স্ত্রী হত্যার ২৪ ঘন্টার মধ্যে রাজশাহী মহানগরীর কাটাখালীতে পাষন্ড স্বামী মোঃ রুবেল হোসেনকে (২৮) গ্রেফতার করেছে র্যাব।
সোমবার (২৯ জানুয়ারি) দিনগত রাত ১১টায় মহানগরীর কাটাখালী থানাধীন মাসকাটাদীঘি পূর্বপাড়া গ্রাম থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতার মোঃ রুবেল হোসেন (২৮), সে রাজশাহীর বাগমারা থানার বাগমারা ইউপি-গনিপুর এলাকার মৃত ওসমান আলীর ছেলে।
মঙ্গলবার (৩০) জানুয়ারি সকাল ১০টায় অধিনায়ক, র্যাব-৫, রাজশাহীর মোল্লাপাড়া ক্যাম্পের সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যমকর্মীদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে স্ত্রী হত্যাকারী রুবেল হোসেন জানায়, সে পেশায় একজন রডমিস্ত্রী ও মাদকাসক্ত। গত ৭ বছর পূর্বে পারিবারিক ভাবে মৃত ঝর্ণা আক্তার লিপিকে (২৫) বিয়ে করে। তাদের সংসার জীবনে ১টি ছেলে সন্তান রয়েছে। আসামী রুবেল তার গ্রামীণ ব্যাংক ও ব্যুরো বাংলাদেশ এনজিও থেকে বিভিন্ন অংকের ঋণ নেয়। সেই ঋণের কারনে সে হতাশাগ্রস্থ ছিল। এছাড়াও সে তার স্ত্রীকে অন্য কারও সাথে সম্পর্ক আছে বলে সন্দেহ করত সে। ফলে পারিবারিক কলহ লেগেই থাকতো। একপর্যায়ে আসামী তার স্ত্রীকে মারপিট করে বাড়ী হতে তাড়িয়ে দেয়। কয়েকদিন পরে সে তার শ্বশুরবাড়ী গিয়ে শ্বশুরবাড়ীর লোকজনের নিকট মাফ চেয়ে বলে, “আর কখনো মারপিট করবো না, একটি বারের মত আমাকে সুযোগ দিন, আমি ভাল হয়ে যাব। আসামী রুবেলের কথায় সরল বিশ্বাসে পুনরায় গৃহবধূ ঝর্ণা আক্তার লিপিকে নিয়ে নিজ বাড়ীতে আসে।
রবিবার (২৮ জানুয়ারী) দিনগত রাত সাড়ে ১১টায় তারা স্বামী-স্ত্রী নিজ শয়ন কক্ষে শুয়ে পড়ে। ওই দিনই ভোর রাত সাড়ে ৪টায় আসামী রুবেল তার মা ও বোনকে অন্য একটি ঘরে তালাবদ্ধ করে আটকে রেখে লোহার ধারালো শাবল দিয়ে গৃহবধূ লিপির গলা, বুক ও থুতনিতে আঘাত করে নৃশংসভাবে হত্যা করে পালিয়ে যায়। এরপর গৃহবধূর বড় ভাই মোঃ জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে রাজশাহীর বাগমারা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার পর র্যাব ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং কঠোর গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে। এক পর্যায়ে র্যাবের গোয়েন্দা দল জানতে পারে, আসামী রুবেল মোহনগঞ্জের কোন এক অজ্ঞাত স্থানে পালিয়ে ছিল এবং সে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার জন্য তার ভগ্নীপতির সাহায্যে রাজশাহী মহানগরীর কাটাখালিতে তার বন্ধুর বাসায় আত্মগোপনে করেছে।
অবেশেষে সোমবার (২৯ জানুয়ারি) র্যাব-৫, এর অভিযানে মহানগরীর কাটাখালী থানাধীন মাসকাটাদীঘি পূর্বপাড়া গ্রামের জনৈক দেলোয়ার হোসেনের বসতবাড়ী থেকে তাকে আটক করা হয়।
এ ঘটনায় গ্রেফতার আসামীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ শেষে মঙ্গলবার দুপুরে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।