ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের প্রবাসী পলিটব্যুরো প্রধান ইসমাইল হানিয়া বলেছেন, দৃশ্যত গাজায় ইসরাইলের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের দুঃসাহসিক যুদ্ধের উজ্জ্বল সমাপ্তি ঘটতে যাচ্ছে। তিনি ফিলিস্তিনি যোদ্ধা ও সাধারণ নাগরিকদের বীরোচিত প্রতিরোধের প্রশংসা করেছেন।
বুধবার রাতে টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে তিনি বলেন, নিশ্চিতভাবে ইসরাইলি আগ্রাসনের সমাপ্তি ঘটবে এবং প্রতিরোধ যোদ্ধারা ফিলিস্তিনি জাতির প্রতি কৃতজ্ঞ থেকে গাজা উপত্যকাকে যেকোনও আগ্রাসন থেকে রক্ষা করে যাবে। তিনি বলেন, ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা তাদের প্রতিরোধ যুদ্ধে অটল ও অবিচল রয়েছেন এবং তারা ইসরাইলি সেনাদের অপূরণীয় ক্ষতি করছেন। তিনি এক্ষেত্রে গাজা সিটির শুজাইয়া এলাকা এবং জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরসহ অন্যান্য স্থানে দখলদার সেনাদের বিরুদ্ধে তুমুল লড়াইয়ের কথা উল্লেখ করেন।
ইসমাইল হানিয়া তার ভাষণে বলেন, ইসরাইলি আগ্রাসন বন্ধ করে একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনে সহায়তা করে এমন যেকোনও পদক্ষেপকে হামাস স্বাগত জানাবে। একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যে গাজা উপত্যকা ও পশ্চিম তীরের মধ্যে যে রাজনৈতিক বিভেদ রয়েছে তারও অবসান ঘটবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। ফিলিস্তিন প্রতিরোধ গোষ্ঠী হামাস ছাড়া গাজার জন্য সংঘাত-পরবর্তী যে কোনো পরিকল্পনা কোনো কাজে আসবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সংগঠনের প্রধান ইসমাইল হানিয়া। এর আগে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, যারা সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করে এবং সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন করে তাদের গাজায় প্রবেশের অনুমতি দেবেন না। এর একদিন পর হানিয়া এ মন্তব্য করেছেন।
হানিয়া বলেন, তিনি ইসরাইলি আক্রমণের অবসান, পশ্চিমতীর ও গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনিদের ঘর সাজানোর বিষয়ে আলোচনার জন্য প্রস্তুত। হামাস নেতা আরও বলেন, হামাস গাজা সমস্যা নিয়ে সংলাপের জন্য প্রস্তুত। কারণ ফিলিস্তিনিদের একটি স্বাধীন রাষ্ট্রে জেরুজালেমকে রাজধানী হিসাবে বসবাস করার অধিকার রয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় হালনাগাদ তথ্যে জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলি হামলায় গাজায় ১৯৬ জন নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ১৮ হাজার ৬০৮ জন নিহত হয়েছেন। যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।
তিনি গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রচেষ্টা চালানোর জন্য জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসকে ধন্যবাদ জানান। একইসাথে গাজা উপত্যকার ওপর ইসরাইলি আগ্রাসন বন্ধ করার লক্ষ্যে মঙ্গলবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে যে প্রস্তাব পাস হয়েছে সেটিকেও স্বাগত জানান হামাসের এই প্রবাসী নেতা। এপি, টাইমস অব ইসরাইল, দ্য গার্ডিয়ান, ইরনা।