২৪ নভেম্বর ২০২৪, রবিবার, ০২:১৯:৪৬ অপরাহ্ন


সুরা লাইল: ৫টি শিক্ষা ও নির্দেশনা
ধর্ম ডেস্ক
  • আপডেট করা হয়েছে : ০১-১০-২০২৩
সুরা লাইল: ৫টি শিক্ষা ও নির্দেশনা ফাইল ফটো


সুরা লাইল কোরআনের ৯২তম সুরা। মক্কায় অবতীর্ণ সুরাটির আয়াত ২১টি, রুকু ১টি। লাইল শব্দের অর্থ রাত। এ সুরায় বলা হয়েছে মানুষের প্রচেষ্টা বিভিন্ন রকম। মুমিনরা আল্লাহর ওপর পরিপূর্ণ বিশ্বাস স্থাপন করে, আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করার উদ্দেশ্যে নেক আমল করে এবং গুনাহের কাজ থেকে বিরত থাকে। কাফেররা সত্যকে অস্বীকার করে এবং বিভিন্ন পাপাচারে লিপ্ত হয়। যারা ইমানদার ও ভাল গুণাবলির অধিকারী, তারা সফল। পরকালে তাদের সাফল্য সুনিশ্চিত। যারা অবিশ্বাসী ও খারাপ গুণাবলির অধিকারী, তারা ব্যর্থ। পরকালের জীবনে তাদের জন্য শাস্তি অবধারিত রয়েছে।

সুরা লাইল

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَـٰنِ الرَّحِيمِ

শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু।

(১)

وَالَّیۡلِ اِذَا یَغۡشٰی 

ওয়াল্লাইলি ইযা-ইয়াগশা-।

শপথ রাত্রির, যখন সে আচ্ছন্ন করে,

(২)

وَالنَّہَارِ اِذَا تَجَلّٰی 

ওয়ান্নাহা-রি ইযা-তাজাল্লা-।

শপথ দিনের, যখন তা আলোকিত হয়

(৩)

وَمَا خَلَقَ الذَّکَرَ وَالۡاُنۡثٰۤی 

ওয়ামা-খালাকায যাকারা ওয়াল উনছা।

এবং শপথ তার, যিনি নর ও নারী সৃষ্টি করেছেন,

(৪)

اِنَّ سَعۡیَکُمۡ لَشَتّٰی 

ইন্না ছা‘ইয়াকুম লাশাত্তা-।

নিশ্চয় তোমাদের কর্মপ্রচেষ্টা বিভিন্ন ধরনের।

(৫)

فَاَمَّا مَنۡ اَعۡطٰی وَاتَّقٰی 

ফাআম্মা-মান আ‘তা-ওয়াত্তাকা-।

সুতরাং কেউ দান করলে, মুত্তাকী হলে

(৬)

وَصَدَّقَ بِالۡحُسۡنٰی 

ওয়া সাদ্দাকা বিলহুছনা-।

এবং যা উত্তম তা সত্য বলে গ্রহণ করলে,

(৭)

فَسَنُیَسِّرُہٗ لِلۡیُسۡرٰی 

ফাছানুইয়াছছিরুহূলিল ইউছরা-।

আমি তার জন্যে সুগম করে দিব সহজ পথ।

(৮)

وَاَمَّا مَنۡۢ بَخِلَ وَاسۡتَغۡنٰی 

ওয়া আম্মা-মাম বাখিলা ওয়াছতাগনা-।

এবং কেউ কার্পণ্য করলে ও নিজেকে স্বয়ংসম্পূর্ণ মনে করলে,

(৯)

وَکَذَّبَ بِالۡحُسۡنٰی ۙ

ওয়া কাযযাবা বিল হুছনা-।

আর যা উত্তম তা অস্বীকার করলে,

(১০)

فَسَنُیَسِّرُہٗ لِلۡعُسۡرٰی 

ফাছানুইয়াছছিরুহূলিল‘উছরা-।

তার জন্যে আমি সুগম করে দিব কঠোর পথ।

(১১)

وَمَا یُغۡنِیۡ عَنۡہُ مَالُہٗۤ اِذَا تَرَدّٰی 

ওয়ামা-ইউগনী ‘আনহু মা-লুহূইযা-তারাদ্দা-।

এবং তার সম্পদ তার কোন কাজে আসবে না, যখন সে ধ্বংস হবে।

(১২)

اِنَّ عَلَیۡنَا لَلۡہُدٰی 

ইন্না ‘আলাইনা-লালহুদা-।

আমার কাজ তো কেবল পথনির্দেশ করা,

(১৩)

