ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে সৃষ্ট বিশ্ব সংকটের মধ্যেই এবার রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধের আগাম প্রস্তুতি নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। যার জেরে যুক্তরাজ্যে পারমাণবিক অস্ত্র স্থাপনের পরিকল্পনা করেছে। রাশিয়ার সঙ্গে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার ১৫ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটি।
শুক্রবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ জানিয়েছে, পারমাণবিক অস্ত্রগুলো সাফোকের আরএএফ লেকেনহেথে (ইংল্যান্ডের রয়েল এয়ার ফোর্স স্টেশন) স্থাপন করা হবে। পেন্টাগনের নথিপত্র যাচাই করে প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ওই স্থানে ৫০ কিলোটনের বি৬১-১২ গ্র্যাভিটি বোমা থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যার ধ্বংসাত্মক ক্ষমতা ১৯৪৫ সালে হিরোশিমায় ফেলা পারমাণবিক বোমার চেয়েও তিন গুণ বেশি। দ্য গার্ডিয়ান।
নথিগুলো থেকে জানা যায়, পেন্টাগন যুক্তরাজ্যের সামরিক ঘাঁটিটির জন্য নতুন অস্ত্রের ক্রয়াদেশ দিয়েছে। যেখানে শত্রুপক্ষের আক্রমণ থেকে সামরিক কর্মীদের রক্ষা করার জন্য ব্যালিস্টিক শিল্ডসহ নতুন বেশ কিছু সরঞ্জাম তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। সেখানে কাজ করা মার্কিন সেনাদের জন্য নতুন আবাসন ব্যবস্থা নির্মাণের কাজ আগামী জুন মাসে শুরু হবে।
যুক্তরাষ্ট্র এর আগে আরএএফ লেকেনহেথে পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপন করেছিল। পরে মস্কোর পক্ষ থেকে স্নায়ুযুদ্ধের হুমকি কমে যাওয়ায় ২০০৮ সালে সেগুলো সরিয়ে ফেলে। আবারও একই পরিকল্পনা করছে যুক্তরাষ্ট্র। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ক্রেমলিনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন ন্যাটো জোটের উত্তেজনা ক্রমেই বেড়েছে। যার প্রতিক্রিয়ায় পারমাণবিক অস্ত্র বাড়ানো এবং সেগুলোকে আরও উন্নত করার কর্মসূচি নেয় ন্যাটো। এর অংশ হিসাবেই আবারও যুক্তরাজ্যে ফিরছে যুক্তরাষ্ট্রের পরমাণু অস্ত্র।
যুক্তরাজ্যে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেছেন, প্রদত্ত স্থানে পারমাণবিক অস্ত্রের উপস্থিতি নিশ্চিত করার জন্য একটি দীর্ঘস্থায়ী যুক্তরাজ্য এবং ন্যাটো নীতি রয়েছে। সম্প্রতি আটলান্টিকের উভয় প্রান্তের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা ন্যাটো বাহিনী ও রাশিয়ার মধ্যে সম্ভাব্য যুদ্ধের ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্যকে প্রস্তুত থাকার জন্য সতর্ক করেছেন। চলতি সপ্তাহের শুরুতে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর বিদায়ি প্রধান জেনারেল স্যার প্যাট্রিক স্যান্ডার্স বলেছিলেন, সম্ভাব্য সংঘাতের জন্য আরও ভালোভাবে প্রস্তুত হতে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর ৭৪ হাজার কর্মকর্তার মধ্যে কমপক্ষে ৪৫ হাজারকে মোতায়েন রাখতে হবে। সেনাবাহিনীর আকার বেশ ছোট হওয়ায় নাগরিকদেরও যুদ্ধের জন্য ডাকা হবে।