২৩ নভেম্বর ২০২৪, শনিবার, ০৩:৪৯:১১ অপরাহ্ন


দুই কাঠা মাটি ও একশতাধিক লোক দিয়ে ২৬টি গরুর সৎকার সম্পন্ন
চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি:
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৯-০৩-২০২২
দুই কাঠা মাটি ও একশতাধিক লোক দিয়ে ২৬টি গরুর সৎকার সম্পন্ন দুই কাঠা মাটি ও একশতাধিক লোক দিয়ে ২৬টি গরুর সৎকার সম্পন্ন


গরুর খামারে যখন আগুন জ্বলছিল তখন আমি বেঁচে আছি না মরে গেছি তা নিয়ে সংশয় ছিলাম। সারারাত ভালো করে ঘুমাতে পারেনি। গতকাল থেকে মুখটি বারবার শুকিয়ে যাচ্ছে। নিজেকে সান্ত্বনা দেওয়ার মত শক্তি খুঁজে পাচ্ছি না। আমার প্রতিবেশীরা আমাকে বারবার সান্তনা দেওয়ার চেষ্টা করছে। রুজি রোজগারের একমাত্র সম্বল ছিল আমার গরুর খামারটি। সেটি নিয়ে আমি চলাফেরা করতাম। আমার পরিবারের ১০/১২ জন সদস্য। ৪/৫ বিঘা জমি বর্গা করি। দীর্ঘ ৭বছর ধরে খামারটি পরিচালনা করছি।খামারটি গড়ে তুলতে তিন বছর লেগেছে। একমিনিসেই  তা পুড়ে  ছাই হয়ে গেল। খামারে মোট ২৭টি গরু ছিল। যার মধ্যে কোন রকমে খামারের ভেতর থেকে বাইরে ছুটে চলে আসে একটি গরু বেঁচে গেছে। সেটির  শরীরের অনেকটা পুড়ে গেছে। বাচাঁ-মারা এখন আল্লাহর হাতে।এমনি আর্তনাদের কথা শুনাচ্ছিলেন ক্ষতিগ্রস্ত খামারি সোলেমান।সেটি চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার কসবা ইউনিয়নের আখিলা গ্রামে। গতকাল ২৭টি গরু আগুনে পুড়ে  মারা যায়। বৃহস্পতিবার রাত ৭টার দিকে মশা মারা কোয়েলের আগুন থেকে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট লেগে ক্ষণিকের মধ্যে ২৭টি গরু পুড়ে যায়। যার মধ্যে ছিল ৩টি বড় ষাড়, ২২টি শাহিওয়াল বকনা ও ২টি বাছুর গরু। যার আনুমানিক মূল্য ৩০লক্ষ টাকা।

শুক্রবার সকাল আনুমানিক ১০ টার দিকে ২কাঠা জমিতে এক শতাধিক লোক দিয়ে মৃত গরুগুলোর সৎকারের কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে।

কসবা ইউপি চেয়ারম্যান জাকারিয়া আল-মেহরাব বলেন, গতকাল আগুন লাগার খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে এসে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের খোঁজ খবর রাখছি। তাদেরকে সান্ত্বনা দিচ্ছি। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারটিকে আগের সেই অবস্থানে কোন ভাবে ফিরিয়ে আনা যায় কিনা সেজন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করছি। ঘটনার পরদিন থেকে নাচোল থানার ওসি মিন্টু, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গোমস্তাপুর সার্কেল শামছুল আলম, নাচোল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শরীফ আহম্মেদ, জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোস্তাফিজুর রহমান, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রাপ্ত) ডাঃ কাওসার আলী  ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে সান্ত্বনা প্রদান করছেন এবং তাদেরকে সাহায্য করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের করছেন।

ইতিমধ্যে নাচোল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার শরীফ আহম্মদ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে নগদ দশ হাজার টাকা প্রদান করেছে এবং তাদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোস্তাফিজুর রহমান জানান,আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সাথে কথা বলেছি। আগুনে পুড়ে যাওয়া গরুগুলোর মালিক অনেকটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাদেরকে সান্ত্বনা প্রদান করেছি।বেঁচে যাওয়া ১টি গরু আছে সেটা চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি।আর  তাদেরকে সাহায্যের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা  হচ্ছে। মাননীয় জেলা প্রশাসক মহোদয় আমাকে নির্দেশ প্রদান করেছেন।

রাজশাহীর সময় / এম জি