২১ নভেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ১০:০৭:২৬ অপরাহ্ন


প্রধানমন্ত্রীর ঘর পেয়ে পাল্টে গেছে পানা উল্লাহর জীবন
নাহিদ হোসেন, লালপুর(নাটোর)প্রতিনিধি:
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৯-০৩-২০২২
প্রধানমন্ত্রীর ঘর পেয়ে পাল্টে গেছে পানা উল্লাহর জীবন প্রধানমন্ত্রীর ঘর পেয়ে পাল্টে গেছে পানা উল্লাহর জীবন


স্বর্ণের দোকানের কর্মচারী পঞ্চাশোর্ধ পানা উল্লাহ । পদ্মার ভাঙনে সহায়সম্বল হারিয়ে স্ত্রী ও চার কন্যা সন্তান নিয়ে নিকটাত্মীয়ের বাসায় থাকতেন। দোকানে কাজ করে কোন মতে সংসার চলতো। 

এরপর কোভিট-১৯ এর কারণে কর্মহীন হয়ে পড়েন তিনি। একদিকে চরম অভাব-অনটন, অন্যদিকে বিবাহ উপযুক্ত তিন কন্যা। তিনি যেন অথৈ সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছেন। এর মাঝেই আত্মীয় স্বজনের সহযোগীতায় তিন কন্যাকে বিবাহ দেন। কিন্তু বসতভিটা না থাকায় শ্বসুর বাড়ির লোকজনের কটু কথা শুনতে হতো তার মেয়েদের। অপরদিকে ছোট মেয়েকে পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়ার মত সঙ্গতি ছিল না। একদিকে  মৌলিক চাহিদা পূরণের ব্যর্থতা, অন্যদিকে আত্মীয় স্বজনের তীব্র উপহাস, এভাবেই কাটতে থাকে পানা উল্লাহর জীবন। এরই মাঝে সু-সংবাদ আসে তার কাছে। স্থানীয় সাংসদ শহিদুল ইসলাম বকুলের মাধ্যমে ও উপজেলা প্রশাসনের সহযোগীতায় মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার' আশ্রয়ণ প্রকল্পে মাথা গোজার ঠাঁই  হয় তার। তিনি পান স্বপ্নের ঠিকানা। জমিসহ সেমি পাকা বাড়ী তার নিকট যেন আকাশের চাঁদ। লালপুর বাজার থেকে ৩০০ মিটারের মধ্যে প্রায় ৬ লক্ষ টাকা মূল্যের জমিসহ বাড়ি পেয়ে পানা উল্লাহ’র চোখে মুখে উন্নত জীবনের স্বপ্ন। অন্যের দোকানে কর্মচারীর কাজের পরিবর্তে লব্ধ অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে নিজ বাড়িতে গড়ে তোলেন স্বর্নকারের দোকান। দৃষ্টিনন্দন রূপা (চাদি) অলংকার এলাকাবাসীর নজরে আসে, দামেও অন্যান্য দোকানের চেয়ে সাশ্রয়। বাড়তে থাকে ক্রেতা। গ্রোথ সেন্টারের নিবকবর্তী হওয়ায় ক্রেতা পেতে বেগ পেতে হয় না তার। অপরদিকে স্ত্রী মাজেদা বাড়ীতে নকশীকাঁথার কাজ করেন। তার সুনিপুণ কারুকাজ আয়ের উৎসকে প্রসারিত করেছে। এছাড়াও বাড়িতে হাঁস মুরগী পালনেও বাড়তি আয় হচ্ছে । তাদের পরিবার এখন নিম্ন আয়ের মানুষের আদর্শ অনুকরণীয়। চতুর্থ মেয়ে মিলি খাতুন দশম শ্রেণিতে স্থানীয় মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত। সে এখন উন্নত জীবনের স্বপ্ন দেখছে। 

গোপালপুর পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক রোকনুল ইসলাম বলেন, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি স্বাধীনতার মহানায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে উপজেলায় হতদরিদ্র যাদের বসবাসের কোন ঠিকানা ছিল না, তাদের স্থায়ী আশ্রয়ের ব্যবস্থা করেছেন। এটা সত্যিই বিস্ময়কর। ওই মানুষগুলো তাদের ভাগ্যে চাকা নতুনভাবে ঘুরাতে শুরু করেছে।’

লালপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাম্মী আক্তার ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামীমা সুলতানা বলেন, ৯২ জন ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষকে আমরা জননেত্রী শেখ হাসিনার উপহারের ঘরে তুলে দিয়েছি। তারা এখন প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহারের ঘর পেয়ে স্বাবলম্বী হতে শুরু করেছে। এছাড়াও ১৪২ টি ঘরের কাজ কাজ চলমান রয়েছে।’ আমরা এ বছরের মধ্যেই তাদের ঘরে তুলে দিবো।

নাটোর-১(লালপুর-বাগাতিপাড়া আসনের সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুল বলেন, বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় অনেক বেড়ে গেছে। এর কারণ, জননেত্রী শেখ হাসিনা নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য বিভিন্ন ভাতা সহ অনেক সুযোগ সুবিধা দেওয়ার ফলে তাদের জীবনমান উন্নয়ন হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে যাদের জমি নেই তাদের ঘর দেওয়া হচ্ছে। উপযুক্ত ট্রেনিংয়ের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এর ফলে নিম্ন আয়ের মানুষের আত্মবিশ্বাস বেড়ে যাচ্ছে। তারা বিভিন্নভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছে। 

রাজশাহীর সময় / এম আর