পরিবার ও সন্তানদের প্রতি যথাযথ দায়িত্ব পালন করা, তাদের ভরণপোষণের ব্যবস্থা করা ফরজ। পরিবারের জন্য কৃত খরচকে রাসুল (সা.) সর্বোত্তম সদকা বলেছেন। সওবান (রা.) থেকে বর্ণিত রাসুল (সা.) বলেছেন,
أَفْضَلُ دِينَارٍ يُنْفِقُهُ الرَّجُلُ دِينَارٌ يُنْفِقُهُ عَلَى عِيَالِهِ وَدِينَارٌ يُنْفِقُهُ عَلَى فَرَسٍ فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَدِينَارٌ يُنْفِقُهُ الرَّجُلُ عَلَى أَصْحَابِهِ فِي سَبِيلِ اللَّهِ
সবচেয়ে উত্তম দীনার হলো- যা মানুষ তার পরিবার-পরিজনের জন্য ব্যয় করে, যা আল্লাহর রাস্তায় জিহাদের ঘোড়া প্রতিপালনে ব্যয় করে এবং যা আল্লাহর রাস্তায় জিহাদকারী তার সহ-যোদ্ধাদের জন্য ব্যয় করে। (সহিহ মুসলিম)
তবে সম্পদ উপার্জনের মোহ ও সন্তানরা যেন আল্লাহর স্মরণ থেকে গাফেল না করে দেয়, সেদিকেও খেয়াল রাখা দরকার। তাদের প্রতি দায়িত্বপালনের পাশাপাশি আল্লাহর রাস্তায় ব্যায় করতে হবে, দরিদ্র আত্মীয় স্বজনদের খোঁজ-খবর নিতে হবে, দরিদ্রদের দান করতে হবে। আল্লাহ বলেন,
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لَا تُلۡهِکُمۡ اَمۡوَالُکُمۡ وَ لَاۤ اَوۡلَادُکُمۡ عَنۡ ذِکۡرِ اللّٰهِ ۚ وَ مَنۡ یَّفۡعَلۡ ذٰلِکَ فَاُولٰٓئِکَ هُمُ الۡخٰسِرُوۡنَ وَ اَنۡفِقُوۡا مِنۡ مَّا رَزَقۡنٰکُمۡ مِّنۡ قَبۡلِ اَنۡ یَّاۡتِیَ اَحَدَکُمُ الۡمَوۡتُ فَیَقُوۡلَ رَبِّ لَوۡ لَاۤ اَخَّرۡتَنِیۡۤ اِلٰۤی اَجَلٍ قَرِیۡبٍ ۙ فَاَصَّدَّقَ وَ اَکُنۡ مِّنَ الصّٰلِحِیۡنَ وَ لَنۡ یُّؤَخِّرَ اللّٰهُ نَفۡسًا اِذَا جَآءَ اَجَلُهَا ؕ وَ اللّٰهُ خَبِیۡرٌۢ بِمَا تَعۡمَلُوۡنَ
হে মুমিনগণ, তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান- সন্ততি যেন তোমাদেরকে আল্লাহর স্মরণ থেকে উদাসীন না করে; যারা এ রকম উদাসীন হবে তারা ক্ষতিগ্রস্ত। আর আমি তোমাদেরকে যে রিজিক দিয়েছি তা থেকে ব্যয় কর, তোমাদের কারো মৃত্যু আসার আগে। তখন সে বলবে, হে আমার রব, যদি আপনি আমাকে আরো কিছু কাল পর্যন্ত সুযোগ দিতেন, তাহলে আমি দান-সদাকা করতাম। আর সৎ লোকদের অন্তর্ভুক্ত হতাম। আর আল্লাহ কখনো কোন প্রাণকেই অবকাশ দেবেন না, যখন তার নির্ধারিত সময় এসে যাবে। আর তোমরা যা কর, সে সম্পর্কে আল্লাহ সম্যক অবহিত। (সুরা মুনাফিকুন: ৯-১১)
সুরা মুনাফেকুনের শুরুতে মুনাফিকদের মিথ্যা কসম ও ষড়যন্ত্রের কথা আলোচনা করা হয়েছে। এ সব কিছুর মূল কারণ ছিল দুনিয়ার প্রতি তাদের মোহ বা ভালোবাসা। তাই এ আয়াতগুলোতে আল্লাহ তাআলা মুমিনদের নির্দেশনা দিচ্ছেন মুনাফিকদের মতো সম্পদ ও সন্তান-সন্ততিসহ দুনিয়ার ভালোবাসায় ডুবে না যেতে। সম্পদ ও সন্তানদের নিরাপত্তা ও দুনিয়াবি সুখের মোহে আল্লাহর পথ থেকে দূরে সরে না যেতে।
এখানে দুনিয়ার সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি পুরোপুরি ত্যাগ করতে বলা হয়নি। দুনিয়াবি সম্পদ উপার্জন করতে নিষেধও করা হয়নি। সম্পদ ও সন্তানদের মোহে আল্লাহর স্মরণ ও ইবাদত থেকে গাফেল হতে নিষেধ করা হয়েছে।