীড়া কর্মকর্তগণ উপস্থিত হয়েছেন।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ জাতীয় স্কুল, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা ক্রীড়া সমিতির আয়োজনে এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড রাজশাহীর ব্যবস্থাপনায় ৬ দিনব্যাপী এই ক্রীড়াযজ্ঞের সমাপনী অনুষ্ঠিত হবে ১২ ফেব্রুয়ারি। এই প্রতিযোগিতায় ছাত্র ও ছাত্রীদের জন্য আলাদা ইভেন্টে অ্যাথলেটিকস, দৌড়, বর্শা নিক্ষেপ, দীর্ঘ লাফ, চাকতি নিক্ষেপ, গোলক নিক্ষেপ, দড়িলাফ ইভেন্টসহ, হকি, ক্রিকেট, বাস্কেটবল, ভলিবল, ব্যাডমিন্টন একক ও দ্বৈত, সাইক্লিং ইভেন্টে জাতীয় স্কুল মাদরাসা, কারিগরি শিক্ষা ক্রীড়া সমিতির শীতকালীন খেলার মহারণ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। এই ৮টি ডিসিপ্লিনে সারাদেশ থেকে আট শতাধিক ছাত্র-ছাত্রী এ প্রতিযোগিতায় অংশ নিবেন। চূড়ান্ত পর্বে চারটি অঞ্চলে ভাগ করা হয়েছে- চারটি ফুলের নামে। এগুলো হলো- রাজশাহী ও দিনাজপুর ‘চাঁপা’ অঞ্চল, ঢাকা ও ময়মনসিংহ ‘পদ্ম’ অঞ্চল, চট্টগ্রাম, সিলেট ও কুমিল্লা ‘বকুল’ অঞ্চল এবং খুলনা ও বরিশাল ‘গোলাপ’ অঞ্চল।