وَاِنَّ لَنَا لَلۡاٰخِرَۃَ وَالۡاُوۡلٰی

ওয়া ইন্না লানা-লালআ-খিরাতা ওয়ালঊলা-।

আমি তো মালিক পরলোকের ও ইহলোকের।

(১৪)

فَاَنۡذَرۡتُکُمۡ نَارًا تَلَظّٰی 

ফাআনযারতুকুম না-রান তালাজ্জা-।

আমি তোমাদেরকে লেলিহান অগ্নি সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়েছি।

(১৫)

لَا یَصۡلٰىہَاۤ اِلَّا الۡاَشۡقَی

লা-ইয়াসলা-হাইল্লাল আশকা-

এতে নিতান্ত হতভাগ্য ব্যক্তিই প্রবেশ করবে,

(১৬)

الَّذِیۡ کَذَّبَ وَتَوَلّٰی 

আল্লাযী কাযযাবা ওয়া তাওয়াল্লা-।

যে মিথ্যারোপ করে ও মুখ ফিরিয়ে নেয়।

(১৭)

وَسَیُجَنَّبُہَا الۡاَتۡقَی 

ওয়া ছাইউজান্নাবুহাল আতকা-।

তা হতে দূরে রাখা হবে খোদাভীরু ব্যক্তিকে,

(১৮)

الَّذِیۡ یُؤۡتِیۡ مَالَہٗ یَتَزَکّٰی 

আল্লাযী ইউ’তী মা-লাহূইয়াতাঝাক্কা-।

যে আত্নশুদ্ধির জন্যে তার ধন-সম্পদ দান করে।

(১৯)

وَمَا لِاَحَدٍ عِنۡدَہٗ مِنۡ نِّعۡمَۃٍ تُجۡزٰۤی 

ওয়ামা-লিআহাদিন ‘ইনদাহূমিন নি‘মাতিন তুজঝা।

এবং তার প্রতি কারও অনুগ্রহের প্রতিদানে নয়,

(২০)

اِلَّا ابۡتِغَآءَ وَجۡہِ رَبِّہِ الۡاَعۡلٰی 

ইল্লাবতিগাআ ওয়াজহি রাব্বিহিল আ‘লা-।

শুধু তার মহান প্রতিপালকের সন্তুষ্টির প্রত্যাশায় ;

(২১)

وَلَسَوۡفَ یَرۡضٰی 

ওয়া লাছাওফা ইয়ারদা-।

সে দ্রুতই সন্তুষ্টি লাভ করবে।

৫টি শিক্ষা ও নির্দেশনা

১. আল্লাহর বহু বিস্ময়কর সৃষ্টি ও নিদর্শন আমাদের ঘিরে রেখেছে। এগুলো দেখে করে স্রষ্টার অস্তিত্ব ও তার ক্ষমতার বিশালতা অনুভব করা এবং স্রষ্টার পরিচয় অনুসন্ধান করা ও তার আনুগত্য করা আমাদের কর্তব্য।

২. মানুষের ভাগ্য নির্ধারিত। জন্মের সময়ই নির্ধারিত হয়ে যায় কে সৌভাগ্যবান আর কে দুর্ভাগা। যারা সৌভাগ্যবান তারা উত্তম কাজ করার তওফিক লাভ করে, যারা দুর্ভাগা তারা পাপাচারে ডুবে থাকে।

৩. আল্লাহর নীতি হলো, তিনি মানুষের চেষ্টা ও আগ্রহ অনুযায়ী কিছু মানুষকে তিনি উত্তম কাজ করার তওফিক দেন, উত্তম কাজ তাদের জন্য সহজ করে দেন। আবার অনেকের চেষ্টা ও আগ্রহ অনুযায়ী তাদেরকে খারাপ কাজের সুযোগ দেন, তাদের জন্য গুনাহের কাজ সহজ হয়ে যায়।

৪. আল্লাহ রাসুল পাঠিয়ে, কোরআন নাজিল করে মানুষকে হেদায়াতের পথ দেখিয়েছেন। এরপর কেউ যদি হেদায়াতের পথে না গিয়ে পাপাচারে লিপ্ত হয়, এর দায় তাকেই বহন করতে হবে।

৫. আল্লাহ দুনিয়া ও আখেরাতের মালিক। যে দুনিয়া ও আখেরাতের সফলতা চায় বা এর কোনো একটি চায়, সে যেন আল্লাহর কাছেই সেটা চায়। আখেরাতের সফলতা পাওয়ার উপায় হলো ইমান ও নেক আমল। দুনিয়াবি সফলতাও মানুষ পেতে পারে আল্লাহর দেখানো সফলতার পথ অনুসরণ করে।