স্বস্তি কাতারে বন্দি আট প্রাক্তন নৌসেনা কর্মীর। তাঁদের ফাঁসির আদেশ শোনা হয়েছিল গত অক্টোবরে। মৃত্যুদণ্ড পুনর্বিবেচনার আর্জির মামলার শুনানি শুরু হয়েছিল। অবশেষে তাঁদের ফাঁসি রদ করেছে আদালত। তাঁদের ফাঁসির সাজা বদলে কারাবাসের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ওই আট নৌসেনা আধিকারিককে ফাঁসির পরিবর্তে কোন সাজা শুনিয়েছে আদালত? সূত্র মারফর প্রকাশ্যে এসেছে বিষয়টি।
প্রাক্তন ভারতীয় নৌসেনার আট প্রাক্তন আধিকারিকদের মৃত্যুদণ্ডের সাজা কাতার রদ করেছে।
বৃহস্পতিবার বিদেশ মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, ভারতের আবেদন মেনে কাতারের একটি আদালত আট প্রাক্তন ভারতীয় নৌসেনা আধিকারিকদের মৃত্যুদণ্ডের সাজা মকুব করেছে।
সূত্রের খবর, ওই প্রাক্তন ভারতীয় নৌসেনা আধিকারিকদের তিন থেকে ২৫ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে ফাঁসির পরিবর্তে। ফাঁসির পরিবর্তে আট প্রাক্তন নৌসেনা আধিকারিকের মধ্যে একজনের ২৫ বছরের কারাদণ্ড, চারজনের ১৫ বছরের কারাদণ্ড, দু'জনের ১০ বছরের কারাদণ্ড, একজনের তিন বছরের কারাদণ্ডের সাজা ঘোষণা হয়েছে। তবে এনিয়ে এখনও বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্রের তরফে আনুষ্ঠানিক ভাবে কিছু ঘোষণা করা হয়নি। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি জানিয়েছেন, পূর্ণাঙ্গ রায়ের প্রতিলিপি এখনও পর্যন্ত পাওয়া না-যাওয়ায় নৌসেনার আট জন আধিকারিক কী শাস্তি পেতে চলেছেন তা বলা সম্ভব নয়। অনেকেই ভারতের কূটনৈতিক সাফল্যকে দেখছেন নৌসেনার আট সেনা আধিকারিকের মৃত্যুদণ্ডের সাজা রদ করার সিদ্ধান্তের নেপথ্যে। জোর চর্চা চলছে ভারত কী ভাবে এই কূটনৈতিক চালে কিস্তিমাত করল।
উল্লেখ্য, গত ২৬ অক্টোবর কাতারের একটি আদালত বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত ওই আট জনকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা শোনায়। জানা যায়, দুর্নীতি ও ইজরায়েলের হয়ে চরবৃত্তির অভিযোগেই তাঁদের ত্যুদণ্ডের সাজা দেওয়া হয়েছে। জানা গিয়েছে, 'আল-দাহরা গ্লোবাল টেকনোলজি' নামের একটি পরামর্শদাতা সংস্থায় নৌসেনার ওই প্রাক্তন আট আধিকারিক কাজ করতেন। কাতার প্রশাসন এই সংস্থার মালিক তথা ওমানের বায়ুসেনার প্রাক্তন আধিকারিক খামিস আল আজামিকে আগেই গ্রেফতার করেছিল। ২০২২ সালের নভেম্বর মাসে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু ওই একই মামলায় ২০২২ সালের অগাস্টে রতীয় নৌসেনার আট প্রাক্তন আধিকারিককে আটক করা হয়েছিল। নৌসেনার একটি সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, নিজেদের কর্মজীবনে যথেষ্ট দক্ষতার পরিচয় দিয়েছিলেন ওই আটজন পরে তাঁরা স্বেচ্ছা অবসর নিয়ে যোগ দেন কাতারের ওই বেসরকারি সংস্থায়।
সূত্র মারফত খবর, সংস্থাটি মূলত কাতারের নৌবাহিনীকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ করত। ভারত আট জনের পরিবারের সঙ্গেও নিয়মিত যোগাযোগ রেখে গিয়েছিল। পরিবারগুলির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। গত ১ ডিসেম্বর দুবাইয়ে হওয়া জলবায়ু সংক্রান্ত সম্মেলন 'কপ২৮'-এ যোগ দিতে গিয়ে কাতারের আমির হামাদ আল থানির সঙ্গে পার্শ্ববৈঠক করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বৈঠকের নির্যাস হিসাবে ভারত জানিয়েছিল যে, কাতারে বসবাসকারী ভারতীয়দের স্বাচ্ছন্দ্য নিয়ে কথা হয়েছে দুই দেশের মধ্য়ে। তবে একটি সূত্র মারফত এ-ও জানা গিয়েছিল যে, বৈঠকে ভারত আট জনের মৃত্যুদণ্ডের সাজা হ্রাস করার বিষয়টিও উত্থাপন করে।