বাইতুল মুকাদ্দাস বা আল-আকসা মসজিদটি জেরুসালেমের পুরনো শহরে অবস্থিত ইসলামের ৩য় পবিত্রতম মসজিদ। আবু জর গিফারি থেকে বর্ণিত একটি হাদিস থেকে জানা যায় বাইতুল মুকাদ্দাস সর্বপ্রথম মানুষ ও নবি আদম (আ.) নির্মাণ করেছিলেন এবং এটি ইসলামের ইতিহাসের দ্বিতীয় মসজিদ। হাদিসের বর্ণনা অনুযায়ী হজরত আদম (আ.) সর্বপ্রথম বাইতুল্লাহ বা কাবা নির্মাণ করেছিলেন। তারপর তিনি বাইতুল মুকাদ্দাস নির্মাণ করেন। রাসুল (সা.) কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, এটি বায়তুল্লাহ নির্মাণের কত দিন পর নির্মাণ করা হয়েছিল? তিনি উত্তর দেন, চল্লিশ বছর পর। (সহিহ বুখারি)
কোরআনে আল আকসা মসজিদের বর্ণনা এসেছে রাসুলের (সা.) ইসরা ও মিরাজ প্রসঙ্গে। আল্লাহ বলেন,
سُبۡحٰنَ الَّذِیۡۤ اَسۡرٰی بِعَبۡدِهٖ لَیۡلًا مِّنَ الۡمَسۡجِدِ الۡحَرَامِ اِلَی الۡمَسۡجِدِ الۡاَقۡصَا الَّذِیۡ بٰرَکۡنَا حَوۡلَهٗ لِنُرِیَهٗ مِنۡ اٰیٰتِنَا اِنَّهٗ هُوَ السَّمِیۡعُ الۡبَصِیۡرُ
পবিত্র ও মহীয়ান তিনি যিনি তার বান্দাকে তার নিদর্শনাবলি দেখানোর জন্য রাতের বেলা ভ্রমণ করিয়েছেন মাসজিদুল হারাম থেকে মাসজিদুল আকসা পর্যন্ত, যার চারপাশকে তিনি করেছেন কল্যাণময়, নিশ্চই তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা। (সুরা ইসরা: ১)
বাইতুল মুকাদ্দাস অর্থ পবিত্র ঘর। মসজিদ আল-আকসা অর্থ দূরবর্তী মসজিদ। মসজিদুল হারামের অবস্থান থেকে দূরে অবস্থিত হওয়ায় বাইতুল মুকাদ্দাসকে কোরআনে দূরতম মসজিদ বলা হয়েছে। আয়াতে আল্লাহ বলেছেন, এই মসজিদের আশপাশে তিনি বরকত দান করেছেন। বাইতুল মুকাদ্দাস সংলগ্ন এলাকা প্রাকৃতিক নদ-নদী ও ফল-ফসলে প্রাচুর্যময় এবং আল্লাহর বহু নবি-রাসুল ও নেক বান্দাদের স্মৃতিবিজড়িত হওয়ায় এই এলাকাকে বিশেষ বরকতময় বলা হয়েছে।
মেরাজের রাতে রাসুল (সা.) মসজিদুল হারাম থেকে আল-আকসা মসজিদে এসেছিলেন এবং এখান থেকে তিনি ঊর্ধ্বাকাশের দিকে যাত্রা করেন। রাসুলকে ঊর্ধ্বাকাশে ভ্রমণ করানোর আগে আল্লাহর নিদর্শনাবলি দেখানোর জন্য বাইতুল মুকাদ্দাসে নিয়ে আসা থেকেও এ মসজিদের বিশেষ মর্যাদা ও ফজিলত বোঝা যায়।