কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (১৪ মার্চ) রাত সাড়ে ১২টার দিকে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। মৃত নিহর ওরফে জমসের আলী (৪৪) সাভার থানার বড়দেশী পূর্বপাড়া এলাকার মনসুর আলীর ছেলে।
কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মো. গিয়াস উদ্দিন জানান, সকালে প্রেসার কমে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে নিহর জমসের আলী। এ সময় তাকে কারা হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নিহর জমসের আলীকে মৃত ঘোষণা করে।
তিনি সাভারে ৬ কলেজছাত্র হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে এ কারাগারে বন্দি ছিলেন। এ কারাগারে তার হাজতি নং-৫১৯১। তাকে ২০২১ সালের ১৯ ডিসেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার কেরানীগঞ্জ থেকে এ কারাগারে পাঠানো হয়। আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ নিহতের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হচ্ছে।
২০১১ সালের ১৭ জুলাই শবে বরাতের রাতে আমিনবাজারের বড়দেশী গ্রামের কেবলার চরে বেড়াতে যান সাত তরুণ। তারা সবাই ঢাকার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ছিলেন। হঠাৎ স্থানীয় কিছু লোক তাদের ধরে ডাকাত আখ্যা দিয়ে পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করে। ওই ঘটনায় আল-আমিন প্রাণে বাঁচলেও মারা যান তৌহিদুর রহমান, শামস রহিম, কামরুজ্জামান, টিপু সুলতান, ইব্রাহিম খলিল ও সিতাব জাবির।
এ ঘটনার পরদিন স্থানীয় বালু ব্যবসায়ী আবদুল মালেক বাদী হয়ে সাত ছাত্রের বিরুদ্ধে সাভার থানায় একটি ডাকাতি মামলা করেন। তদন্তে ডাকাতির মামলাটি মিথ্যা প্রমাণিত হয়।
ছয় ছাত্রকে হত্যার অভিযোগে পুলিশ বাদী হয়ে সাভার থানায় একটি মামলা করে। পরে উচ্চ আদালতের নির্দেশে মামলাটি র্যাবের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তদন্ত শেষে ২০১৩ সালের ১৩ জানুয়ারি ৬০ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় র্যাব।
অভিযোগপত্রে সাক্ষী করা হয় ৯২ জনকে। অভিযোগপত্রে বলা হয়, নিরীহ ছাত্রদের হত্যার উদ্দেশ্যে আসামিরা মারধর করেন। হত্যার ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে স্থানীয় মসজিদের মাইকে ডাকাত আসার ঘোষণা দেওয়া হয়।
এ মামলায় গত ২০২১ সালের ২ ডিসেম্বর ঢাকা জেলার দ্বিতীয় অতিরিক্ত দায়রা জজ ইসমত জাহান ১৩ জনের মৃত্যুদণ্ড দেন। সেই সঙ্গে ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং আর ২৫ জনকে খালাস দেওয়া হয়।
মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামিরা হলেন- সাইদ মেম্বার, আবদুল মালেক, আবদুর রশীদ, জমশের আলী, ইসমাইল হোসেন, মজিবর রহমান, আনোয়ার হোসেন, মীর হোসেন, আলম, রানা, রজ্জব আলী সোহাগ, আবদুল হামিদ ও আসলাম মিয়া।
যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- ফরিদ খান, শাহীন আহম্মেদ, ওয়াসিম, সাত্তার, রাজীব হোসেন, সেলিম, আলমগীর, মোবারক হোসেন, অখিল খন্দকার, বশির, রুবেল, মনির হোসেন, শাহাদাত হোসেন, টুটুল, মাসুদ, মোখলেছ, তোতন, সাইফুল ও নুর ইসলাম।
রাজশাহীর সময় / জি আর