নারায়ণগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদীতে লঞ্চডুবির ঘটনায় আরও তিনজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১১ জন। এ ঘটনায় এখনো নিখোঁজ রয়েছেন একজন।
নারায়ণগঞ্জ নৌ-থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানান, মঙ্গলবার (২২ মার্চ ) সকাল আনুমানিক ৮টার সময় মুন্সীগঞ্জের মুক্তারপুর থেকে বেসরকারি আইটি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল যুবায়ের এবং গজারিয়া থেকে তিন বছরের শিশু আরোহীর লাশ উদ্ধার হয়। লাশগুলো ভেসে উঠলে স্থানীয়রা দেখতে পেয়ে নৌপুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষকে জানায়।
পরে টহল বোট গিয়ে তাদের লাশ উদ্ধার করে। লাশ উদ্ধারের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান নিহতের স্বজনরা। তবে দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হওয়ায় উদ্ধারকারী সংস্থাগুলোর ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা।
নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস, নৌ-থানা পুলিশ ও কোস্ট গার্ড কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তালিকা অনুযায়ী আরও একজন নিখোঁজ রয়েছেন। লাশ উদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত টহল ও তল্লাশি তৎপরতা চলবে।
এদিকে দুর্ঘটনার পর থেকে শীতলক্ষ্যা নদীর কয়লাঘাট এলাকায় টানা তিন দিন ধরে নিখোঁজদের সন্ধানে আহাজারি করছেন স্বজনরা।
এর আগে গত রোববার (২০ মার্চ) রোববার দুপুরে কয়লাঘাট এলাকায় পণ্যবাহী জাহাজের ধাক্কায় ডুবে যায় যাত্রীবাহী লঞ্চ এমএল আফসারউদ্দীন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুর ২টার দিকে নারায়ণগঞ্জের কেন্দ্রীয় লঞ্চ টার্মিনাল থেকে মুন্সিগঞ্জের উদ্দেশে যাত্রা করে লঞ্চটি। কয়লারঘাট এলাকায় লঞ্চটিকে পেছন থেকে কয়েকটি ধাক্কা দেয় পণ্যবাহী একটি জাহাজ।
ফুটেজে স্পষ্টই বোঝা যায়, ছোট লঞ্চ থেকে ইশারা কিংবা আওয়াজ দিয়ে বারবার জাহাজের নাবিকের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করা হলেও সেই আর্তনাদ হয়তো পৌঁছায়নি। মুহূর্তেই শীতলক্ষ্যায় তলিয় যায় লঞ্চটি। তাৎক্ষণিক যে যার মতো করে ঝাঁপ দিয়ে চেষ্টা করে প্রাণে বাঁচার।
কয়েকজন সাঁতরে তীরে উঠলেও নিখোঁজ ছিল অনেকেই। এখন পর্যন্ত নারী-শিশুসহ ১১ জনের লাশ এবং ১৫ যাত্রীকে জীবিত উদ্ধার করা হয়।
এদিকে এ ঘটনায় নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ের মেঘনা নদী থেকে ঘাতক মালবাহী জাহাজকে জব্দ করা হয়। জব্দের পর জাহাজটির বিরুদ্ধে নৌ আইনে মামলা দায়ের করা হয়। এছাড়া, লঞ্চডুবির ঘটনায় মৃতের পরিবারকে দেড় লাখ টাকা করে দেবে বলে ঘোষণা দিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ।
রাজশাহীর সময়/এএইচ