আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নির্বাচন যাতে না হয় তার জন্য বিএনপি নানা ধরনের ষড়যন্ত্র করেছিল। তাদের কিছু মুরুব্বি আছে, তারা পরামর্শ দেয়। মুরুব্বিদের পরামর্শে চললে বাংলাদেশের আর চলা লাগবে না। এটাই হলো বাস্তবতা। যদি সৎ পরামর্শ হয়, সেটা ভালো কথা। নির্বাচন হতে দেবে না, এসব হুমকি-ধামকি গেল কোথায়?
মঙ্গলবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি এবার নির্বাচন হতেই দেবে না। তাদের লক্ষ্য ছিল নির্বাচন হতে দেবে না। তাদের কিছু মুরুব্বি আছে তারাও সেই পরামর্শ দেয়। এমন অবস্থা সৃষ্টি করবে যাতে নির্বাচন না হয়। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষকে তারা চিনে নাই। ’৭১ সালের ৭ মার্চ জাতির পিতা বলেছিলেন, কেউ দাবাযয়ে রাখতে পারবা না। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে এ দেশের মানুষ এটাই প্রমাণ করেছে।
তিনি বলেন, ’৭৫ এর পর থেকে যত নির্বাচন আমরা দেখেছি, তার মধ্যে সবচেয়ে সুশৃঙ্খল, অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু এবং জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে এবার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করা হয়। স্বাধীনতায় লাখো শহীদের যে অবদান, সেটাই ইতিহাস থেকে মুছে ফেলা হয়। ইতিহাস বিকৃত করা হয়। এটাই হচ্ছে জাতির সবচেয়ে দুর্ভাগ্য।
তিনি বলেন, ’৭৫ এর পর নির্বাচন মানে কী সেটা আমি দেখেছি। নির্বাচন ছিল নামেই নির্বাচন। ভোট চুরি, ভোট ডাকাতি, ভোটার লিস্টে মিথ্যা নাম দেওয়া, সংবিধান লঙ্ঘন করে, সেনা আইন লঙ্ঘন করে যারা ক্ষমতায় ছিল তাদের পকেট থেকে রাজনৈতিক দল বের হতো, এই দল মাটি মানুষের কথা বলে না। ক্ষমতার উচ্চ আসনে বসে গঠিত রাজনৈতিক দল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সেই দল না। আওয়ামী লীগ হচ্ছে মানুষের অধিকারের কথা বলার জন্য, যখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ছিল না তখনই আওয়ামী লীগের সৃষ্টি। জনগণের স্বার্থে, জনগণের কল্যাণে, জনগণের অধিকার রক্ষায় আওয়ামী লীগের সৃষ্টি। সৃষ্টির শুরু থেকে আওয়ামী লীগ জনগণের স্বার্থে কাজ করে গেছে। আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করার জন্য বারবার অনেকে এসেছে। আইয়ুব খানও চেষ্টা করেছে, ইয়াহিয়া খানও চেষ্টা করেছে, জিয়াউর রহমান চেষ্টা করেছে, এরশাদ চেষ্টা করেছে। জিয়াউর রহমান যেমন হত্যাকাণ্ড চালিয়েছেন, খালেদা জিয়াও হত্যাকাণ্ড চালিয়ে আমাদের হাজার হাজার নেতাকর্মীর ওপর নির্মমতা দেখিয়েছে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, শুধু আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী নয়, এ দেশের প্রতিটি শ্রেণির মানুষ আজ তাদের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত। একটা মানুষের মধ্যে মনুষ্যত্ব থাকলে কোনোদিন এভাবে কাউকে পুড়িয়ে মারতে পারে না। ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি ভেবেছিল একেবারে ক্ষমতায় চলে যাবে, সে নির্বাচনে মাত্র ৩০টা সিট পায়। এরপর থেকে তারা জানে বাংলাদেশের মানুষ সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, দুর্নীতি, মানুষ হত্যা এগুলো পছন্দ করে না। তাদের প্রত্যাখ্যান করেছিল। যে কারণে তারা কোনো নির্বাচনে আসতে চায়নি।