শরীরকে সুস্থ ও ফিট রাখার জন্য কত কিছুই না করা হয়। শরীরচর্চা, হাঁটাহাটি, মেপে খাওয়াদাওয়া, আরও কত কী! ডায়েটের চোটে পছন্দের খাবারগুলো রোজের খাদ্যতালিকা থেকে বাদ পড়ে। তবে রোজের খাদ্যতালিকায় যতই কাটছাঁট করুন না কেন, স্বাস্থ্যকর খাবার না খেলে কিন্তু আদতে কোনও লাভই হবে না।
বিশেষজ্ঞরা আজকাল প্রতিদিনের খাবারে নানা প্রকার বীজ রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন।
ভাত, রুটি যা-ই খান, সঙ্গে সেই সমস্ত বীজও খেতে হবে নিয়মিত। ফ্ল্যাক্সসিড, চিয়া, কুমড়োর বীজ, সূর্যমুখী - বীজের তালিকাও কম নয়। সুস্থ থাকতে গেলে এই সব বীজকে নিত্যসঙ্গী করে ফেলতে হবে। জেনে নিন, কোন বীজ থেকে কী উপকার পাওয়া যায়।
চিয়া বীজ: ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থে পরিপূর্ণ চিয়া বীজ। ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, ফাইবার, প্রোটিন, ক্যালশিয়াম এবং ম্যাগনেশিয়াম প্রচুর পরিমাণে থাকে চিয়া বীজে। ওজন কমানোর ক্ষেত্রে চিয়া বীজের জুড়ি নেই। তাছাড়া, নিয়মিত চিয়া বীজ খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়, ফলে হার্ট সুস্থ থাকে। এমনকি, হজমের সমস্যা থাকলে তা-ও নিয়ন্ত্রণে রাখে এই বীজ।
ফ্ল্যাক্সসিড: চিয়ার মতো ফাইবার, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ উত্স হল ফ্ল্যাক্সসিড বা তিসি। এই বীজেও বিভিন্ন ভিটামিন ও খনিজ ভরপুর। রোজের খাদ্যতালিকায় এই বীজ রাখলে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে, হৃদরোগের ঝুঁকি কমে এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাও দূর হয়। এছাড়া, ফ্ল্যাক্সসিডে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টও রয়েছে প্রচুর পরিমাণে, যা ক্যান্সার প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে।
কুমড়োর বীজ: কুমড়োর বীজ প্রোটিন, স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, ফাইবার, ম্যাগনেশিয়াম, জিঙ্ক এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। ডায়াবিটিস থেকে রক্তচাপ, সবই নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে এই বীজ। রোজ এই বীজ খেলে প্রোস্টেটের সমস্যা দূরে থাকে এবং হার্ট সুস্থ থাকে। ঘুমের সমস্যায়ও খুব উপকারী কুমড়োর বীজ।
তিল: স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, প্রোটিন, ফাইবার, বি ভিটামিন, ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম এবং আয়রনে ভরপুর সাদা তিল। উচ্চ ক্যালশিয়াম থাকার কারণে হাড় সুস্থ ও মজবুত রাখে তিল। ওজন নিয়ন্ত্রণে খুব কার্যকরী এই বীজ। এ ছাড়াও, তিলের মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং লিগনান্স, যা হার্ট সুস্থ রাখে এবং ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখে। শরীরে হরমোনের ভারসাম্যও বজায় রাখতে সাহায্য করে তিল।
সূর্যমুখী বীজ: ভিটামিন ই, স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, প্রোটিন এবং ম্যাগনেশিয়াম ও সেলেনিয়ামের মতো খনিজ পদার্থে ভরপুর সূর্যমুখী ফুলের বীজ। উচ্চ রক্তচাপ, কোলেস্টেরল ও রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে এই বীজ। প্রতিদিন সূর্যমুখী বীজ খেলে ত্বক সুস্থ থাকে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী হয়। এর মধ্যে থাকা ভিটামিন ই এবং অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট যে কোনও ধরনের মারণরোগের সঙ্গে মোকাবিলা করতে সাহায্য করে।