২৫ নভেম্বর ২০২৪, সোমবার, ১১:১৫:৪৬ পূর্বাহ্ন


গাজা দখলের পরবর্তী পরিকল্পনা ঘোষণা ইসরাইলের
আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৫-০১-২০২৪
গাজা দখলের পরবর্তী পরিকল্পনা ঘোষণা ইসরাইলের গাজা দখলের পরবর্তী পরিকল্পনা ঘোষণা ইসরাইলের


ইসরাইল ও হামাসের মধ্যকার যুদ্ধ শেষ হলে ভবিষ্যতে কীভাবে গাজা শাসন করা হবে, তার একটি পরিকল্পনা প্রকাশ করেছেন ইসরাইলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট। তিনি বলেন, ওই এলাকায় ফিলিস্তিনি শাসন থাকবে সীমিত। হামাস আর গাজার নিয়ন্ত্রণে থাকবে না এবং ইসরাইল সার্বিক নিরাপত্তার নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

তিনি যখন এই পরিকল্পনা প্রকাশ করেছেন, তখন গাজায় যুদ্ধ অব্যাহত রয়েছে। হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় এসব হামলায় কয়েক ডজন মানুষ মারা গেছে। চলতি সপ্তাহে আবার এই এলাকায় সফরে আসার কথা রয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের। তিনি দখলকৃত পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা ও ইসরাইলি নেতাদের সাথে আলোচনা করবেন বলে জানানো হয়েছে।

গত মঙ্গলবার লেবাননের রাজধানী বৈরুতে হামাসের শীর্ষ নেতা সালেহ আল-আরুরির হত্যাকাণ্ডের পর কঠোর উত্তেজনার মধ্যেই তার সফরের এই খবর এলো। তার এই হত্যাকাণ্ডের জন্য ইসরাইলকে দায়ী করা হচ্ছে। ইসরাইল এই অভিযোগ স্বীকারও করেনি, আবার অস্বীকারও করেনি। গ্যালান্টের বর্তমান ‘চতুর্মুখী’ পরিকল্পনার আওতায় গাজার সার্বিক নিরাপত্তার নিয়ন্ত্রণ ইসরাইলের হাতে থাকবে।

বহুজাতিক একটি বাহিনী ওই এলাকার পুনর্গঠনে কাজ করবে। কারণ ইসরাইলের বোমা হামলায় গাজায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পরিকল্পনার আওতায় প্রতিবেশী দেশ মিশরের একটি ভূমিকা থাকবে তবে তা কী হবে, সেটি এখনো নির্ধারণ করা হয়নি। কিন্তু নথিতে বলা হয়েছে যে, পুরো এলাকা পরিচালনার দায়িত্ব ফিলিস্তিনিদেরও দেয়া হতে পারে।

‘গাজার বাসিন্দারা ফিলিস্তিনি, তাই ফিলিস্তিনি একটি কাঠামো নেতৃত্বের দায়িত্বে তারা থাকবে। কিন্তু এখানে শর্ত থাকবে যে ইসরাইল রাষ্ট্রের প্রতি কোন শত্রুতামূলক কর্মকাণ্ড বা হুমকি আসবে না,’ বলেন গ্যালান্ট। গাজার ‘ভবিষ্যত’ নিয়ে এই আলোচনায় নিয়ে ইসরাইলের মধ্যে গভীর মতভেদ দেখা দিয়েছে।

ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকারের কিছু কট্টর ডানপন্থী সদস্য বলেছে, ফিলিস্তিনের নাগরিকদের গাজা ছেড়ে নির্বাসনে চলে যেতে বলা উচিত। আর ওই এলাকায় ইহুদী বসতি আবার গড়ে তোলা উচিত। বিতর্কিত এই প্রস্তাবকে ‘চরমপন্থি’ এবং ‘অকার্যকর’ বলে উল্লেখ করে তা বাতিল করে দিয়েছে ওই এলাকার অন্য দেশগুলো যাদের মধ্যে ইসরাইলের মিত্রদেশও রয়েছে।

যদিও গ্যালান্টের প্রস্তাব মন্ত্রিসভায় তার অন্য সহকর্মীদের আনা প্রস্তাবের তুলনায় বেশি বাস্তবসম্পন্ন বলে মনে করা হচ্ছে, তারপরও হয়তো এই প্রস্তাব বাতিল করে দেবেন ফিলিস্তিনি নেতারা। তারা বলছেন, এই বিধ্বংসী যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর ওই এলাকা পরিচালনার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ গাজাবাসীর থাকা উচিত।

নেতানিয়াহু অবশ্য গাজা কিভাবে শাসন করা হবে তা নিয়ে জনসমক্ষে এখনো কোন ধরনের মন্তব্য করেননি। তিনি বলেছেন যে, হামাসকে নিশ্চিহ্ন করার অঙ্গীকার নিয়ে শুরু হওয়া গাজার এই যুদ্ধ এখনো কয়েক মাস ধরে চলতে পারে।

গ্যালান্টের পরিকল্পনায় আরো বলা হয়েছে যে, গাজায় পরবর্তী ধাপের যুদ্ধে ইসরাইলি সামরিক বাহিনী কীভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে, সেই লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী-আইডিএফ গাজা উপত্যকার উত্তরাঞ্চলে আরো সুনির্দিষ্ট পদ্ধতিতে এগিয়ে যাবে। সেখানে অভিযান চালানোর পাশাপাশি সুড়ঙ্গ ধ্বংস করা এবং বিমান ও স্থল হামলা চালানো হবে। সূত্র: বিবিসি।