সুরা আলাক কোরআনের ৯৬তম সুরা। মক্কায় অবতীর্ণ এ সুরাটির আয়াত সংখ্যা ১৯টি রুকু ১টি। সুরাটির ১-৫ আয়াত রাসুলের (সা.) ওপর অবতীর্ণ সর্বপ্রথম ওহি। আয়াতগুলোতে আল্লাহ তার নামে পাঠ করতে নির্দেশ দিয়েছেন। এরপর উল্লেখ করেছেন, মানুষের স্রষ্টা তিনি; কীভাবে মাতৃগর্ভে তিনি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন। জন্মের পর মানুষকে জ্ঞান দান করেছেন, জ্ঞান সংরক্ষণ করতে, লিখতে ও পড়তে শিখিয়েছেন।
সুরা আলাকের ১-৫ আয়াতে আল্লাহ বলেন,
(১)
اقْرَأْ بِاسْمِ رَبِّكَ الَّذِي خَلَقَ
ইকরা বিসমি রাব্বিকাল্লাযী খালাক।
পড়ো, তোমার রবের নামে যিনি সৃষ্টি করেছেন৷
(২)
خَلَقَ الْإِنسَانَ مِنْ عَلَقٍ
খালাকাল ইনসা-না মিন আলাক।
সৃষ্টি করেছেন মানুষকে আলাক হতে।
(৩)
اقْرَأْ وَرَبُّكَ الْأَكْرَمُ
ইকরা’ ওয়া রাব্বুকাল আকরাম
পড়ো, এবং তোমার রব বড় মেহেরবান,
(৪)
الَّذِي عَلَّمَ بِالْقَلَمِ
অল্লাযী আল্লামা বিলকালাম।
যিনি কলমের সাহায্যে জ্ঞান শিখিয়েছেন৷
(৫)
عَلَّمَ الْإِنسَانَ مَا لَمْ يَعْلَمْ
আল্লামাল ইনসা-না-মা-লাম ইয়া‘লাম।
মানুষকে এমন জ্ঞান দিয়েছেন, যা সে জানতো না৷
৬টি শিক্ষা ও নির্দেশনা
১. মুহাম্মাদ (সা.) আল্লাহর নবি ও রাসুল। তার ওপর নাজিল হয়েছে আল্লাহর চূড়ান্ত ও সর্বশ্রেষ্ঠ কিতাব আল-কোরআন।
২. পড়া শুরু করতে হবে আল্লাহর নামে; ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ অর্থাৎ ‘পরম করুণাময় ও দয়াময় আল্লাহর নামে শুরু করছি’ বলে। এ কারণে সুরা তাওবা ছাড়া কোরআনের সবগুলো সুরা ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ উল্লেখ করে শুরু হয়েছে।
৩. মাতৃগর্ভে শুক্রকীট আলাকায় পরিণত হয়। এরপর বিভিন্ন ধাপ পার হয়ে মানুষের শরীর পূর্ণাঙ্গ রূপ লাভ করে।
৪. আল্লাহ মহান ও সর্বশ্রেষ্ঠ করুণার আধার। আল্লাহর চেয়ে বেশি দয়া ও করুণা কারো নেই।
৫. লেখার বিশেষ গুরুত্ব ও মর্যাদা রয়েছে। লেখার মাধ্যমেই জ্ঞান সংরক্ষিত হয় এবং এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্মের কাছে পৌঁছে যায়।
৬. জীবজগতে মানুষের ওপর আল্লাহ বিশেষ অনুগ্রহ করেছেন তাকে জ্ঞান দান করে, লিখতে ও জ্ঞান সংরক্ষণ করতে শিখিয়ে।