নতুন মন্ত্রিসভায় ঘোষণা হয়েছে। ৩৬ মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর নামও রয়েছে। তবে এই মন্ত্রিপরিষদে ঠাঁই হয়নি রাজশাহীর কোনো সংসদ সদস্যের।
ফলে এ অঞ্চলের দলীয় নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষের মাঝে ক্ষোভ ও হতাশা দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ সরকারের গত ১৫ বছরের শাসনামলে রাজশাহীতে কাউকে পূর্ণ মন্ত্রী করা হয়নি। এবারও তার পুনরাবৃত্তি হলো।
আওয়ামী লীগ সরকারের ১৯৯৬ থেকে ২০০১ মেয়াদেও রাজশাহী থেকে কাউকে পূর্ণ মন্ত্রিত্ব দেওয়া হয়নি। ২০১৪ সালে রাজশাহী-৬ আসন থেকে একজনকে প্রতিমন্ত্রী করা হলেও রাজশাহীর সামগ্রিক উন্নয়নে তার কোনো ভূমিকাও ছিল না। উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ বলছেন দেশের অবহেলিত উত্তরাঞ্চলকে সব সময় বিভিন্নভাবে উপেক্ষা করা হয়েছে। এবারেও তার ব্যতিক্রম হলো না।
রাজশাহীর কৃতী সন্তান জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান প্রবাসী সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধু সরকারের শিল্পমন্ত্রী ছিলেন ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর কারাভ্যন্তরে নিহত হওয়ার আগ পর্যন্ত। পরে ১৯৭৯ সালে রাজশাহী থেকে জিয়া সরকারের প্রতিমন্ত্রী হন প্রয়াত এমরান আলী সরকার। এরশাদ সরকারের আমলে রাজশাহীতে সরদার আমজাদ হোসেন দুই দফায় পূর্ণ মন্ত্রী ও মেসবাহউদ্দিন বাবলু এবং নুরুন্নবী চাঁদ প্রতিমন্ত্রী হয়েছিলেন। ১৯৯১ সালে বেগম খালেদা জিয়ার সরকারে রাজশাহী থেকে পূর্ণ মন্ত্রী হন ব্যারিস্টার আমিনুল হক ও প্রতিমন্ত্রী হন প্রয়াত কবীর হোসেন। একুশ বছর পর ১৯৯৬ সালের জুনে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে রাজশাহী থেকে অধ্যাপিকা জিনাতুন নেসা তালুকদারকে প্রতিমন্ত্রী করা হয় টেকনোক্র্যাট কোটায়।
এদিকে ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ পুনরায় ক্ষমতায় এলে রাজশাহী থেকে ওমর ফারুক চৌধুরীকে শিল্প প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছিল কয়েক মাসের জন্য। ২০১৪ ও ২০১৮ সালে রাজশাহী থেকে শাহরিয়ার আলম দুই দফায় প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করে এবার বাদ পড়েছেন। এবারের নির্বাচনে রাজশাহীর ৬টি আসনের মধ্যে ৫টিতে নৌকার প্রার্থীরা বিজয়ী হলেও কেউ মন্ত্রিপরিষদে ঠাঁই পাননি বলে ঘোষিত তালিকায় দেখা গেছে।
এদিকে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) রাজশাহী বিভাগীয় সভাপতি আহমদ সফি উদ্দিন বলেন, বরাবরই অবহেলিত রাজশাহী। এবার রাজশাহী থেকেও কাউকে মন্ত্রী করা হয়নি। ফলে আগামীতে সমতাভিত্তিক ও অগ্রাধিকারমূলক উন্নয়নের আশাও করা যায় না। রাজশাহী থেকে একজন মন্ত্রী থাকলে হয়তো সেটা সম্ভব হতো।
তবে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল বলেন, গত দুই সরকারের আমলে রাজশাহী থেকে একজন প্রতিমন্ত্রী একটানা ১০ বছর দায়িত্ব পালন করলেও তিনি নিজের নির্বাচনি এলাকার বাইরে একদিনের জন্যও পা রাখেননি। ফলে রাজশাহীর মানুষের কোনো লাভ হয়নি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার রাজশাহীতে প্রভূত উন্নয়ন করেছেন। আশা করি মন্ত্রী না থাকলেও আঞ্চলিক উন্নয়নে কোনো সমস্যা হবে না। #