আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত রাসুল (সা.) বলেছেন,
لاَ تَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ حَتَّى تُؤْمِنُوا وَلاَ تُؤْمِنُوا حَتَّى تَحَابُّوا أَوَلاَ أَدُلُّكُمْ عَلَى شَىْءٍ إِذَا فَعَلْتُمُوهُ تَحَابَبْتُمْ أَفْشُوا السَّلاَمَ بَيْنَكُمْ
তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না যতক্ষন না ইমান আনবে আর তোমরা ইমানদার হতে পারবে না যতক্ষন না একে অন্যকে ভালবাসবে। আমি কি তোমাদের ওই আমলের কথা বলে দেবো যা করলে তোমাদের পারস্পরিক ভালবাসার সৃষ্টি হবে? তা হলো, তোমরা পরস্পর বেশি বেশি সালাম বিনিময় করো। (সহিহ মুসলিম)
এ হাদিস থেকে যে শিক্ষাগুলো আমরা পাই
১. আল্লাহ মুসলমানদের অভ্যর্থনা বা সম্ভাষণ জানানোর একটি সতন্ত্র বাক্য দিয়েছেন ‘আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।’ এই সম্ভাসণে আল্লাহ তাআলা সওয়াব দানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, এটিকে এক মুসলিমের ওপর অপর মুসলিমের অধিকার সাব্যস্ত করেছেন। তাই সম্ভাসণ সাধারণত অভ্যাস ও সংস্কৃতির অংশ হলেও সালাম হয়ে উঠেছে ইবাদত। তাই মুসলমানদের মধ্যে অভ্যর্থনা ও সম্ভাষণে সালামের জায়গায় অন্য কোনো বাক্য ব্যবহার করা সমীচীন নয়। ‘শুভ সন্ধ্যা’, ‘শুভ সকাল’, ‘অভিনন্দন’ ইত্যাদি কোনো বাক্যই সালামের মতো বরকতময় ইসলামি সম্ভাষণের স্থলাভিষিক্ত বা বিকল্প হতে পারে না।
২. ইসলামের পূর্ণ সম্ভাষণ ‘আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু’। সংক্ষীপ্তরূপ ‘আসসালামু আলাইকুম’। প্রত্যেকটি বাক্য বলার জন্য আল্লাহ দশটি নেকি দান করবেন। যে পুরোটা বলবে, সে ত্রিশ নেকি পাবে। ইমরান ইবনে হোসাইন (রা.) বলেন, এক ব্যক্তি এসে নবিজিকে (সা.) সালাম দিলো, ‘আসসলামু আলাইকুম’। নবিজি (সা.) উত্তর দিলেন। লোকটি বসে পড়লো। নবিজি বললেন ‘দশ’। কিছুক্ষণ পর আরেকজন এলো এবং বললো ‘আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ’। নবিজি (সা.) তার সালামের জবাব দিলেন। সে বসে পড়লো। নবিজি (সা.) বললেন ‘বিশ’। একটু পর আরেক ব্যক্তি এলো এবং বললো, ‘আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু’। নবিজি (সা.) তার সালামের উত্তর দিলেন। সে বসে পড়লো। নবিজি বললেন, ‘ত্রিশ’। (সুনানে আবু দাউদ)
৩. সুন্নাত হলো সালামের ব্যপক প্রসার ঘটানো। দলমত নির্বিশেষে ছোট বড় চেনা অচেনা সবাইকে সালাম দেওয়া। যেন এটা মুসলমানদের প্রতীক হয়ে ওঠে। আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস (রা.) বলেন, এক ব্যক্তি রাসুলকে (সা.) প্রশ্ন করলো, কোন ইসলাম উত্তম? তিনি বললেন,
تُطْعِمُ الطَّعَامَ، وَتَقْرَأُ السَّلاَمَ عَلَى مَنْ عَرَفْتَ وَمَنْ لَمْ تَعْرِفْ
খাবার খাওয়াও, সালাম দাও চেনা-অচেনা সবাইকে। (সহিহ বুখারি, সহিহ মুসলিম)
আম্মার ইবনে ইয়সির (রা.) বলেন, তিনটি বৈশিষ্ট্য যার মধ্যে থাকে, সে পূর্ণ ইমান লাভ করে। (১) নিজ থেকে ইনসাফ করা (২) সবাইকে সালাম দেওয়া (৩) অভাবী অবস্থায়ও দান করা। (সহিহ বুখারি)