২৪ নভেম্বর ২০২৪, রবিবার, ০৭:৩৪:১০ পূর্বাহ্ন


ডিপফেক’ ভিডিও কীভাবে তৈরি হয়? কারচুপি চেনার উপায় কী
তামান্না হাবিব নিশু :
  • আপডেট করা হয়েছে : ১০-১১-২০২৩
ডিপফেক’ ভিডিও কীভাবে তৈরি হয়? কারচুপি চেনার উপায় কী ডিপফেক’ ভিডিও কীভাবে তৈরি হয়? কারচুপি চেনার উপায় কী


চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছেন প্রিয় তারকাকে। কিন্তু আসলে তিনি নেই! কিংবা তিনি না থেকেও যে আছেন! বিষয়টি পড়তে যতটা গোলমেলে লাগছে, বাস্তবে কিন্তু এর চেয়ে অনেক জটিল। একের শরীরে অন্যের মুখ বসিয়ে মানুষকে যে কত বড় বিপদে ফেলা যায়, তা সম্প্রতি রশ্মিকা মন্দানা থেকে ক্যাটরিনা কাইফের ভিডিও চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়া নিয়ে যাঁরা নাড়াচাড়া করেন তাঁরা ইতিমধ্যেই এআই ডিপফেক নামটির সঙ্গে পরিচিত হয়ে উঠেছেন। অত্যাধুনিক এই প্রযুক্তি ব্যবহার করলে যে কোনও মানুষের চেহারা, আওয়াজ সহ সবকিছুই হুবহু অনুকরণ করা যায়। এখনও পর্যন্ত সেই ডিপফেক শুধু সেলিব্রেটিদের নিশানা করলেও নিশ্চিত করে বলার উপায় নেই যে আগামী দিনে টার্গেট লিস্টে আপনি থাকবেন না।  

ডিপফেক কী

ডিপফেক হল এমনই একটি প্রোগ্রাম, যা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের একটি ধরন ‘ডিপ লার্নিং টেকনোলজি’ ব্যবহার করে তৈরি করা হয়। মূলত এই পদ্ধতিতে অডিয়ো, ভিডিয়ো ও ছবিতে কারসাজি করে এমন কনটেন্ট বানানো হয়, যা দেখে আসল কি নকল তা বোঝার উপায় থাকে না। 

ডিপফেক কীভাবে তৈরি করা হয়

ডিপফেকের অ্যালগরিদম দুটি মুখের অর্থাৎ আসল ভিডিয়োর মুখ এবং যে মুখ সেখানে বসানো হবে দুটির মধ্যে মিল খুঁজে বের করে। এরপর তাদের সাধারণ বৈশিষ্ট্যগুলি মিলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। সেক্ষেত্রে এমনই ভিডিয়ো খুঁজে বের করা হয়, যেখানে ক্লোজ আপ শট প্রায় নেই বললেই চলে। একইসঙ্গে ডিপফেক ভিডিয়োর দৈর্ঘ্য খুব একটা বড় হয় না। কারণ, এই প্রযুক্তির পক্ষে বড় ভিডিয়োকে একেবারে হুবহু এডিট করা প্রায় অসম্ভব। 

ডিপফেক ভিডিওতে ব্যক্তির তাকানো কিংবা মুখের এবং শরীরী ভঙ্গিমাতে অসঙ্গতি থাকে। এক্ষেত্রে ওই ব্যক্তির কথা বলা কিংবা কাজের সঙ্গে তার চাহনির মিল খুঁজে পাবেন না। একইসঙ্গে ডিপফেক ভিডিওয় সঠিক রঙের টোন এবং আলোর প্রতিফলন থাকে না। অর্থাৎ ব্যক্তির মুখ এবং আশপাশের আলোতে সামঞ্জস্যের অভাব থাকে।

অডিওর মানও আর পাঁচটা স্বাভাবিক ভিডিওর চেয়ে আলাদা হয়। তাই কোনও ভিডিও নিয়ে সন্দেহ হলে সেই ভিডিওর অডিওর মান যাচাই করে নিতে পারেন।

ডিপফেক ভিডিওতে ব্যক্তির হাত-পা কিংবা মুখের আদল বেশ খানিকটা বদলে যায়। অর্থাৎ দেখতে লম্বাটে কিংবা চ্যাপ্টা লাগে। খানিকটা নজর দিলে এই বিকৃতভাব চোখে পড়বে।

শুধুই নেতিবাচক নয়, এই প্রযুক্তিটির বেশ কিছু ইতিবাচক ব্যবহারও রয়েছে। সিনেমার ভিজুয়াল এফেক্ট, অগমেন্টেড রিয়্যালিটির বিভিন্ন অবতার তৈরি করতে, সোশ্যাল মিডিয়ার একাধিক কাজে, এমনকী শিক্ষাক্ষেত্রেও কাজে লাগানো যেতে পারে এই প্রযুক্তি। যদিও দুর্ভাগ্যবশত, ডিপফেক প্রকাশ্যে আসার পর থেকে তার নেতিবাচক ব্যবহারই বেশি চোখে পড়েছে।